Advertisement
E-Paper

এপ্রিলেই জলসঙ্কটে ধুঁকছে গ্রাম

সবে গরম পড়ছে। রামপুরহাট থানার একাধিক গ্রামে পানীয় এরই মধ্যে জলকষ্ট দেখা দিয়েছে। জলস্তর নেমে যাওয়ায় অতান্তরে পড়ছেন বাসিন্দারা!

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৩১
লাইন: জলের খোঁজে নলহাটিতে। নিজস্ব চিত্র

লাইন: জলের খোঁজে নলহাটিতে। নিজস্ব চিত্র

সবে গরম পড়ছে। রামপুরহাট থানার একাধিক গ্রামে পানীয় এরই মধ্যে জলকষ্ট দেখা দিয়েছে। জলস্তর নেমে যাওয়ায় অতান্তরে পড়ছেন বাসিন্দারা!

রামপুরহাট ১ ব্লকের বিডিও নীতীশ বালা বলেন, ‘‘এলাকার জল সমস্যার কথা জানি। কিন্তু একবছর রিগবোরিং বসিয়ে জল পাওয়া গেলেও পরের বছর জলস্তর এত নীচে নেমে যাচ্ছে যে ৫৫০–৬০০ ফুট গভীরেও জল মিলছে না। স্থায়ী সমাধানের জন্য এলাকার পরিত্যক্ত খাদানগুলি থেকে জল সরবরাহ করার জন্য তিনটি প্রকল্পের ডিপিআর পাঠানো আছে। কিন্তু এখনও অনুমোদন হয়নি।’’

যে সমস্ত গ্রামে জলসংকট দেখা দিয়েছে, তার মধ্যে বেশির ভাগই আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রাম। স্থানীয়রা জানান, প্রায় প্রতি বছরই গ্রীষ্ম কাল পড়তেই এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা দেখা যায়। কখনও কখনও জলের সমস্যা সমাধানে রামপুরহাট থেকে ট্যাঙ্কে জল পাঠানো হয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত স্থায়ী সমাধানের জন্য কোনও প্রকল্প নেওয়া হয়নি। রামপুরহাট থানার যে সমস্ত অঞ্চলে গরম না পড়তেই বর্তমানে পানীয় জলের সমস্যা দেখা দিয়েছে সেই সমস্ত গ্রামগুলি হল রামপুরহাট ১ পঞ্চায়েত সমিতির অধীন কুশুম্বা অঞ্চলের চকমণ্ডলা, ধাঁতালপাড়া, নয়াপাড়া, পাথরচালি, বড়পাহাড়ি, শোলাগড়িয়া এই সমস্ত গ্রাম। আর মাসড়া অঞ্চলের ঠাকুরপুড়া, তাঁতবাধা গ্রামগুলিতেও বর্তমানে জলস্তর নীচের দিকে নামতে শুরু করেছে।

চকমণ্ডলা গ্রামের বাসিন্দা নিখিল পাল, সমাজপতি মণ্ডলরা জানালেন, গ্রামে নিচুপাড়া ও হাসপাতাল পাড়া সব মিলিয়ে প্রায় ২০০ ঘর লোকের বাস। গ্রামের তিনটি পুকুরই ইতিমধ্যে শুকিয়ে গিয়েছে। এলাকার কুয়োগুলিও শুকিয়ে গিয়েছে। সরকারি রিগবোরিং কলগুলি অধিকাংশ জল উঠছে না। যেগুলিতে জল উঠছে সেগুলির কোনও টাতে জলস্তর এত নীচে নেমে গিয়েছে যে চার পাঁচ বালতি জল নেওয়ার পর আর জল মিলছে না।

এলাকার পাথরচালি, নয়াপাড়া এই সমস্ত আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামগুলিরও একই অবস্থা। আবার শোলাগড়িয়া গ্রামে তফসিলি সম্প্রদায়ের। সেখানেও জলস্তর নীচে নেমে যাওয়ার জন্য রিগ বোরিং নলকূপগুলি থেকে পানীয় জল মিলছে না। কুশুম্বা অঞ্চলের তুম্বনি গ্রামের বাসিন্দা পান্থ সাহা বলেন, ‘‘এলাকায় পানীয় জলের কষ্ট দূর করার জন্য এলাকার বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতরের মাধ্যমে পাইপ লাইনে জল পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু জলস্তর নীচে নেমে নেওয়ার জন্য প্রকল্পগুলি সঠিক ভাবে কার্যকর হয়ে ওঠেনি।’’ তবে বড়পাহাড়ি এলাকায় পরিত্যক্ত খাদানের জল পরিশ্রুত করে এলাকায় এলাকায় পৌঁছে দেওয়ার একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। ওই প্রকল্পটি বাস্তব রুপ পেলে আশা করা যায় এলাকায় পানীয় জলের কষ্ট দূর হবে।

রামপুরহাট ১ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য মাসড়া অঞ্চলের বাসিন্দা সৌমেন মুর্মু বলেন, ‘‘মাসড়া অঞ্চলের ঠাকুরপুড়া, তাঁতবাঁধা, চাঁদনি, এই সমস্ত গ্রামগুলিতে গ্রীষ্মকালে রামপুরহাট থেকে জলের গাড়ির মাধ্যমে পানীয় জলের সমস্যার সমাধান করে। এ বার এখনই পানীয় জলের কষ্ট শুরু হয়েছে। এলাকায় পুকুর বলতে কিছু নেই। দু’একটি রিগবোরিং নলকূপ থেকে পানীয় জল মিললেও সেগুলি থেকেও জলস্তর নীচে নেমে যেতে শুরু করেছে।”

বিডিও আশ্বাস দেন, ‘‘কিছু দিনের মধ্যেই এলাকায় এলাকায় ট্যাঙ্কের মাধ্যমে জল সরবরাহ করা হবে। যে সমস্ত নলকূপগুলি খারাপ আছে সেগুলিও মেরামত করা হবে।’’

drinking water
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy