Advertisement
E-Paper

পুজো হবে শেয়াল-শকুনের

জিতাষ্টমীর রাতের চার প্রহরে বিষ্ণুপুরের গৃহিণীরা পুজো করেন শিয়াল আর শকুনকে। আজ, শনিবার সেই দিন। প্রবীণ ইতিহাসবিদ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত জানান, এটি রাঢ়ের প্রাচীন লোকাচার। সন্ততির সুস্থতা কামনায় উপবাস করে ব্রত রাখা হয়।  তার পরে হয় জীমূতবাহনের পুজো। 

শুভ্র মিত্র

শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:১৫
উঠোনে পসরা। নিজস্ব চিত্র

উঠোনে পসরা। নিজস্ব চিত্র

বাহাদুরগঞ্জে এক জোড়া শেয়াল–শকুন বিক্রি হচ্ছিল সাত টাকায়। তবে বন দফতরের চিন্তার কারণ ছিল না। মাটির শেয়াল। মাটির শকুন। অরণ্যের সঙ্গে মানুষের নিবিড় যোগাযোগের একটা খেই যেন খুঁজে পাওয়া গেল রাস্তার ধারে। জিতাষ্টমীর রাতের চার প্রহরে বিষ্ণুপুরের গৃহিণীরা পুজো করেন শিয়াল আর শকুনকে। আজ, শনিবার সেই দিন। প্রবীণ ইতিহাসবিদ চিত্তরঞ্জন দাশগুপ্ত জানান, এটি রাঢ়ের প্রাচীন লোকাচার। সন্ততির সুস্থতা কামনায় উপবাস করে ব্রত রাখা হয়। তার পরে হয় জীমূতবাহনের পুজো।

শুক্রবার বাহাদুরগঞ্জের প্রবীণা সন্ধ্যা সূত্রধর, চায়না সূত্রধররা বলছিলেন, ‘‘বাড়ির ছেলেরা যখন মাটি ভেঙে দুর্গা প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত থাকে, আমরা ওই মাটি নিয়েই নিজের খুদে খুদে শেয়াল আর শকুনি বানাই। বিষ্ণুপুরের আদি বাসিন্দারদের কাছে আমাদের তৈরি শেয়াল-শকুনের কদর আছে।’’ যা টাকা উপার্জন হয়, পুজোর হাত খরচ উঠে আসে ।

একটি মাটির হাঁড়িতে শেয়াল ও শকুনি রাখা হয়। সঙ্গে প্রসাদ— বোঁটা সমেত আতা, শশা, ভেজানো কলাই আর কলা। পুজোয় লাগে শালুক ফুল। কৃষ্ণগঞ্জের সুব্রত চন্দ্র বাজার থেকে ফেরার পথে বললেন, ‘‘ছোট বেলায় যমুনাবাঁধে পুজোর পরে শেয়াল-শকুনি ভাসানোর সময় সবাই মিলে ছড়া আওড়াতাম। ‘শুকনি গেল ডালে, শিয়াল গেল খালে। ও শিয়াল মরিস না, লোক হাসিটা করিস না’। কথাগুলো এখনও ছেলেছোকরার দল বলে।’’

স্নান সেরে শশা আর কলাই মাখা মুড়ি খাওয়ার কথা এখন মনে পড়ে সুব্রতবাবুর। নতুন প্রজন্মের খুদেরাও সেই সাবেক-স্বাদে মজতে শিখছে ধীরে ধীরে। কাদাকুলিপাড়ার প্রবীণ কেশব চক্রবর্তী বলেন, ‘‘জীতাষ্টমীর সন্ধ্যা থেকে রাতের চার প্রহরে চার বার পুজো হবে। পুজোর স্থানে অতি অবশ্যই থাকবে হলুদ গাছ, ধান, মানকচু, কালোকচু আর বটের ডাল।’’ গৃহিণীরা সন্তানদের মঙ্গল কামনা করে জেগে থাকবেন। তার তোড়জোড় হাসি ফোটাল সন্ধ্যাদের মুখে।

Folk Bengal Bankura Bishnupur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy