Advertisement
E-Paper

‘কেবিসি’র কোটি ছুঁলেন আদ্রার গৌতম

যে প্রশ্নে তিনি আটকে গিয়েছিলেন, তা হল: মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী দক্ষিণ আফ্রিকার তিন শহর প্রিটোরিয়া, ডারবান ও জোহান‌েসবার্গে তিনটে ফুটবল দল গড়েছিলেন। তিনটে ক্লাবের নাম একই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:০৩
সফল: বাড়ি ফিরে স্ত্রীর সঙ্গে। বৃহস্পতিবার। ছবি: সঙ্গীত নাগ

সফল: বাড়ি ফিরে স্ত্রীর সঙ্গে। বৃহস্পতিবার। ছবি: সঙ্গীত নাগ

‘কওন বনেগা ক্রোড়পতি’র (কেবিসি) ‘হট সিট’-এ বসে পুরুলিয়ার আদ্রার রেলকর্মী গৌতমকুমার ঝা। কোটি টাকা জিতে ফেলেছেন। এ বার তাঁর সামনে সাত কোটি টাকা জেতার হাতছানি। কিন্তু অনুষ্ঠানের সঞ্চালক অমিতাভ বচ্চন যে প্রশ্নটা করেছিলেন, তার উত্তর জানা ছিল না। ‘লাইফ লাইন’ও শেষ। ষোলোতম প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে খেলা ছাড়েন গৌতম।

বুধবার ‘কওন বনেগা ক্রোড়পতি’র সেই সম্প্রচার দেখেছে জনতা। বৃহস্পতিবার বিকেলে মুম্বই থেকে আদ্রায় ফিরে গৌতম বলেন, ‘‘সাত কোটির জন্য আফশোস নেই। এক কোটি জিতেছি। সেই টাকায় মা-বাবাকে বাড়ি কিনে দেব। স্ত্রী শ্বেতার চাপেই কেবিসিতে গিয়েছিলাম। স্ত্রীর ইচ্ছাতেই বাকি টাকা দুঃস্থ পড়ুয়া এবং টাকার সমস্যায় বিয়ে আটকে যাওয়া গরিব মেয়েদের জন্য খরচ করব।’’

যে প্রশ্নে তিনি আটকে গিয়েছিলেন, তা হল: মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী দক্ষিণ আফ্রিকার তিন শহর প্রিটোরিয়া, ডারবান ও জোহান‌েসবার্গে তিনটে ফুটবল দল গড়েছিলেন। তিনটে ক্লাবের নাম একই। ‘বিগ বি’ ক্লাবের নাম জানতে চেয়েছিলেন। উত্তরটা ছিল ‘প্যাসিভ রেজ়িস্টার্স’।

তবে পনেরো নম্বর প্রশ্নের জবাব দিতে বেগ পাননি গৌতম। যা তাঁকে ক্রোড়পতির শিরোপা এনে দিয়েছে। প্রশ্নটি ছিল: আমেরিকান কবি ‘ফ্রান্সিস স্কট কি’ যে জাহাজে বসে কবিতা লিখেছিলেন (যা পরে আমেরিকার জাতীয় সঙ্গীত হয়) তার নাম কী? গৌতমের জবাব ছিল, ‘এইচ এম এস মিনডেন’।

বিহারের মধুবনির বাসিন্দা বছর তিরিশের গৌতম দক্ষিণ-পূর্ব রেলে যোগ দিয়েছেন বছর তিনেক। বর্তমানে তিনি আদ্রায় ওয়াগন রিপেয়ার শপে ‘সিনিয়র সেকশন ইঞ্জিনিয়ার পদে কর্মরত। বিহারে উচ্চ মাধ্যমিক পড়ে উত্তরাখণ্ড টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি থেকে বি টেক এবং ঝাড়খণ্ডের ইন্ডিয়ান স্কুল অফ মাইনস থেকে এম টেক করেছেন।

গোড়ায় তিনি একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে কাজ করেন। পরে যোগ দেন রেলে। স্ত্রীকে নিয়ে আদ্রার লোয়ার বেনিয়াসোলের এক ভাড়াবাড়িতে থাকেন। এখন ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

গৌতম জানান, ছোট থেকেই তাঁর স্ত্রী ‘কেবিসি’-র ভক্ত। আর তিনি ‘বিগ বি’-র ভক্ত। তাই নাম রেজিস্ট্রেশন করতে দ্বিধা করেননি। তারপরে নিয়ম মাফিক কিছু প্রশ্নের উত্তর দিয়ে পটনায় অডিশন দিয়ে সরাসরি পৌঁছে যান কেবিসি-র হট সিটে।

তাঁর অকপট স্বীকারোক্তি, ‘‘অমিতাভকে কাছ থেকে দেখার উত্তেজনা, তারপরে একের পর এক প্রশ্ন— সব মিলিয়ে গোড়ায় কিছুটা নার্ভাসই ছিলাম। পরে অমিতাভই সহজ, সরল ব্যবহার করে পরিস্থিতিটা আমার কাছে খোলামেলা ও সহজ

করে দেন।’’

তিনি জানান, চল্লিশ হাজার টাকা পর্যন্ত খেলতে কোনও সমস্যা হয়নি। কিন্তু এক লক্ষ থেকে তিন লক্ষ টাকা পর্যন্ত বেশ কিছু না জানা প্রশ্ন আসায় তিনটে ‘লাইফ লাইন’ নিতে হয়। তারপরে ফের তরতর করে এগিয়েছেন এক কোটি টাকার লক্ষ্যে।

স্বামীকে কেবিসি-তে পাঠালেও নিজে কেন যোগ দেননি?— শ্বেতার কাছে জানতে চেয়েছিলেন বিগ বি। এক গাল হেসে শ্বেতা বলেন, ‘‘আমি খেললে দশ-কুড়ি হাজারের বেশি কখনই জিততে পারতাম না।”

আদ্রার ডিআরএম নবীন কুমার বলেন, ‘‘পরিবারে কেউ সফল হলে যেমন অন্যদের খুশি ও গর্ব হয়, আমাদের সেই অনুভূতিটাই হচ্ছে।”

Goutam Kumar Jha Adr KBC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy