Advertisement
০৬ মে ২০২৪
Wild Boar

সন্ধ্যা হলেই ক্ষেতে নেমে ফসল নষ্ট করছে বুনো শুয়োরের দল, ক্ষুব্ধ ওন্দার আমন চাষিরা

এই পরিস্থিতিতে মরিয়া হয়ে রাতভর জমির আলে বসে ফসল পাহারা দিচ্ছেন গ্রামবাসীদের একাংশ । কিন্তু তোয়াক্কা না করেই বুনো শুয়োরের দল অন্ধকার নামলেই জঙ্গল ছেড়ে বেরিয়ে নেমে পড়ছে জমিতে।

ওন্দার গ্রামে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে বুনো শুয়োর।

ওন্দার গ্রামে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে বুনো শুয়োর। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ওন্দা শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২২ ১৭:০৪
Share: Save:

হাতির হানায় যখন বাঁকুড়া উত্তর এবং বিষ্ণুপুর বনবিভাগের বিস্তীর্ণ এলাকা জেরবার, তখন বুনো শুয়োরের আক্রমণে দিশেহারা অবস্থা বাঁকুড়া দক্ষিণ বন বিভাগের এলাকার চাষিদের। সন্ধ্যার অন্ধকার নামলেই বুনো শুয়োরের দল জঙ্গল ছেড়ে নেমে পড়ছে গ্রাম লাগোয়া ধানের জমিতে। শুয়োরের হানায় ইতিমধ্যেই ওন্দা ব্লকের বেনাজিরা গ্রামের বহু জমির আমন ধানের দফারফা হয়েছে। অবশিষ্ট ফসল বাঁচাতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাত পাহারা দিচ্ছেন গ্রামের মানুষ।

চলতি বছর বর্ষায় বাঁকুড়া জেলায় বৃষ্টিপাত হয়েছে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশ কম। ফলে জেলার অন্যান্য অংশের মতোই কোনও ক্রমে জলসেচ করে আমন ধানের চারা রোপণ করেছিলেন বেনাজিরা গ্রামের চাষিরা। সেই ধান এখন পাকতে শুরু করেছে। কিন্তু সেই পাকা ধান আর খামারে তুলতে পারবেন কি না, তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সন্দেহ। কারণ, গত প্রায় দেড় সপ্তাহ ধরে নিয়মিত বুনো শুয়োরের দল হানা দিচ্ছে জঙ্গল লাগোয়া ওই গ্রামের আমন ধানের জমিতে। খেয়ে ও মাড়িয়ে বিঘার পর বিঘা জমির ফসল দফারফা করে দিচ্ছে ওই শুয়োরের দল।

এই পরিস্থিতিতে মরিয়া হয়ে রাতভর জমির আলে বসে ফসল পাহারা দিচ্ছেন গ্রামবাসীদের একাংশ। কিন্তু সরঞ্জামহীন চাষিদের পাহারার তোয়াক্কা না করেই বুনো শুয়োরের দল অন্ধকার নামলেই জঙ্গল ছেড়ে বেরিয়ে নেমে পড়ছে ফসলের জমিতে। বেনাজিরা গ্রামের কৃষক অশোক কুমার পাল বলেন, ‘‘বুনো শুয়োর খুব হিংস্র এবং আক্রমণাত্মক জেনেও নিজেদের ফসল বাঁচাতে রাতে জমির আলে বসে পাহারা দিতে হচ্ছে। যে কোনও দিন আমাদের জীবন যেতে পারে। বন দফতর কিছু ব্যবস্থা না করলে আর ফসল বাঁচানো সম্ভব নয়।’’

ওই গ্রামেরই আর এক চাষি নরেশচন্দ্র শিট বলেন, ‘‘জলসেচ করে আমন চাষ করায় চলতি বছর এমনিতেই খরচ বেড়েছিল। ধানের ফলন ভালই হয়েছিল। কিন্তু পাকা ধানে মই দিয়েছে বুনো শুয়োরের দল। জমি থেকে এখন ফসল খামারে নিয়ে যেতে পারব কি না, সন্দেহ রয়েছে।’’

বাঁকুড়ার বিট অফিসার সোমনাথ শী বলেন, “পার্শ্ববর্তী জঙ্গলে দু’শো-তিনশো বুনো শুয়োর রয়েছে। ফসলের ক্ষেতে হামলার খবর পাওয়ার পরই ওই এলাকায় বনকর্মীদের নজরদারি বৃদ্ধি করেছি। ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের বন দফতরে আবেদন জানানোর কথা বলা হয়েছে। আবেদন পেলে ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE