Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Amartya Sen

অমর্ত্যকে ১৫ দিনে জমি খালি করার নির্দেশ বিশ্বভারতীর, অন্যথায় বলপ্রয়োগের হুঁশিয়ারি

অনুমোদিত দখলদার উচ্ছেদ আইন ১৯৭১ ধারা ৫-এর উপধারা ১-এর অধীনে ক্ষমতা প্রয়োগ করে ফেরানো হবে বিতর্কিত ১৩ ডেসিমেল জমি। ১৫ দিনের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

Amartya Sen

অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে জমি খালি করার জন্য ১৫ দিনের সময়সীমা বেঁধে দিলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২৩ ০২:২৩
Share: Save:

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে জমি খালি করার বিষয়ে অন্তিম সময়সীমা বেঁধে দিলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে জমি খালি করতে বলা হয়েছে অমর্ত্যকে। নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে জমি খালি করা না হলে বলপ্রয়োগেরও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে বিশ্বভারতীর তরফে।

বুধবার বেলা ১২টা নাগাদ বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক ভবনে জমি বিতর্কের শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এ দিন অমর্ত্য বা তাঁর আইনজীবী গোঁরাচাদ চক্রবর্তী কেউই উপস্থিত ছিলেন না। তাই অমর্ত্যের বিরুদ্ধে কড়া সিদ্ধান্ত নিলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। অমর্ত্যকে পাঠানো চিঠিতে তাঁরা জানিয়েছেন, অনুমোদিত দখলদার উচ্ছেদ আইন ১৯৭১ ধারা ৫-এর উপধারা ১-এর অধীনে ক্ষমতা প্রয়োগ করে ফেরানো হবে বিতর্কিত ১৩ ডেসিমেল জমি। ১৫ দিনের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ৬ই মে-র মধ্যে বিশ্বভারতীর প্লট নম্বর ২০১ উত্তর-পশ্চিম কোণে অর্থাৎ এল আর প্লট নাম্বার ১৯০০/২৪৮৭ সুরুল মৌজার ১৯০০ জেএল নম্বর ১০৪ পাবলিক সম্পত্তির উপর অনুমোদিত দখল জমি খালি করা নির্দেশ দিয়েছেন বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত যুগ্ম কর্মসচিব ও এস্টেট অফিসারের। ওই সময়সীমার মধ্যে জমি খালি করা না হলে কঠোর পদক্ষেপের হুঁশিয়ারির পাশাপাশি প্রয়োজনে বল প্রয়োগের মাধ্যমেও খালি করার নির্দেশ দিয়েছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।

বিশ্বভারতীর জয়েন্ট রেজিস্ট্রার এবং এস্টেট অফিসারকে চিঠি দিয়ে অমর্ত্য লিখেছিলেন, “পারিবারিক ভিটে জমি উত্তরাধিকার সূত্রে তাঁরই প্রাপ্য। এ নিয়ে কোনও বিতর্কের অবকাশ নেই।” তিনি ওই চিঠিতে আরও লিখেছিলেন, ‘‘শান্তিনিকেতনের ‘প্রতীচী’ বাড়ি যা ১৯৪৩ সাল থেকে আমার পরিবারের দখলে এবং আমি নিয়মিত ব্যবহার করে আসছি। পারিবারিক ভিটে জমির ধারক আমি এবং এটি হস্তান্তর করা হয়েছিল। আমার বাবা আশুতোষ সেন এবং মা অমৃতা সেনের মৃত্যুর পরও দীর্ঘ ৮০ বছর জমির ব্যবহার একই রয়ে গিয়েছে। জমি ইজারার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে পর্যন্ত কেউ এই জমির অধিকার দাবি করতে পারে না। প্রশাসনকে তা নিশ্চিত করারও নির্দেশ দিয়েছেন ম্যাজিস্ট্রেট।’’ সেই বিষয়টি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে মনে করিয়ে দিয়ে চিঠিতে জানান, কোনও হস্তক্ষেপ বা শান্তিভঙ্গের অনুমতি দেওয়া উচিত নয় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের। এর পরেও যদি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ মানতে রাজি না হন তা হলে আমি জুন মাসে শান্তিনিকেতন ফিরে এলে আলোচনা হতে পারে।’’ এই লিখে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে ১৭ এপ্রিল চিঠি পাঠান নোবেলজয়ী। চিঠি পাঠিয়ে আলোচনার জন্য তিন মাস সময় চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ তিন মাসের বদলে জমি উচ্ছেদের জন্য মাত্র ১৫ দিনের সময়সীমা বেঁধে দিলেন।

বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের পাল্টা দাবি, দখলদার উচ্ছেদ আইন ১৯৭১ সালের ১০ ধারায় বলা আছে, যিনি ইজারাদাতা, তিনিই জমির মালিক। তিনি জমির হস্তান্তর, উত্তরাধিকারী উইল করতে পারবেন না। ব্যতিক্রম শুধুমাত্র বিশ্বভারতীর আজীবন সদস্যদের। অমর্ত্য বিশ্বভারতীর আজীবন সদস্য নন, সদস্য হলে ইজারাদাতা হিসেবে স্বীকৃত হতেন। বিশ্বভারতী শতাব্দী প্রাচীন জাতীয় গুরুত্বের প্রতিষ্ঠান। সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩ ডেসিমেল জমি দখল করে রেখেছেন অমর্ত্য, বলেও দাবি করা হয়। জমি উদ্ধারের জন্য বিশ্বভারতীর যে অনড় মনোভাব নিয়েছে তা কার্যত পরিষ্কার। যদিও চিঠি প্রসঙ্গে অমর্ত্য অথবা তাঁর আইনজীবীর কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Amartya Sen Visva Bharati University Land Dispute
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE