Advertisement
E-Paper

টিলা কাটা নিয়ে উত্তেজনা, হামলা

টিলা কেটে পাথর বের করার কাজকে ঘিরে ফের উত্তেজনা ছড়াল পুরুলিয়ায়। কাশীপুরের পরে এ বার রঘুনাথপুরে। দু’ক্ষেত্রেই বাধা পেয়েছে রাজ্য সরকারি সংস্থা ওয়েস্ট বেঙ্গল মিনারেল ডেভেলেপমেন্ট অ্যান্ড ট্রেডিং কর্পোরেশন লিমিটেড (ডব্লিউবিএমডিটিসি)।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:১৫
হামলার পরে। রঘুনাথপুরের সেনেড়া মৌজায় তোলা নিজস্ব চিত্র।

হামলার পরে। রঘুনাথপুরের সেনেড়া মৌজায় তোলা নিজস্ব চিত্র।

টিলা কেটে পাথর বের করার কাজকে ঘিরে ফের উত্তেজনা ছড়াল পুরুলিয়ায়। কাশীপুরের পরে এ বার রঘুনাথপুরে। দু’ক্ষেত্রেই বাধা পেয়েছে রাজ্য সরকারি সংস্থা ওয়েস্ট বেঙ্গল মিনারেল ডেভেলেপমেন্ট অ্যান্ড ট্রেডিং কর্পোরেশন লিমিটেড (ডব্লিউবিএমডিটিসি)।

পাহাড় কাটার অভিযোগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রঘুনাথপুরের সেনেড়া মৌজায় কুইলাতোড়া গ্রামের অদূরে ডব্লিউবিএমডিটিসি-র ঠিকা সংস্থার ক্যাম্প অফিসে ভাঙচুর করেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। ভাঙা হয়েছে একটি গাড়ির কাচ। অফিসের কর্মীদের মারধরও করা হয়েছে দাবি করে পুলিশের কাছে অভিযোগে জানিয়েছে সংস্থা। ঘটনার পর থেকে অস্থায়ী অফিসটি বন্ধ করে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি গোটা ঘটনা জানানো হয়েছে প্রশাসনকে। বিষয়টি দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রঘুনাথপুরের মহকুমাশাসক দেবময় চট্টোপাধ্যায়।

রঘুনাথপুর ১ ব্লকের সেনেড়া মৌজায় বেশ কিছু ছোট টিলা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। ১৮.৪০ একর জমিতে একটি টিলা-সহ নীচের অংশ ও পাশের এলাকা খুঁড়ে গ্রানাইট পাথর বের করার কাজ শুরু করবে এমডিটিসি। প্রথম পর্যায়ে পাঁচ বছর ধরে আট একর জমিতে কাজ হবে। তবে মাটি বা টিলা কাটার কাজ এখনও শুরু হয়নি। আপাতত মূল রাস্তা থেকে ক্যাম্প অফিস পর্যন্ত যাওয়ার রাস্তা তৈরির কাজ শুরু করেছে এমডিটিসি-র কাছ থেকে এই প্রকল্পের বরাত পাওয়া একটি বেসরকারি সংস্থাটি। সেনেড়ার এই প্রকল্প রূপায়ণ নিয়ে এমডিটিসির শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে ডিসেম্বর মাসে একপ্রস্ত বৈঠক হয়েছে জেলা প্রশাসনের। পরে ফ্রেবুয়ারির প্রথম দিকে রাস্তা তৈরির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল মহকুমা প্রশাসনের সঙ্গে।

কিন্তু, শুরু থেকেই স্থানীয়দের কাছ থেকে বাধা আসায় আপাতত কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। বুধবার সেনেড়ার কুইলাতোড়া গ্রামের অদূরে বেসরকারি সংস্থাটির অস্থায়ী অফিসে গিয়ে দেখা গেল, প্রকল্পের সাইনবোর্ড মাটিতে পড়ে রয়েছে। অদূরেই দাঁড়িয়ে আছে একটি মাটি কাটার মেশিন ও ট্রাক। মাটি কাটার মেশিনের কাচ ভাঙা। নিরাপত্তারক্ষীরা জানালেন, মঙ্গলবার জনা পনেরো-কুড়ি লোক এসে কাজ বন্ধ করার জন্য বলে। কারণ জানতে চাওয়া হলেও উত্তর মেলেনি। হঠাৎই ভাঙচুর শুরু হয়।

এর আগে রঘুনাথপুর মহকুমারই কাশীপুরের পলসড়া মৌজায় এমডিটিসি-র এই ধরনেরই একটি প্রকল্প স্থানীয় আদিবাসী সম্প্রদায় ও স্থানীয় বাসিন্দাদের বাধায় বন্ধ হয়ে গেছে। সে ক্ষেত্রে পরিবেশ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করেছিলেন স্থানীয়রা। প্রশাসন সূত্রে জানা যাচ্ছে, সেনেড়ার যে টিলায় কাজ করার কথা এমডিটিসি-র, সেখানে আদিবাসী সম্প্রদায়ের ধর্মীয়স্থান আছে। টিলা কাটা হলে সেটি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন তাঁরা। রঘুনাথপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতির ওই এলাকার তৃণমূল সদস্য সোম হেমব্রম বলেন, ‘‘শুধু আদিবাসী নয়, অন্য সম্প্রদায়েরও ধর্মীয় স্থান আছে ওই টিলা ও লাগোয়া এলাকায়। কাজ শুরু হওয়ার সময় আমরা বলেছিলাম, ওই সব অংশে যেন কাজ না হয়।’’ তবে, ক্যাম্প অফিসে হামলার কথা তাঁর জানা নেই বলে দাবি সোমবাবুর।

কাশীপুরের পরে রঘুনাথপুরেও স্থানীয়দের বাধায় ফের সরকারি প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রশাসন চিন্তিত। প্রশাসনের অবশ্য দাবি, প্রকল্পের জন্য ধর্মীয়স্থান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা অমূলক। ছোট টিলা ও তার পাশের জমি খুঁড়ে পাথর বের করবে এমডিটিসি। তা ছাড়া, এই প্রকল্প পুরোপুরি পরিবেশবান্ধব বলে জানিয়েছে এমডিটিসি। এই কাজ শুরু হলে পরোক্ষে শতাধিক লোকের কর্মসংস্থান হওয়ার কথা। তবে, মহকুমাশাসক জানান, এমডিটিসি টিলার নীচের অংশ ও পাশের জমিতে কাজ হবে। টিলা কাটা হবে না। তাঁর কথায়, ‘‘এমডিটিসি-র সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। চলতি মাসে বা মার্চের প্রথম সপ্তাহে স্থানীয় লোকজন, জনপ্রতিনিধিদের এবং এমডিটিসি-কে নিয়ে আলোচনায় বসা হবে।’’

Hillock Unrest
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy