স্ত্রীর গলায় নাইলনের দড়ির ফাঁস লাগিয়ে খুন করার অভিযোগে স্বামীকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল আদালত। ২০২০ সালের ২৪ মে বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড় থানার রামকানালি গ্রামে নিজের বাড়িতেই স্ত্রী বৈশাখী বাউরিকে খুন করার অভিযোগ ওঠে স্বামী আনন্দ বাউরির বিরুদ্ধে। পাঁচ বছর পর সেই ঘটনায় স্বামী আনন্দ বাউরীকে দোষী সাব্যস্ত করে বাঁকুড়া জেলা আদালত। বৃহস্পতিবার অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন কারাবাসের নির্দেশ দেয় বাঁকুড়া জেলা আদালত।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৩ বছর আগে বাঁকুড়ার মেজিয়া থানার মুকুন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা বৈশাখীর সঙ্গে বিয়ে হয় বেলিয়াতোড় থানার রামকানালি গ্রামের বাসিন্দা আনন্দের। ওই দম্পতির একটি ছেলে ও একটি মেয়েও হয়। পরিবারের দাবি, বিয়ের পর থেকে দম্পতির মধ্যে দাম্পত্যকলহ লেগে ছিল। মাঝেমধ্যেই আনন্দ মদ্যপ অবস্থায় স্ত্রী বৈশাখীর উপর চড়াও হয়ে মারধর করতেন বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে একাধিক বার দুই পরিবার আলোচনায় বসে মিটমাটও করে নেয়। কিন্তু তার পরেও বৈশাখীর উপর অত্যাচার কমেনি। ২০২০ সালের ২৪ মে রাতে বৈশাখীর বাপের বাড়ির লোকজন জানতে পারেন, বৈশাখী অসুস্থ। তাঁকে বেলিয়াতোড় গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে গিয়ে বৈশাখীর বাপের বাড়ির লোকজন দেখেন, তত ক্ষণে বৈশাখীর মৃত্যু হয়েছে। এর পরেই বৈশাখীকে খুন করার অভিযোগ তুলে বেলিয়াতোড় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বৈশাখীর ভাই আস্তিক বাউরি। পরে আনন্দকে গ্রেফতার করে বেলিয়াতোড় থানার পুলিশ। তার পর থেকে ওই ঘটনার মামলা চলছিল বাঁকুড়া জেলা আদালতে। বিভিন্ন তথ্যপ্রমাণ ও সাক্ষ্য গ্রহণের পর বুধবার বাঁকুড়া জেলা আদালত বৈশাখীকে খুনের ঘটনায় স্বামী আনন্দকে দোষী সাব্যস্ত করে। বৃহস্পতিবার বাঁকুড়া জেলা আদালত অভিযুক্ত আনন্দের সাজা ঘোষণা করে।
বাঁকুড়া জেলা আদালতের সরকারি আইনজীবী অরুণকুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বৈশাখী বাউরি খুনের ঘটনায় বাঁকুড়া জেলা আদালত মৃতার স্বামীকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে। একই সঙ্গে অভিযুক্তকে দশ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ছ’মাস কারাবাসের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।’’