Advertisement
E-Paper

গাছ থেকে ফেলে পিষে মারল হাতি

দিন তিনেক আগেই ঝাড়খণ্ড থেকে বান্দায়োনে ঢুকেছিল দু’টি শাবক-সহ তেরোটি হাতি। দলটি পরে বরাবাজার হয়ে চলে যায় আড়শা ব্লকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:১১
ভয়াল: বলরামপুরের পাড়দ্দা গ্রামের কাছে হাতির সেই দল। —নিজস্ব চিত্র

ভয়াল: বলরামপুরের পাড়দ্দা গ্রামের কাছে হাতির সেই দল। —নিজস্ব চিত্র

আগে বলরামপুরের এই এলাকায় হাতির দল এসেছে বলে প্রবীণেরাও মনে করতে পারছেন না। এক সঙ্গে তেরোটি হাতি এসে পড়ার খবর চাউর হতেই ভিড় ভেঙে পড়েছিল। অনেকেরই উৎসাহ মাত্রা ছাড়িয়েছে। চলে গিয়েছিলেন হাতির কাছাকাছি। এমন সময়ে একটি দাঁতাল খেপে উঠে তেড়ে আসে। বাকিরা পালিয়ে যেতে পারলেও পারেননি পাড়দ্দা গ্রামের যুবক ষষ্ঠী কালিন্দী (২৮)। ছোট একটি গাছে চেপেছিলেন। দাঁতাল এল। সজোরে ধাক্কা দিল গাছে। নীচে পড়লেন ষষ্ঠী। পায়ে পিষে দাঁতাল মেরে ফেলল যুবককে।

বুধবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে ঘটনাটি ঘটেছে পুরুলিয়ার বলারমপুর থানার পাড়দ্দা গ্রামের অদূরে একটি ছোট জঙ্গলে। ঘটনার পরে দেহ উদ্ধার করতেই ঘণ্টা দু’য়েক সময় লেগে যায় পুলিশ ও বন দফতরের কর্মীদের। পুরুলিয়ার বনদফতরের এক শীর্ষকর্তা বলেন, ‘‘হাতির দলটিকে সকাল থেকেই যথেচ্ছ উত্যক্ত করেছিলেন কিছু লোক। অতি উৎসাহী হয়ে ওই যুবক হাতির দলের খুব কাছে না গেলে হয়তো এই দুর্ঘটনা ঘটত না।”

দিন তিনেক আগেই ঝাড়খণ্ড থেকে বান্দায়োনে ঢুকেছিল দু’টি শাবক-সহ তেরোটি হাতি। দলটি পরে বরাবাজার হয়ে চলে যায় আড়শা ব্লকে। সেখান থেকে তাদের তাড়িয়ে অযোধ্যা পাহাড়ের জঙ্গলে নিয়ে গিয়েছিলেন বনকর্মীরা। এ দিন সেই দলটিই ফের অযোধ্যা থেকে বলরামপুর থানা এলাকায় ঢুকেছিল বলে জানাচ্ছে বন দফতর।

বন দফতর সূত্রের খবর, খুব ভোরে অযোধ্যা পাহাড়ের নীচে বলরামপুরের ঘাটবেড়া-কেরোয়া পঞ্চায়েত এলাকায় ঢোকে হাতির দলটি। তার পরে দশ-বারোটি গ্রাম পেরিয়ে পৌঁছে যায় বরাবাজার থানার সীমানায়, পাড়দ্দা গ্রামের অদূরে ছোট জঙ্গলে। বন দফতরের অভিযোগ, সকাল থেকেই জনতা হাতির দলটিকে পাথর ছুড়েছে। পটকা ফাটিয়ে অতিষ্ঠ করেছে। পাড়দ্দাতে লোকজন রীতিমতো সানাই আর ঢাক বাজিয়ে হাতিগুলিকে উত্যক্ত করেছে। বন দফতরের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, অযোধ্যা পাহাড় থেকে নেমে দশ-বারোটি গ্রাম পেরিয়ে এলেও হাতিগুলি রাস্তায় কোথাও কোনও ক্ষয়ক্ষতি করেনি। কিন্তু পাড়দ্দাতে লোকজন বেশি উত্যক্ত করায় দলের একটি দাঁতাল খেপে উঠেছিল।

দলটি যাতে লোকালয়ে ঢুকে ক্ষয়ক্ষতি না করতে পারে, সেই ব্যাপারে এ দিন সকাল থেকেই সর্তক ছিলেন বন দফতরের কর্মীরা। হাতিগুলিতে বিরক্ত না করার জন্য মাইক নিয়ে লাগাতার প্রচার চালিয়েছে পুলিশ। তা হলে কী ভাবে ষষ্ঠী-সহ আরো প্রচুর লোকজন হাতির দলের খুব কাছে পৌঁছে গেলেন? বন দফতর ও পুলিশের দাবি, এ দিন জনা পঞ্চাশ কর্মী ছিলেন। এ দিকে হাতি দেখতে হাজির হয়ছিল হাজারখানেক লোক। পঞ্চাশ জনের পক্ষে এক দিকে তেরোটি হাতি, অন্য দিকে অত লোক এক সঙ্গে সামলানো কার্যত অসাধ্য ছিল বলে দাবি করেছে বন দফতর।

বন দফতরের এক শীর্ষ কর্তা মঙ্গলবার বলেন, ‘‘হাতির হানায় মৃত যুবকের পরিবার যাতে সরকারি নিয়ম মেনে ক্ষতিপূরণ পায়, তা দেখা হচ্ছে।’’

Death Elephant Balarampur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy