দুঃস্থদের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ। নিজস্ব চিত্র
হাতখরচ বাঁচিয়ে জমানো টাকা। সেই টাকা দিয়ে কারও স্বপ্ন ছিল পয়লা বৈশাখে নতুন জামা কিনবে। আবার কেউ ভেবেছিল, কোথাও একটু বেড়িয়ে আসবে। ওরা সকলেই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। করোনাভাইরাসের আতঙ্কে সকলেই গৃহবন্দি। এখন সকলেরই চোখ খবরের কাগজের পাতায় ও টিভির খবরে। এলাকার অনেক দিন মজুর কর্মহীন। ভরসা শুধু রেশনের খাদ্য সামগ্রী। তাঁদের পরিবারের পাশে দাঁড়াল নলহাটি হরিপ্রসাদ উচ্চ বিদ্যালয় ও নলহাটি হাই স্কুল ফর গার্লসের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরা।
নিজেদের সঞ্চয়ের টাকা দিয়ে পড়ুয়ারা ৭৫টি পরিবারের হাতে তুলে দিল খাদ্য সামগ্রী।
পড়ুয়ারা জানায় এই ভাবনার নাম দিয়েছে তারা ‘আশার আলো’। সকলেই প্রথমে বন্ধুদের থেকে সাহায্য চায়, তারপর তাদেরকেও এই উদ্যোগে সামিল করে। যে যার সাধ্য মতো সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। শুক্রবার সকালে নলহাটির থানার পাইকপাড়ার আদিবাসী এলাকায় দরিদ্র পরিবারগুলিকে করোনাভাইরাস প্রসঙ্গে সচেতনতার বার্তা দিতে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রেখে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
অঙ্কিতা মুখোপাধ্যায়, অবিচল তিওয়ারি, অরিজিৎ দত্ত, মোবারক হোসেন, নেহা সাউ, শুভজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের মতো পড়ুয়ারা বলে, ‘‘আমরা সকলের কাছে সাহায্যের জন্য অনুরোধ করেছিলাম। আমাদের অনুরোধে সকলেই একশো থেকে পাঁচশো টাকা দিয়েছে। সেই টাকা দিয়ে আমরা চাল, ডাল, চিনি, তেল, বিস্কুটের প্যাকেট ও ছোটদের চকোলেট কিনে দিয়েছি। আমাদের ইচ্ছের কথা জানার পরে অনেক বাবা-মা টাকা দিতে চেয়েছেন কিন্তু আমরা শুধুমাত্র আমাদের জমানো টাকা দিয়েই এই দুঃস্থ পরিবারগুলির হাতে খাদ্য সামগ্রী তুলে দিয়েছি। এতে আমাদের মনের শান্তি।’’
সাহায্য পাওয়ার পরে ঠিকা শ্রমিক সুনীল সরেন বলেন, ‘‘আমি পাথর শিল্পাঞ্চলে ঠিকা শ্রমিকের কাজ করি। বাড়িতে বৃদ্ধ মা ও তিন ছেলে নিয়ে আমার পরিবার। কাজ না থাকায় ঘরে আর খাবার মতো কিছু ছিল না। আজ এই স্কুলের ছেলে মেয়েরা আমাদের মুখে খাবার তুলে দিল। ওদের অনেক ভাল হোক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy