Advertisement
E-Paper

আট ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন, ধৃত অভিযুক্ত

যার হাতে মেয়েদের স্কুলে নিয়ে আসা-যাওয়ার দায়িত্ব ছেড়ে নিশ্চিন্ত ছিলেন বাবা-মায়েরা, সেই ভাড়া গাড়ি চালকের বিরুদ্ধেই ছাত্রীদের যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠল। নির্যাতনে জখম হয়েছে আট ছাত্রী। সকলেরই বয়স পাঁচ বছরের মধ্যে। তাদের মধ্যে এক জনের আঘাত বেশি হওয়ায় বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতাল সূত্রের খবর, ওই ছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষা করে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:৪০

যার হাতে মেয়েদের স্কুলে নিয়ে আসা-যাওয়ার দায়িত্ব ছেড়ে নিশ্চিন্ত ছিলেন বাবা-মায়েরা, সেই ভাড়া গাড়ি চালকের বিরুদ্ধেই ছাত্রীদের যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠল। নির্যাতনে জখম হয়েছে আট ছাত্রী। সকলেরই বয়স পাঁচ বছরের মধ্যে। তাদের মধ্যে এক জনের আঘাত বেশি হওয়ায় বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতাল সূত্রের খবর, ওই ছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষা করে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।

বাঁকুড়ার শালতোড়া থানা এলাকার ঘটনা। পুলিশ অভিযুক্ত গাড়ি চালক রাজা কাঞ্জিলালকে গ্রেফতার করেছে। ধৃত যুবক শালতোড়ার খিরপুরা গ্রামের বাসিন্দা। তার বিরুদ্ধে থানায় ধর্ষণের অভিযোগ হয়েছে। পুলিশের দাবি, জেরার মুখে সে অপকর্মের কথা কবুল করেছে। আজ, বৃহস্পতিবার আদালতে ওই নির্যাতিতা শিশুটির গোপন জবানবন্দি নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলার পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার।

নির্যাতিত ছাত্রীরা পুরুলিয়ার নিতুড়িয়া থানা এলাকার মধুকুণ্ডায় একটি স্কুলের প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির পড়ুয়া। ধৃত গাড়ি চালক প্রায় এক বছর ধরে ওই আট ছাত্রী এবং ওই স্কুলেরই প্রথম শ্রেণির দুই ছাত্রকে গ্রাম থেকে স্কুলে নিয়ে আসা, নিয়ে যাওয়ার কাজ করছে। মঙ্গলবার ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে স্কুলেরই মাঠে একটি পিকনিকের আয়োজন করেছিলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। শালতোড়ার এই দশ জন ছাত্রছাত্রীও সেখানে গিয়েছিল। দুপুরে পিকনিক সেরে ফেরার পথেই রাজাছাত্রীদের যৌন নির্যাতন করে বলে অভিযোগ। ওই ছাত্রীরা জানিয়েছে, দুপুর দু’টোর পরে পিকনিক সেরে তারা রাজার গাড়িতে বাড়ির দিকে রওনা দেয়। দুই ছাত্র চালকের পাশের সিটে বসেছিল। ছাত্রীরা ছিল পিছনে। মাঝ রাস্তায় ছাত্রীদের প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দেওয়ার জন্য রাজা গাড়ি থামায়। অভিযোগ, জঙ্গল সংলগ্ন সুনসান এলাকায় গাড়িটি থামে। গাড়ির ভিতর দুই ছাত্রকে বসিয়ে রেখে দরজা লক করে দেয় রাজা। ছাত্রীদের জঙ্গলের ভিতরে নিয়ে যায়। সেখানেই ওই শিশুকন্যাদের যৌন নির্যাতন করা হয়। বাধা দিতে গেলে রাজা তাদের মারধর করার পাশাপাশি বাড়িতে জানালে প্রাণে মারার হুমকিও দেয় বলে অভিযোগ নিগৃহীত ছাত্রীদের। এক সময় ছাত্রীরা কান্নাকাটি শুরু করলে তাদের গাড়িতে চাপিয়ে গ্রামে পৌঁছে দেয় ওই যুবক।

অভিভাবকেরা জানাচ্ছেন, স্কুল থেকে গ্রামে আসতে ২৫ মিনিটের বেশি লাগে না। অথচ এ দিন দু’টো সময় স্কুল থেকে রওনা দিয়ে পৌনে চারটায় গ্রামে পৌঁছয় ছাত্রছাত্রীরা। বাড়ি ঢুকে অনেক ছাত্রী ঘুমিয়ে পড়েছিল। তাদের চোখমুখ দেখে ও তারা শৌচাগারে যেতে কিছুতেই রাজি না হওয়ায় সন্দেহ হয় অভিভাবকদের। ধীরে ধীরে ওই ছাত্রীরা মঙ্গলবারের ঘটনার কথা অভিভাবকদের কাছে খুলে বলে। রাতেই অভিভাবকেরা পরস্পরকে ঘটনার কথা জানান। ঠিক হয়, পরদিন স্কুলের গাড়ি এলেই গ্রামবাসীরা রাজাকে আটকে রাখবেন। সেই মতো বুধবার সকালে পড়ুয়াদের নিতে গ্রামে গাড়ি নিয়ে আসে রাজা। অভিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে ঘেরাও করে রাখেন। তাঁদের দাবি, জেরার মুখে পড়ে রাজা দোষ স্বীকার করে। তার সেই বয়ান মোবাইলে ভিডিও রেকর্ডিং করে রাখা হয়।

ইতিমধ্যে ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ আসে। রাজার কড়া শাস্তির দাবিতে পুলিশের কাছে একটি আবেদনপত্র জমা করা হয়। মধুকুন্ডা-শালতোড়া রাস্তাও কিছুক্ষণের জন্য অবরোধ করেন ক্ষুব্ধ অভিভাবক ও স্থানীয়রা। বিকেলে রাজার বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ হয়। ধৃত গাড়ি চালকের দাবি, “আমি মদ্যপ অবস্থায় ছিলাম। অন্যায় করে ফেলেছি। ক্ষমা চাইছি।”

এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে মধুকুণ্ডার ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুরেন্দ্র সিংহ বলেন, “ভাবতেই পারছি না শিশুদের উপরে এই ধরনের অত্যাচার হয়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখে কড়া ব্যবস্থা নিক পুলিশ।”

saltora sexual assault
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy