Advertisement
০৬ ডিসেম্বর ২০২৪

ঘরে মিলল স্বামী-স্ত্রীর থেঁতলানো দেহ

ঘরের মধ্যে মিলল স্বামী-স্ত্রীর মাথা থেঁতলে দেওয়া দেহ। আর এই খুনে জড়িয়ে গেল নিহতের প্রথম পক্ষের স্ত্রীর নাম।

পাহারা: এই বাড়িতেই খুন হন দম্পতি। ছবি: অভিজিৎ সিংহ

পাহারা: এই বাড়িতেই খুন হন দম্পতি। ছবি: অভিজিৎ সিংহ

নিজস্ব সংবাদদাতা
ওন্দা শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৭ ০১:২৯
Share: Save:

ঘরের মধ্যে মিলল স্বামী-স্ত্রীর মাথা থেঁতলে দেওয়া দেহ। আর এই খুনে জড়িয়ে গেল নিহতের প্রথম পক্ষের স্ত্রীর নাম।

বুধবার ওন্দা থানার রতনপুর পঞ্চায়েতের মান্দারবনি গ্রামের ঘটনা। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে দেহ দু’টি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতেরা হলেন মিঠু মালগোপ (৩৫) ও তাঁর দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী রুমা মালগোপ (৩০)। মিঠুর দাদা চন্দ্রকান্ত মালগোপ পরে পুলিশের কাছে খুনের জন্য ভাইয়ের প্রথম পক্ষের স্ত্রী টিঙ্কু মালগোপ–সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে। সন্ধ্যার দিকে পুলিশ ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চারজনকে আটক করে থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যায়। জেলা পুলিশ সুপার সুখেন্দু হিরা বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, মিঠু গ্রামেতেই একটি ছোট পোলট্রি ফার্ম চালাতেন। মিঠু ও টিঙ্কুর দু’টি সন্তান রয়েছে। তাঁদের ছেলে শুভ মালগোপ গত বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। মেয়ে এ বার দশম শ্রেণিতে উঠেছে।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, মাস খানেক আগে টিঙ্কু সংসার ছেড়ে এক আত্মীয়ের সঙ্গে পালিয়ে যান। মাস দেড়েক আগে সিমলাপাল থানার কিষ্টপুর গ্রামের বাসিন্দা রুমাকে বিয়ে করেন মিঠু। তাঁদের পৈতৃক বাড়িতে বাবা, মা ও দাদার পরিবারের সঙ্গে মিঠু থাকতেন। তবে রাতে ঘুমাতে যেতেন পুরনো বাড়ি থেকে কয়েক মিটার দূরে পোলট্রি ফার্ম লাগোয়া নতুন বাড়িতে। মঙ্গলবারও রাত প্রায় ৯টার দিকে মিঠু ও রুমা ওই বাড়িতে ঘুমাতে যান।

এ দিন সকালে তাঁরা পুরনো বাড়িতে ফিরে না আসায় খোঁজ করতে গিয়ে পরিবারের লোকেরা ওই দম্পতিকে বিছানার উপর মৃত অবস্থায় দেখতে পান। খবর যায় পুলিশের কাছে।

এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, থমথমে পরিবেশ। কয়েকজন সিভিক ভলান্টিয়ার ওই বাড়ি পাহারা দিচ্ছিলেন। পরিবার ও পড়শিদের দাবি, আততায়ীরা পাশে পড়ে থাকা মই লাগিয়ে বাড়ির ছাদে ওঠে। ছাদ থেকে নীচে বারান্দায় নামার দরজা পলকা হওয়ায় সহজেই তারা তা খুলে ফেলে। ওই দম্পতি যে ঘরে শুয়েছিলেন, সেই ঘরের দরজা লাগানোর সমস্যা ছিল। তাই দরজাটি ওই রাতে খোলাই ছিল। কার্যত বিনা বাধায় আততায়ীরা ঘরে ঢুকে ঘুমন্ত দম্পতির মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করে খুন করে। তবে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে খুনে ব্যবহৃত কোনও জিনিসপত্র পায়নি।

এই ঘটনায় নিহতের পরিজনেরা মিঠুর প্রথম পক্ষের স্ত্রীকেই সন্দেহ করছেন।

কিন্তু কেন?

অভিযোগ, মিঠুর দ্বিতীয়বার বিয়ে মানতে পারেননি টিঙ্কু। মিঠুর দাদা চন্দ্রকান্তবাবুর অভিযোগ, ‘‘বিয়ের পর থেকেই টিঙ্কু ভাইকে ফোন করে হুমকি দিত। বলত ‘শেষ করে দেবে’। সেটাই ওই মেয়েটা করল।’’ টিঙ্কুর ছেলেও তাই মনে করে। সে বলে, ‘‘সোমবার মা আমাকে ফোন করেছিল। কিন্তু আমি ঘৃণা করি বলেই কথা বলিনি। কোনও সন্দেহ নেই, মা-ই লোক লাগিয়ে খুন করেছে।’’

গ্রামের একপ্রান্তে মিঠুর নতুন বাড়ি। তাঁর মা দুলালিদেবী কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘‘টিঙ্কু আমাদের সঙ্গে অশান্তি করত বলেই মিঠু ওর জন্য আলাদা ঘর করেছিল। সেই ঘরেই ওই মেয়ে আমার ছেলে ও নতুন বৌমাকে লোক লাগিয়ে যে খুন করবে ভাবতে পারিনি। সব শেষ হয়ে গেল।’’

টিঙ্কুর সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। মিঠুর পরিজনেরা জানান, খুনের পর থেকেই ওঁর ফোন বন্ধ। তাতেই সন্দেহ আরও বেড়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Dead Body Husband Wife
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy