জমির দখলের বিবাদের জেরে খুন হলেন এক যুবক। মুরারই থানার রুপরামপুর গ্রামের ঘটনা। পুলিশ জানায়, মৃত যুবকের নাম মান্নান সেখ (৩৭)। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ রুপরামপুর গ্রামে পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা মান্নান সেখকে লোহার রড এবং লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়। মারাত্মক জখম অবস্থায় মান্নান সেখকে মুরারই গ্রামীন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত বলে জানিয়ে দেন। পুলিশ খুনের অভিযোগে রুপরামপুর গ্রামের আসগার সেখ-সহ দশ জনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করেছে। রামপুরহাট এসডিপিও জোবি থমাস কে বলেন, ‘‘জমি সংক্রান্ত বিবাদের জেরে এক যুবক খুন হয়েছেন। ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জমি পাট্টা নিয়ে রবিউল সেখ এবং অন্যান্যরা চাষ করছিল। এ দিকে নিজেদের নামে ‘দলিল আছে’ দাবি সেই জমি নিয়ে আসগার সেখ ও কেতাবউদ্দিন সেখ দীর্ঘদিন ধরে রবিউলদের সঙ্গে বিরোধ বাধায়। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ মুরারই ১ ব্লকের বিএলআরও অফিসের একশ্রেণির অসাধু চক্রের জন্য এমন অনেক খাস জমি বিক্রি হয়েছে, যা পরবর্তীতে পাট্টাদারদের বিলি করা হয়েছে। যার জেরে মুরারই এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিবাদের জেরে মারামারি থেকে খুনখারাপি হচ্ছে। এমন জমি নিয়ে বিবাদ বেড়েই চলেছে ইদানিং।
মান্নান সেখের জ্যেঠতুতো দাদা রবিউল সেখ বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন থেকে আমরা পাট্টা পেয়ে গ্রামের পশ্চিম প্রান্তে ৪৫ শতক জমি চাষ করে আসছি। বৃহস্পতিবারও ওই জমিতে ট্রাক্টর দিয়ে চাষ করছিলাম। কিন্তু গ্রামের বাসিন্দা আসগার সেখের নেতৃত্বে তার দুই ছেলে আমাদের চাষের কাজে বাধা দিতে থাকে। দুপুরে ট্রাক্টর বন্ধ করে দেয় এবং ধানের বীজতলা নষ্ট করে দেয়। এই নিয়ে বিকালে মুরারই থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে জানতে পারি আসগার সেখের লোকজন রুপরামপুর গ্রামের মোড়ে ফলের দোকানে বুলবুল সেখ নামে আমার আর এক ভাই কে মারধর করে।’’
চাষের কাজে বাধা এবং ভাইকে মারধর করার জন্য দুটি অভিযোগ একসঙ্গে থানায় করেন তাঁরা। থানায় অভিযোগ করে পরস্পর নিজেদের বাড়িতে ঢুকে যাওয়ার পর রাতে সাড়ে দশটা নাগাদ বাড়ির সামনে আসগার সেখের দুই ছেলে সহ-অন্যান্যরা এসে গালিগালাজ করতে থাকে। রবিউল সেখের দাবি খুড়তুতো ভাই বাড়ি থেকে বেরিয়ে প্রতিবাদ করলে আসগার সেখের লোকজন মান্নানের উপর লোহার রড ও লাঠি নিয়ে চড়াও হয়। এতেই গুরুতর জখম হয়ে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে আসগার সেখের লোকজন তিনটে বোমা ফাটিয়ে চলে যায়। এরপর মান্নান সেখকে প্রথমে মুরারই থানায় পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু থানায় নিয়ে যাওয়ার পথেই মান্নান মারা যান।
এ দিন আসগার সেখের সঙ্গে ফোনে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy