Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

মারধর, অভিযুক্ত তৃণমূল নেত্রী

পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের ব্যাঙ্কের পাসবই, রেজোলিউশন খাতা অন্যায় ভাবে নিজের কাছে ‘আটকে’ রেখেছেন। সেই সব নথি চাইতে গেলে ওই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর দলনেত্রীকে চড় মারার অভিযোগ উঠল পাড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের সীমা বাউরির বিরুদ্ধে। ঘটনাটি সোমবার দুপুরের।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাড়া শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৫ ০০:৫২
Share: Save:

পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের ব্যাঙ্কের পাসবই, রেজোলিউশন খাতা অন্যায় ভাবে নিজের কাছে ‘আটকে’ রেখেছেন। সেই সব নথি চাইতে গেলে ওই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর দলনেত্রীকে চড় মারার অভিযোগ উঠল পাড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের সীমা বাউরির বিরুদ্ধে। ঘটনাটি সোমবার দুপুরের। সন্ধ্যায় সীমাদেবীর বিরুদ্ধে পাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ওই সদস্য সেহেনাজ খাতুন। অন্য দিকে, কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর কার্যালয়ের মধ্যে ঢুকে তাঁকে গালিগালাজ করা-সহ দফতরের নথিপত্র ছুড়ে ফেলে দেওয়ার পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন সীমাদেবী। অবশ্য তিনি লিখিত নয়, মৌখিক ভাবে জানিয়েছেন। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির দাবি, ‘‘রাজনৈতিক কারণে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ওই সদস্য। কোনও ধরনের নথিপত্র রাখিনি।’’ পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাড়া পঞ্চায়েতের পাড়াবস্তির বাসিন্দা সেহেনাজ খাতুন নামের ওই তরুণী একটি স্বনির্ভর দলের দলনেত্রী। তাঁর দাবি, গত ফেব্রুয়ারি সীমাদেবী তাঁর কাছ থেকে জরুরি কাজ রয়েছে বলে দলের সদস্যদের ব্যাঙ্কের পাসবই-সহ অন্যান্য নথি চেয়ে নিজের কাছে রেখেছিলেন। পরে বহুবার চেয়েও তাঁর কাছে সেই নথি পাওয়া যায়নি। এ ব্যপারে সম্প্রতি বিডিও’র কাছে অভিযোগও জানিয়েছেন সেহেনাজ। তাঁর অভিযোগ, ‘‘সোমবার দুপুরের দিকে সীমাদেবীর কাছে ওই নথিগুলি ফের চাইতে গেলে হটাৎই রেগে গিয়ে কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। কারণ, জানতে চাইলে চড় মারেন।’’

এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই সরব হয় বিজেপি। পঞ্চায়েত সমিতির কার্যালয়ের বাইরে বিক্ষোভ দেখায় তারা। পরিস্থিতির সামাল দিতে ব্লক কার্যালয়ে আসতে হয় পুলিশকে। সন্ধ্যার দিকে সেহেনাজকে নিয়ে পাড়া অভিযোগ জানাতে যান বিজেপি’র নেতা কর্মীরা। বিজেপি’র পাড়ার ব্লক মণ্ডল কমিটির সভাপতি দুলাল চৌবে বলেন, ‘‘ক্ষমতার দম্ভে বাস্তবজ্ঞান হারিয়েছেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সীমাদেবী। ওই তরুণী পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। পুলিশ ব্যবস্থা না নিলে পরবর্তী সময়ে দলগতভাবে আন্দোলনে নামা হবে।’’

কিন্তু হটাৎ করে কেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর এক সদস্যাকে চড় মারতে গেলেন সীমাদেবীয সেহেনাজের দাবি, সমস্যার সূত্রপাত আরও আগে দু’টি পঞ্চায়েত এলাকায় শৌচালয় নির্মাণকে কেন্দ্র করে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্মল বাংলা অভিযান প্রকল্পে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে শৌচালয় তৈরির কাজ দেওয়া হয়েছে। কয়েক মাস আগে সেহেনাজ খাতুন পাড়া ও দুবড়া পঞ্চায়েত এলাকায় শৌচালয় তৈরির ক্ষেত্রে গাফিলতি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন। ওই তদন্তে নেমে অন্য কিছু ক্ষেত্রে গাফিলতি ধরা পড়েছিল বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। সেহেনাজ বলেন, ‘‘শৌচালয় তৈরির কাজ ঠিকভাবে হচ্ছে না দেখার পরে প্রশাসনের কাছে ওই বিষয়ে অভিযোগ জানাই। সে জন্য আমাকে দলনেত্রীর দায়িত্ব থেকে সরিয়ে অন্য কাউকে সেই দিতে উদ্যোগী হন সীমাদেবীরা। সেই কারণেই আমার কাছ থেকে নথিপত্র নিয়ে নেওয়া হয়।’’ অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে সীমাদেবী চড় মারেন চড় মারেন বলে অভিযোগ সেহেনাজের।

তবে সেহেনাজের অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়ে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পাল্টা দাবি করেন, ‘‘‘ওই স্বনির্ভর দলের অন্যান্য সদস্যরাই সেহেনাজের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ জানিয়ে তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য বলেছেন। কিন্তু বিষয়টি একটি স্বনির্ভর দলের অভ্যন্তরীণ সমস্যা হওয়ায় আমরা মাথা গলাইনি। তা সত্ত্বেও ওই তরুণী কয়েকজনকে নিয়ে সোমবার আমার দফতরে ঢুকে গালিগালাজ করেছে। বাধ্য হয়ে তাকে দফতর থেকে চলে যেতে বলেছিলাম। পুরো ঘটনায় বিজেপি হীন রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে ওই তরুণীকে দিয়ে অভিযোগ করাচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE