Advertisement
E-Paper

জেলা জুড়ে পর্যটনের পরিকল্পনা

রাজ্যে পালাবদলের পরে প্রশাসনিক বৈঠক অথবা প্রশাসনিক সভা— বস্তুত দুই মঞ্চেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে বারবার শোনা গিয়েছে, পর্যটনের পরিকাঠামো গড়ে পুরুলিয়ার সৌন্দর্যকে পর্যটকদের কাছে তুলে ধরার বার্তা।

প্রশান্ত পাল

শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০০:২০
নিসর্গ: বড়ন্তির এই টিলা এবং জলাধারের টানেই আসেন পর্যটকেরা। ইতিমধ্যেই তাঁদের থাকার বন্দোবস্তও করেছে পর্যটন দফতর। ছবি: সুজিত মাহাতো।

নিসর্গ: বড়ন্তির এই টিলা এবং জলাধারের টানেই আসেন পর্যটকেরা। ইতিমধ্যেই তাঁদের থাকার বন্দোবস্তও করেছে পর্যটন দফতর। ছবি: সুজিত মাহাতো।

পুরুলিয়া মানেই আর অযোধ্যা পাহাড় বা গড়পঞ্চকোট নয়। ছোটনাগপুর মালভূমির জঙ্গলঘেরা পুরুলিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে থাকা সৌন্দর্যকে এ বার পর্যটকদের কাছে তুলে ধরতে উদ্যোগী হচ্ছে প্রশাসন। জেলা প্রশাসন মনে করছে, অযোধ্যা পাহাড়ের পাশাপাশি এই জেলায় এ রকম আরও বেশ কয়েকটি জায়গা রয়েছে, যার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হতে পারেন পর্যটকেরা। প্রয়োজন শুধু এই সমস্ত এলাকায় উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়ে তোলা। পর্যটনের স্বার্থে দ্রুত পরিকাঠামো গড়ে তুলতে বেসরকারি বিনিয়োগও স্বাগত। সম্প্রতি বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে এক বৈঠকে জেলা প্রশাসনের তরফে তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

রাজ্যে পালাবদলের পরে প্রশাসনিক বৈঠক অথবা প্রশাসনিক সভা— বস্তুত দুই মঞ্চেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে বারবার শোনা গিয়েছে, পর্যটনের পরিকাঠামো গড়ে পুরুলিয়ার সৌন্দর্যকে পর্যটকদের কাছে তুলে ধরার বার্তা। জঙ্গলমহলে শান্তি ফেরার পরে গত কয়েক বছরে জেলার পর্যটন লাভের মুখ দেখেছে। তাই উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়তে পারলে, এই শিল্পকে ঘিরে বিকল্প অর্থনীতির দরজা খুলবে বলেই মনে করছে প্রশাসন।

জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘গত কয়েক বছরে বন উন্নয়ন নিগমের গড়পঞ্চকোট প্রকৃতি ভ্রমণ কেন্দ্রে পর্যটকদের ঢল নেমেছে। জঙ্গলমহলে শান্তি ফেরার পরে অযোধ্যা পাহাড়েরও একই ছবি। শীতে পিকনিকের মরসুমে পাহাড়ে ফি বছর পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে পাল্লা দিয়ে।’’

জানা গিয়েছে, গড়পঞ্চকোট ও জয়চণ্ডী পাহাড়, বড়ন্তিতে ইতিমধ্যে পর্যটক আবাস গড়েছে রাজ্য পর্যটন দফতর। পরবর্তীকালে পর্যটক আবাস গড়া হয়েছে কয়রাবেড়াতেও। এই পর্যটক আবাসগুলিও ভাল ব্যবসা করছে। বড়ন্তিতে পর্যটন দফতর পর্যটক আবাস গড়ে তোলার আগে এই স্পট যে পর্যটকদের কাছে ছুটি কাটানোর আদর্শ হয়ে উঠতে পারে, সেই পথ দেখিয়েছে বেসরকারি বিনিয়োগই।

বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বৈঠকে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, যদি জেলায় নতুন পর্যটন ক্ষেত্রে কেউ বিনিয়োগ করতে চান, তাহলে প্রশাসন সব রকম ভাবে তাঁদের সহায়তা করবে।

জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায় বলেন, ‘‘পুরুলিয়ার পর্যটন বলতে কেবলমাত্র অযোধ্যা পাহাড় এমনটা নয়। আমরা এ বার পর্যটকদের কাছে পুরুলিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে যে সৌন্দর্য ছড়িয়ে রয়েছে, তা তুলে ধরতে চাই। এ জন্য আমরা বড়ন্তি, মুরগুমা, চাষমোড়-সহ বেশ কয়েকটি জায়গাকে চিহ্নিত করেছি। পর্যটন শিল্পে এই জায়গাগুলিতে কেউ বিনিয়োগ করতে চাইলে, প্রশাসন সাহায্য করবে। বিনিয়োগকারীদের তা সবিস্তারে জানানো হয়েছে।’’

এর পাশাপাশি জেলার ইতিহাস বিজড়িত স্থানগুলিকে ট্যুরিজমের আওতায় এনে পর্যটকদের কাছে ‘হিস্টোরিক্যাল ট্যুরিজম’-এর স্বাদ দিতে চায় জেলা প্রশাসন। কিছু দিন আগে জেলায় এসে এ কথা জানিয়েছিলেন পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব। পুঞ্চার পাকবিড়রাতে জৈন স্থাপত্য, গড়পঞ্চকোটের পঞ্চরত্ন মন্দির এলাকায় পর্যটকদের জন্য পরিকাঠামো গড়ার কাজ শুরু করেছে পর্যটন দফতর।

কাশীপুর পঞ্চকোট রাজবাড়ি, দেউলঘাটা মন্দির ক্ষেত্রের মতো একাধিক ইতিহাস বিজড়িত স্থান ছড়িয়ে রয়েছে জেলা জুড়ে। জেলাশাসক বলেন, ‘‘পাকবিড়রাতে কাজ চলছে। কাশীপুর রাজবাড়ির বিষয়টি আমাদের ভাবনায় রয়েছে। এ রকম যে সমস্ত জায়গা রয়েছে, সেই জায়গাগুলিও আমরা পর্যটনের আওতায় আনার কথা মাথায় রেখেছি।’’

Tourism অযোধ্যা পাহাড় Natural Beauties
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy