Advertisement
E-Paper

‘অসুস্থ’ বলে পুলিশের ডাকে যাননি, কিন্তু দুপুর থেকে পার্টি অফিসেই কাটালেন অনুব্রত! রবিবার কি দেবেন হাজিরা?

এসডিপিও অফিসে না-গেলেও শনিবার দুপুর থেকেই বোলপুরের দলীয় পার্টি অফিসে সময় কাটান অনুব্রত মণ্ডল। রোজকার মতোই বোলপুরের দলীয় কার্যালয়ে আসেন তিনি। সন্ধ্যার পর বাড়ি ফেরেন।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০২৫ ২২:৫৫
Will Anubrata Mondal appear at the SDPO office on Sunday

অনুব্রত মণ্ডল। —ফাইল চিত্র।

বীরভূম তো বটেই, রাজ্য রাজনীতিতেও এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে অনুব্রত মণ্ডল। তাঁর ‘কুকথা’ই চর্চার বিষয়। শুধু তা-ই নয়, রবিবার এসডিপিও অফিসে হাজিরা দেবেন কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন ঘুরছে। শনিবারও সেই একই প্রশ্ন ছিল। তবে তিনি যাননি পুলিশের ডাকে। তাঁর বদলে আইনজীবীরা এসডিপিও অফিসে যান। তাঁদের দিয়েই অনুব্রত পুলিশকে খবর পাঠান, অসুস্থতার কারণে হাজিরা দিতে অপারগ তিনি। সময় চান পুলিশের কাছে। পুলিশ সময় দেয়। কিন্তু এক দিন। আবার রবিবার অনুব্রতকে তলব করেছে পুলিশ।

এসডিপিও অফিসে না-গেলেও দুপুর থেকেই পার্টি অফিসে সময় কাটান অনুব্রত। রোজকার মতোই বোলপুরের দলীয় কার্যালয়ে আসেন তিনি। তাঁকে ঘিরে থাকেন অনুগামীরাও। সেখানে বাইরের কারও প্রবেশ ‘নিষেধ’ ছিল। অনেকেই এসেছিলেন, দেখা করেছেন অনুব্রতের সঙ্গে। এমনকি, জেলা তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের কয়েক জনের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন বলে খবর। তবে সেই বৈঠকের আলোচ্য বিষয় নিয়ে কেউই প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি।

যেখান থেকে শুরু

অনুব্রতকে নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত একটি অডিয়ো ক্লিপকে কেন্দ্র করে। মঙ্গলবার রাতের অডিয়ো ক্লিপ হলেও বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে বৃহস্পতিবার। রাতেই বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়। যে অডিয়ো ক্লিপটি ভাইরাল হয়েছে, তাতে এক জনকে ‘অনুব্রত মণ্ডল’ নাম নিয়ে বোলপুরের আইসিকে হুমকি দিতে শোনা গিয়েছে। সেই অডিয়ো ক্লিপে বলা হয়েছে, ডেপুটেশন দিতে গিয়ে থানা থেকে বার করে আইসিকে পেটানো হবে। শুধু তা-ই নয়, বোলপুর থানার আইসির মা এবং স্ত্রীর উদ্দেশে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ শোনা গিয়েছে। পরে অনুব্রত মেনে নেন, ওই কণ্ঠস্বর তাঁরই।

কঠোর পুলিশ-প্রশাসন

পুলিশকে হুমকি দেওয়ার নজির অনুব্রতর কম নেই। কখনও পুলিশকে ‘খেলা হবে’ হুমকি দিয়েছেন, আবার কখনও পুলিশকে লক্ষ্য করেই বোমা মারার নিদান শুনিয়েছেন। কিন্তু তখন পুলিশ বা প্রশাসনকে সে ভাবে তাঁর প্রতি কঠোর হতে দেখা যায়নি। তৃণমূলের অন্দরেই হয়তো সতর্ক করা হয়েছে তাঁকে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিষয়গুলি সংবাদমাধ্যমের গোচরে আসেনি। যদিও বৃহস্পতিবারের ভাইরাল অডিয়ো ক্লিপ নিয়ে কঠোর হয় দল, পুলিশ ও প্রশাসন। বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে অনুব্রতের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তার মধ্যে জামিন অযোগ্য ধারাও। সেই তদন্তের স্বার্থেই শনিবার এসডিপিও অফিসে অনুব্রতকে তলব করা হয়।

অনুপস্থিত

পুলিশের নির্দেশ ছিল শনিবার বেলা ১১টার মধ্যে বোলপুর এসডিপিও অফিসে হাজিরা দিতে হবে। কিন্তু নির্ধারিত সময় গড়িয়ে যাওয়ার পরেও হাজিরা দেননি বীরভূমের অনুব্রত। কেন তিনি আসছেন না, এর পরে পুলিশ কী করবে— এই সব প্রশ্ন যখন ঘুরপাক খাচ্ছে, তখন এসডিপিও অফিসে আসেন অনুব্রতের আইনজীবীরা। পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার এসডিপিও অফিসে হাজির হতে না-পারার কথা আইনজীবী মারফত জানান অনুব্রত। পুলিশের কাছে তিনি সময় চেয়েছেন। তা ছাড়া শারীরিক অসুস্থতার কথা বলেছেন। তাঁর আইনজীবীদের মধ্যে এক জন জানান, কেষ্ট অসুস্থ।

দ্বিতীয় নোটিস

শনিবার অনুব্রত এসডিপিও অফিসে যাননি। আইনজীবীর মারফত সময় চেয়ে পাঠালেও পুলিশ যে তাঁকে বেশি সময় দিতে রাজি নয়, তা বেলা গড়াতেই পরিষ্কার। রবিবার তাঁকে হাজিরা দিতে বলে দ্বিতীয় নোটিস পাঠিয়েছে পুলিশ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘রবিবার বেলা ১১টার সময় ওঁকে বোলপুরের এসডিপিও অফিসে হাজিরা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।’’

পার্টি অফিসে ‘অসুস্থ’ কেষ্ট

অসুস্থতার কারণে এসডিপিও অফিসে যাননি অনুব্রত। কিন্তু দুপুর পেরোতেই দেখা যায় তিনি বোলপুরের দলীয় কার্যালয়ে এসে বসেছেন। প্রায় রোজই তিনি আসেন। শনিবারও তার অন্যথা হয়নি। কয়েক ঘণ্টা ওই পার্টি অফিসে কাটিয়ে বাড়ি যান। সেই পার্টি অফিসে অনুব্রতের সঙ্গে দেখা করতে আসেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, বিকাশ রাযচৌধুরী, সুদীপ্ত ঘোষেরা। তৃণমূল সূত্রে খবর, চন্দ্রনাথদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন অনুব্রত। তবে বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তা জানা যায়নি। যদিও চন্দ্রনাথ কোনও বৈঠকের কথা অস্বীকার করেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘ওঁর (অনুব্রত) শরীর খারাপ, তাই দেখতে এসেছিলাম।’’ চন্দ্রনাথ এ-ও জানান, রবিবার অনুব্রত হাজিরা দেবেন। যদিও এই ব্যাপারে সংশয় রয়েছে নানা মহলে।

অনেকেরই প্রশ্ন, যদি অসুস্থতার কারণে এসডিপিও অফিসে অনুব্রত হাজিরা না দেন, তবে দুপুরে কী ভাবে কার্যালয়ে এলেন? তার পরেও পুলিশ কেন নিষ্ক্রিয়? রবিবার যদি আবার হাজিরা এড়ান, তবে কী করবে পুলিশ?

Anubrata Mondal TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy