Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
primary teachers exam

২০১৪ টেট উত্তীর্ণ শিক্ষকদের সিবিআইকে দিতে  তথ্য সংগ্রহ শুরু

পুরুলিয়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রে জানা যায়, গত ২৫ এপ্রিল রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে একটি চিঠি আসে।

টেট পরীক্ষার্থী।

টেট পরীক্ষার্থী। — ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া, পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২৩ ০৮:১৮
Share: Save:

২০১৪ সালের প্রাথমিক টেট উত্তীর্ণ হয়ে যাঁরা চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন, তাঁদের নথি তলব করল রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। সিবিআইয়ের একটি মামলার প্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপ জানিয়ে রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলেন, “বিভিন্ন জেলার কাছ থেকে তথ্য চাওয়া হয়েছে।”

পুরুলিয়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রে জানা যায়, গত ২৫ এপ্রিল রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে একটি চিঠি আসে। তাতে সিবিআইয়ের একটি মামলার প্রেক্ষিতে ওই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নথি চাওয়ার উল্লেখ রয়েছে। আগামী ৮ মে পুরুলিয়া জেলার চাকরি পাওয়া প্রার্থীদের নথি জমা দিতে হবে। নথিগুলি সরাসরি সিবিআইয়ের ডিআইজি, দুর্নীতি-বিরোধী শাখার কাছে জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সূত্রের খবর, সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের নাম, অভিভাবকের নাম, স্থায়ী ঠিকানা, জন্ম তারিখ, যোগ্যতা নির্ণায়ক পরীক্ষার রোল নম্বর, কবে কাজে যোগ দিয়েছেন, কোন স্কুলে যোগ দিয়েছেন, যিনি নিয়োগ পেয়েছিলেন তিনি কোন শ্রেণিভুক্ত, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির যোগাযোগের মোবাইল নম্বরের মতো নানা তথ্য জমা দিতে বলা হয়েছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রে খবর, নির্দেশ পাওয়ার পরে তথ্য সংগ্রহে তৎপরতা শুরু হয়েছে। জেলার ৪৫টি চক্র থেকে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের নথি দ্রুত জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদে জমা দিতে বলা হয়েছে। টেট, ২০১৪-র বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী জেলায় মোট কত জন চাকরি পেয়েছিলেন, সেই তথ্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা দফতর থেকে মেলেনি। তবে সূত্রের খবর, সংখ্যাটা ১,৮০০-র কাছাকাছি।

এর আগে, গত বছরের জুন ও অগস্টেও রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে ২০১৪-র টেট উত্তীর্ণ হয়ে যাঁরা জেলার স্কুলগুলিতে প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকা হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন, তাঁদের বেশ কিছু নথি চাওয়া হয়। সে বারে চাকরি পাওয়া প্রার্থীদের ‘অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার’, ‘জয়েনিং লেটার’, মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের রেজাল্ট, ডিএলএড প্রশিক্ষণের রেজাল্ট ও শংসাপত্র, টেটের অ্যাডমিট কার্ড, টেটের রেজাল্ট-সহ নানা তথ্য চাওয়া হয়েছিল।

ঘটনা হল, ২০১৪-র টেট পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী নিয়োগ শুরুর পরে পুরুলিয়ায় সংরক্ষণ-বিধি মানা হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। ২০১৭-র ফেব্রুয়ারিতে এ নিয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা দফতরের সামনে অবস্থান শুরু হয়। আন্দোলনের জেরে টানা পাঁচ দিন প্রাথমিক শিক্ষা দফতরের গেট খোলা যায়নি।

পরে, আন্দোলনকারীদের অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়া হলে অবরোধ ওঠে। পরবর্তী কালে ২০২০-তে প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পরে, ২০১৪-য় টেট উত্তীর্ণ এবং যাঁদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ছিল, তাঁদের অনেকে নিয়োগপত্র পান বলে দাবি।

জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষা সংসদের সভাপতি বিধায়ক রাজীবলোচন সরেন বলেন, “রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের নির্দেশ অনুযায়ী তথ্য সংগ্রহ করার কাজ চলছে। নির্দিষ্ট দিনে তথ্য জমা করা হবে।” তিনি আরও জানান, ওই পর্বে অনেকে জেলায় কাজে যোগ দিয়ে পরবর্তী কালে অন্যত্র বদলি নিয়ে চলে যান। সেই তথ্যও জানানো হবে।

তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে বাঁকুড়া প্রাথমিক শিক্ষা সংসদও। সংসদের চেয়ারম্যান বসুমিত্রা পাণ্ডে বলেন, “সমস্ত অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকদের কাছ থেকে ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেটের মাধ্যমে চাকরি পাওয়া শিক্ষকদের তথ্য চাওয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সিবিআই দফতরে সেই তথ্য জমা দেওয়া হবে।”

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের তরফে আজ, শুক্রবারের মধ্যেই ওই তথ্য সিবিআই দফতরে জমা দেওয়ার কথা। সূত্রের খবর, ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেটের মাধ্যমে বাঁকুড়া জেলায় কম-বেশি ২ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকার নিয়োগ হয়েছিল। তাঁদের চাকরি নিয়োগের দিনক্ষণ, নিয়োগ প্রক্রিয়া সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE