Advertisement
E-Paper

সাঁইথিয়ায় অগ্নিদগ্ধ বধূর মৃত্যুতে প্ররোচনার মামলা

পুড়িয়ে মারা নয়, শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে পণের দাবিতে অত্যাচার করে মেয়েকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ আনল সাঁইথিয়ার অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত বধূর পরিবার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৬ ০১:১০
মেয়ের মৃত্যুর খবরে ভেঙে পড়েছেন বাবা-মা। ছবি: অনির্বাণ সেন।

মেয়ের মৃত্যুর খবরে ভেঙে পড়েছেন বাবা-মা। ছবি: অনির্বাণ সেন।

পুড়িয়ে মারা নয়, শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে পণের দাবিতে অত্যাচার করে মেয়েকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ আনল সাঁইথিয়ার অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত বধূর পরিবার।

শুক্রবার বিকালে টুম্পা চক্রবর্তী নামে বছর তিরিশের ওই বধূর অগ্নিদগ্ধ দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সে সময় লিখিত কোনও অভিযোগ না হলেও ওই বধূর উপর চরম অত্যাচার হতো— পড়শিদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েই টুম্পার স্বামী রাজেন চক্রবর্তী, শাশুড়ি কল্পনা চক্রবর্তী এবং ননদ পিউদেবীকে আটক করে পুলিশ।

শনিবার সকালে বধূর বাবা চণ্ডী চৌধুরী সাঁইথিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পরেই স্বামী ও শাশুড়িকে গ্রেফতার করে সিউড়ির এসিজেএম আদালতে হাজির করে পুলিশ। ধৃতদের ৩ নভেম্বর পর্যন্ত জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেন অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় বিচারক রিনা তালুকদার। সরকারি আইনজীবী বিকাশ পৈতণ্ডী জানান, বধূ নির্যাতন, আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া এবং পণের দাবিতে অত্যাচারের মতো ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। অভিযুক্তদের পক্ষে এ দিন কোনও আইনজীবী ছিলেন না। জামিনের আর্জিও নামঞ্জুর হযেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর আটেক আগে পেশায় গাড়ি চালক, সাঁইথিয়া রবীন্দ্রপল্লির বাসিন্দা রাজেনের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল বর্ধমানের টুম্পাদেবীর। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই স্ত্রীকে মারধর করতেন রাজেন। দু’টি কন্যাসন্তান হওয়ার পরেও সংসারে অশান্তি থামেনি। শুক্রবারও সকালে স্ত্রীকে মারধর করেন রাজেন। বিকাল সাড়ে ৩টে নাগাদ ওই বধূর চিৎকার শুনে পড়শিরা বাইরে এসে দেখেন, দাউদাউ করে জ্বলছেন ওই বধূ। একটু পরেই সব শেষ। তাঁদের মেয়ের উপর অত্যাচার চলত বলে অভিযোগ করছেন টুম্পাদেবীর বাপের বাড়ির লোকেরাও। থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও মেয়ের এমন পরিণতিতে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছেন চণ্ডীবাবু।

টুম্পাদেবীর মামাতো দাদা জয়ন্ত চৌধুরীর দাবি, ‘‘বিয়ের পর থেকে সেই যে অত্যাচার শুরু করেছিল বোনের স্বামী ও শাশুড়িরা, ওকে শেষ করে দেওয়া পর্যন্ত চলবে, তা ভাবিনি। অত্যাচারের মাত্রা এমন, মাস দুয়েক আগে মেরে বোনের হাত ভেঙে দিয়েছিল রাজেন। সেটা যাতে মামা জানতে না পারেন, তার জন্য বোনকে তো বটেই, পাঁচ-সাত বছরের ছোট ভাগ্নিগুলোকেও শাসিয়েছিল রাজেন।’’ সঙ্গে ছিল মাত্রাছাড়া পণের দাবি। জয়ন্তবাবুর আরও অভিযোগ, বোনের উপর অত্যাচার করে গাড়ি কেনার টাকা দাবি করতেন রাজেন। চণ্ডীবাবুর অর্থনৈতিক অবস্থা ভাল নয়। তাঁর স্ত্রীও অসুস্থ। ‘‘তার মধ্যেও হাজার পঞ্চাশেক টাকা জামাইকে দেয় মামা। সেটা নেশা করে উড়িয়ে ফের অত্যাচার শুরু করেছিল রাজেনরা। যার জেরেই বোনের এমন করুণ পরিণতি।’’—দাবি করছেন জয়ন্তবাবু।

Woman Burnt to death Provocation case filed
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy