ছাত্র অন্দোলনের চাপে শেষমেশ পিছু হঠলেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। গত কয়েক দিন ধরে ক্লাস বয়কট, ঘেরাও ও ধর্নার জেরে সিউড়ি ১ ব্লকের তিলপাড়া পঞ্চায়েত এলাকার তসরকাঁটায় অবস্থিত ওই পলিটেকনিক কলেজে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছিল। পড়ুয়ারা দ্বারস্থ হন জেলাশাসকেরও। এই অবস্থায় রবিবার পুলিশের উপস্থিতি প্রশাসনের নজরদারিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং পড়ুয়াদের বৈঠকের পরে সমাধানসূত্র মিলেছে। ওই বৈঠকে কলেজ কর্তৃপক্ষ পড়ুয়াদের বেশ কিছু দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়ার পরেই জটিলতা কাটে।
প্রসঙ্গত, কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁদের উপর মানসিক নির্যাতন চালাচ্ছেন এবং ফাইনের নামে অতিরিক্ত টাকা চাইছেন, এই অভিযোগ তুলে শুক্রবারই জেলাশাসকের দ্বারস্থ হন ওই বেসরকারি পলিটেকনিক কলেজ পুড়ুয়ারা। মূলত কলেজের প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের শ’দেড়েক ছাত্রছাত্রী আন্দোলনে সামিল হন। জেলাশাসকের কার্যালয় চত্বরে পড়ুয়ারা বেশ কিছুক্ষণ অবস্থানে বসেন। এ বিষয়ে জেলাশাসকের হস্তক্ষেপ চেয়ে তাঁরা একটি আবেদনপত্রও জমা দেন। সে দিন কলেজে ফিরে গিয়েও নিজেদের অবস্থান থেকে আন্দোলনরত পড়ুয়ারা সরে যাননি তাঁরা। শনিবারও দিনভর তাঁরা কলেজের অধ্যক্ষ সৌগত চট্টোপাধ্যায়কে ঘেরাও করে রাখেন। পড়ুয়াদের অভিযোগ, ভর্তির সময় এমন শর্ত না থাকলেও কারণে-অকারণে নানা অজুহাতে মোটা অঙ্কের জরিমানা করে থাকেন কর্তৃপক্ষ। এমনকী, কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পড়ুয়াদের উপর মানসিক চাপ তৈরি করা এবং তাঁদের অভিভাবকদের সঙ্গেও ঠিক ভাবে ব্যবহার না করার অভিযোগও তাঁরা তুলেছেন। আন্দোলনরত এক ছাত্রের দাবি, “৬০ শতাংশের নীচে হাজিরা থাকলেই কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁদের কাছ থেকে দু’হাজার টাকা করে জরিমানা চাইছেন। শুধু এই ক্ষেত্রেই নয়, নানা কৌশলে পড়ুয়াদের কাছ থেকে জরিমানা চাপিয়ে দেওয়ার রেওয়াজ কলেজ কর্তৃপক্ষ চালিয়েই যাচ্ছেন।”
কলেজ সূত্রের খবর, জেলাশাসক পি মোহন গাঁধীর নির্দেশে জেলা প্রশাসনের কর্তারা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। রবিবার সকালে কলেজে পৌঁছেছিল পুলিশও। তার পরেই কলেজের অচলাবস্থা কাটাতে ছাত্রছাত্রীদের কিছু দাবি মেনে নেন কর্তৃপক্ষ। আপাতত মুকুব করে দেওয়া হয়েছে জরিমানার দু’হাজার টাকাও। কলেজের ট্রাস্টি অমিত ভট্টাচার্য বলেন, ““ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যত্ নিয়ে আমরা কোনও আপসে যাব না। তাই তাঁদের কিছু দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে।” তাঁর যুক্তি, “আসলে জরিমানা করা হয়েছিল, যাতে কলেজে অনুশাসন বজায় থাকে। পড়ুয়ারা নিয়মিত ক্লাস করলে এই সমস্যাটা হয় না।”