Advertisement
E-Paper

নেপালকে নিজের গড়ে ‘ঘিরছে’ তৃণমূল

ঝালদা পুরসভা আগেই হাতছাড়া হয়েছে। এ বার পুরুলিয়া জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতোর দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে তাঁর বিধানসভা এলাকার দু’টি পঞ্চায়েতের দখল পেতে চলেছে তৃণমূল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:০৬

ঝালদা পুরসভা আগেই হাতছাড়া হয়েছে। এ বার পুরুলিয়া জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতোর দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে তাঁর বিধানসভা এলাকার দু’টি পঞ্চায়েতের দখল পেতে চলেছে তৃণমূল।

বাঘমুণ্ডির সিন্দরি ও সুইসা-তুন্তুড়ি, এই দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েতের বাম ও কংগ্রেসের একাধিক সদস্য শাসকদলে যোগ দেওয়ায় তৃণমূলের এগুলির দখল পাওয়া এখন সময়ের অপেক্ষা। এই দু’টি পঞ্চায়েতই ছিল কংগ্রেসের দখলে। গত মঙ্গলবার দুই পঞ্চায়েতের ১৪ জন বাম-কংগ্রেস সদস্য পুরুলিয়া সদরে জেলা তৃণমূল ভবনে এসে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। কংগ্রেসের অভিযোগ, মানুষের ভোটে জিততে না পেরে দল ভাঙানোর খেলায় নেমেছে তৃণমূল। শাসকদল অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাঘমুণ্ডি বিধানসভার মধ্যে থাকা বাঘমুন্ডি ও ঝালদা ১ পঞ্চায়েত সমিতি দখল করে কংগ্রেস। ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে পুরুলিয়া কেন্দ্র থেকে তৃণমূল জিতলেও বাঘমুণ্ডিতে লিড ছিল নেপালবাবুর। পরের বছর ঝালদা পুরসভা নির্বাচনে তৃণমূল খাতাও খুলতে পারেনি। গত বিধানসভা নির্বাচনে বাঘমুণ্ডিতে এসে নেপাল মাহাতোকে জগদ্দল পাথর আখ্যা দিয়ে তাঁকে হারানোর ডাক দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, বামেরা পাশে থাকায় বাঘমুণ্ডি অধরাই থেকে যায় তৃণমূলের। এ বার তাই কংগ্রেসের নেতা-কর্মীদের নিজেদের দিকে টেনে নেপালবাবুর খাসতালুকে নিজেদের আধিপত্য তৈরি করার কাজে হাত দিয়েছে তৃণমূল—এমনই ধারণা জেলা কংগ্রেস নেতৃত্বের। প্রথমে ঝালদা ১ পঞ্চায়েত সমিতি, তার পরে ঝালদা পুরসভা। এ বার দু’টি পঞ্চায়েতও নিজেদের দখলে নিয়ে শাসকদল বুঝিয়ে দিচ্ছে, আগামী বছর পঞ্চায়েত ভোটের আগেই নেপালবাবুর খাসতালুকে তারা নিজেদের ঘর গুছিয়ে নিতে চায়।

সুইসা-তুন্তুড়ি পঞ্চায়েতের মোট ১৬টি আসনের মধ্যে গতবার কংগ্রেস একক ভাবে ৮টি দখল করে। ফরওয়ার্ড ব্লক ৫টি এবং সিপিএম ১টি আসন জেতে। ২টি আসন পায় তৃণমূল। কিন্তু, মঙ্গলবার কংগ্রেসের চার এবং ফব-র তিন জন দল ছাড়ায় তৃণমূলের শক্তি বেড়ে হয়েছে ৯। অন্য দিকে, সিন্দরি গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট ১২টি আসনের মধ্যে কংগ্রেসের দখলেই ছিল ৯টি। ফব ২টি এবং সিপিএম ১টি আসন পায়। মঙ্গলবার কংগ্রেসের ৪, ফব-র ২ এবং এক সিপিএম সদস্য তৃণমূলে যোগ দেন। ফলে বর্তমানে ৭ সদস্য নিয়ে পঞ্চায়েতে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ তৃণমূলই। দলত্যাগীরা দুই পঞ্চায়েতের কংগ্রেস প্রধামেনর বিরুদ্ধে অনাস্থার চিঠিও জমা দিয়েছেন প্রশাসনের কাছে।

নেপালবাবুর বক্তব্য, মানুষের ভোটে না জিতলেও এ ভাবে তৃণমূলের জোর করে দলবদল করানোর বিষয়টি মানুষ ভাল চোখে দেখবেন না। তাঁর কথায়, ‘‘এটা রাজনৈতিক দূষণ। তৃণমূল রাজ্যের শাসকদল। তাদেরই তো নিশ্চিত করা দরকার, মানুষ যাতে নিশ্চিন্তে তাঁদের মতাদর্শ অনুযায়ী রাজনীতি করতে পারেন। অথচ নানা ভাবে প্রভাবিত করে প্রশাসনকে ব্যবহার করে বিরোধী দল থেকে জনপ্রতিনিধি ভাঙিয়ে নিয়ে আসা হচ্ছে। উন্নয়নের কথা বলে নিজেদের দলে এনে দুর্নীতি করার ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে।’’ কয়েকজন নির্বাচিত প্রতিনিধি চলে গেলেই দলের ক্ষতি হবে, তা-ও মানতে চাননি নেপালবাবু।

তৃণমূলের বক্তব্য, নেপাল মাহাতোর গড়ে কংগ্রেস যে ভাঙতে চলেছে, সেই ইঙ্গিতটা মিলেছিল বিধানসভা ভোটের ফলেই। লোকসভার তুলনায় তৃণমূলের ভোট বেড়েছিল অনেকটাই। জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো কংগ্রেসের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, ‘‘তৃণমূল যে ভাবে রাজ্যে উন্নয়নের কাজ করছে, তা সকলেই দেখছেন। তার পরেই তাঁরা উন্নয়নে সামিল হওয়ার লক্ষ্যে আমাদের কাছে তৃণমূলে আসার আবেদন করছেন। মরা তাঁদের স্বাগত জানাচ্ছি। এর মধ্যে তো কোনও ভাঙানোর খেলা নেই।’’

Nepal mahato
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy