E-Paper

সহায় রাম, পুজোয় পাশাপাশি দুই ফুল

বরাবাজারের রাজবাড়ি প্রাঙ্গণে রামমন্দিরের বিগ্রহ অতীতে চুরি যায়। সেখানে এ দিন নতুন বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:২৭
tmc-bjp

—প্রতীকী ছবি।

মেলালেন রাম। রঘুনাথ মন্দিরের উদ্বোধনে বিজেপি নেতাদের সঙ্গে একই সারিতে দেখা গেল স্থানীয় তৃণমূল ও কংগ্রেস নেতৃত্বকে। সোমবার রঘুনাথপুর শহরের এটিম ময়দানের এক প্রান্তে ওই মন্দিরের উদ্বোধন ও রামের মূর্তি প্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠানে যোগ দেন তৃণমূলের রঘুনাথপুর শহরের সভাপতি বিষ্ণুচরণ মেহেতা, জেলার সাধারণ সম্পাদক হাজারি বাউরি, পুরপ্রধান তরণী বাউরিরা। ছিলেন কংগ্রেসের শহর সভাপতি তারকনাথ পরামানিক ও কংগ্রেস পুরপ্রতিনিধি দেবযানী পরামানিক। বরাবাজারেও রামের মূর্তি প্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছে তৃণমূলের জেলার মহিলা সংগঠনের সভাপতি সুমিতা সিং মল্ল ও শ্রমিক সংগঠনের বরাবাজার ব্লকের সভাপতি চন্দন সিং মল্লকে।

রঘুনাথপুরের ওই মন্দির নির্মাণের উদ্যোক্তাদের অন্যতম বিজেপি নেতা বাণেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “রঘুনাথ মন্দির তৈরি পুরোদস্তুর অরাজনৈতিক বিষয়। শহরের নানা স্তরের মানুষকে নিয়ে মন্দির তৈরি করা হয়েছে।” একই সুরে হাজারি বলেন, “রঘুনাথ মন্দির তৈরির সিদ্ধান্ত অনেক আগেই নেওয়া হয়েছিল। আজ অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধন হয়েছে। তাই এই দিনকেই নির্বাচন করা হয়।” তরণীরও বক্তব্য, “গোটা দেশের সঙ্গে আমরাও রামমন্দিরের উদ্বোধনের উৎসবে শামিল হয়েছি। এটা দলের অনুষ্ঠান না।” কংগ্রেস সভাপতি তারকের দাবি, শহরবাসী হিসেবে উৎসবে শামিল হন।

বরাবাজারের রাজবাড়ি প্রাঙ্গণে রামমন্দিরের বিগ্রহ অতীতে চুরি যায়। সেখানে এ দিন নতুন বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা হয়। সুমিতা বলেন, “এটা পারিবারিক অনুষ্ঠান। দলের সংহতি মিছিলেও ছিলাম।” মিছিলে তবে ছিলেন না ব্লকের শ্রমিক নেতা চন্দনকে। তাঁর কথায়, “এলাকাবাসীর আবেগকে মর্যাদা দিয়ে রাম বিগ্রহের প্রতিষ্ঠায় ছিলাম।”

গোটা জেলা জুড়ে শোভাযাত্রা-সহ নানা অনুষ্ঠান, মন্দিরগুলিতে পূজার্চনা হয়েছে। নজরে পড়ার মতো উপস্থিতি ছিল তরুণ প্রজন্মের। আনাড়ার রেল ময়দানে বিজেপি নেতা বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীর আয়োজনে রাম-সীতার পুজো হয়েছে। বিজেপির ছয় বিধায়কই নিজ এলাকায় অনুষ্ঠানে যোগ দেন। পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোর্তিময় সিং মাহাতো শহরে রামমন্দিরের উদ্বোধন ‘লাইভ’ দেখানোর ব্যবস্থা করেন। পুরুলিয়া শহরের ট্যাক্সিস্ট্যান্ডে উদ্বোধনের অনুষ্ঠান দেখানোর ব্যবস্থা করে বজরঙ দলও। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, আরএসএস, হিন্দু জাগরণ মঞ্চের আয়োজনে পুরুলিয়া স্টেশনের সঙ্কটমোচন মন্দির থেকে শোভাযাত্রা বেরিয়ে গোশালার বজরঙবলী মন্দিরে যায়। সেখানে রাতে লক্ষ প্রদীপ জ্বালানো হয়। সর্বত্র ফেটেছে আতসবাজিও।

বাঁকুড়া শহরে বঙ্গবিদ্যালয় থেকে এ দিন সকালে মঙ্গলঘট নিয়ে শোভাযাত্রা বার হয়। ছিলেন কেন্দ্রের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার, বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুনীলরুদ্র মণ্ডলেরা। শহরের মিশ্রপাড়ায় বিশ্ব হিন্দু পরিবারের কার্যালয়ে বিশেষ যজ্ঞ, পুজো হয়। সতীঘাটের রামমন্দির ও হনুমান মন্দিরেও দিনভর পুজো ও নানা অনুষ্ঠান হয়। খাতড়ার এটিম গ্রাউন্ড থেকেও বিশাল শোভাযাত্রা শহর পরিক্রমা করে। ১০৮টি মঙ্গলঘট নিয়ে মহিলারা তাতে যোগ দেন। রাম, সীতা, হনুমান, লব-কুশের আদলে সেজেছিলেন অনেকে। শোভাযাত্রা পরে এটিম গ্রাউন্ডে পৌঁছনোর পরে বিশেষ যজ্ঞ, গীতাপাঠ হয়। দুপুরে পঙ‌্‌ক্তিভোজ, বিকেলে ছৌ-নৃত্যশিল্পীরা রামলীলা মঞ্চস্থ করেন। রাইপুর, রানিবাঁধ, সারেঙ্গা ও সিমলাপালেও পুজোপাঠ, নাম-সঙ্কীর্তন হয়েছে।

বিষ্ণুপুর শহরের চকবাজার ও রসিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকা বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনের লাগানো গেরুয়া পতাকায় ছেয়ে ছিল। স্টেশন এলাকা থেকে বেরোনো শোভাযাত্রায় প্রায় তিন কুইন্টালের লাড্ডু ছিল, যা প্রসাদ হিসেবে বিলি করা হয়। চকবাজার, রসিকগঞ্জ-সহ নানা এলাকায় অস্থায়ী ভাবে রামের মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে পুজো হয়। সোনামুখী পুরশহরের নানা মন্দিরে বিশেষ পুজো হয়েছে। পাত্রসায়রের কাঁকরডাঙা মোড়ে বিভিন্ন সংগঠনের তরফে বিশেষ পুজো ও লাড্ডু বিতরণ হয়। ছিলেন বিজেপির পাত্রসায়র ২ মণ্ডল সভাপতি অনুপ ঘোষ। পাত্রসায়রের বামিরা গ্রামের গোস্বামীদের রামমন্দিরে বিশেষ পুজো, কীর্তন ও পঙ্‌ক্তিভোজের আয়োজন ছিল। বড়জোড়া চৌমাথাতেও লাড্ডু বিলি কর্মসূচি করে বিভিন্ন সংগঠন। ছিলেন বড়জোড়ার বিজেপি নেতা গোবিন্দ ঘোষ, সোমনাথ করেরা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

West Bengal

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy