Advertisement
E-Paper

এ বার বোমা-গুলি নিয়ে হামলার নালিশ পাত্রসায়রে

এত দিন লাঠিসোটা নিয়ে হামলা, পাল্টা হামলা বা পার্টি অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ উঠছিল। এ বার পাত্রসায়রে ব্লক তৃণমূল সভাপতির অনুগামী এক পঞ্চায়েত প্রধান ও পঞ্চায়েত সদস্যকে লক্ষ করে বোমা ও গুলি চালানোর অভিযোগ উঠল। অভিযোগের তির যথারীতি ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর দিকে। সব মিলিয়ে যত দিন যাচ্ছে, ততই শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ঘোরালো আকার নিচ্ছে বাঁকুড়ার এই অঞ্চলে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৪ ০২:১৩

এত দিন লাঠিসোটা নিয়ে হামলা, পাল্টা হামলা বা পার্টি অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ উঠছিল। এ বার পাত্রসায়রে ব্লক তৃণমূল সভাপতির অনুগামী এক পঞ্চায়েত প্রধান ও পঞ্চায়েত সদস্যকে লক্ষ করে বোমা ও গুলি চালানোর অভিযোগ উঠল। অভিযোগের তির যথারীতি ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর দিকে।

সব মিলিয়ে যত দিন যাচ্ছে, ততই শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ঘোরালো আকার নিচ্ছে বাঁকুড়ার এই অঞ্চলে। মঙ্গলবার সকালে পাত্রসায়রে দলের একটি বৈঠকে যোগ দিতে আসার পথে মৌকুচি মোড়ের কাছে, পাত্রসায়র-বিষ্ণুপুর রাস্তায় তৃণমূল পরিচালিত বালসি ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বুদ্ধদেব পাল ও পঞ্চায়েত সদস্য শেখ মিরাজকে লক্ষ করে বোমা-গুলি ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। যদিও বোমা বা গুলি কারও গায়েই লাগেনি। ওই দুই দলীয় নেতা ব্লক তৃণমূল সভাপতি স্নেহেশ মুখোপাধ্যায়ের অনুগামী হিসাবেই পরিচিত। পুলিশের কাছে পাত্রসায়র ব্লক তৃণমূল নেতা নব পালের খুড়তুতো ভাই বাপি পাল, বালসি ১ পঞ্চায়েতের ভিলেজ পুলিশকর্মী অনুপ মহন্ত-সহ ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন বুদ্ধদেববাবুরা। অভিযোগ ‘মিথ্যা’ ও ‘সাজানো’ বলে দাবি করেছেন স্থানীয় রাজনীতিতে স্নেহেশবাবুর ‘মূল প্রতিপক্ষ’ নব পাল। আগের অনেক অভিযোগের মতোই এ ক্ষেত্রেও পুলিশ কাউকে ধরতে পারেনি।

গত কয়েক মাস ধরেই পাত্রসায়রে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তুঙ্গে উঠেছে। কিন্তু, লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে তা মারাত্মক আকার নিয়েছে। প্রায় দিনই দলের এক গোষ্ঠী আর এক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করছে। বামিরা গ্রামে তৃণমূল নেতা নব পালের গোষ্ঠীর পার্টি অফিসে একাধিকবার হামলা হয়েছে। অন্য দিকে, বালসি ও ধগড়িয়া গ্রামে স্নেহেশ মুখোপাধ্যায়ের গোষ্ঠীর কার্যালয়ে গত বৃহস্পতিবার তাণ্ডব চালিয়েছে এক দল লোক। দু’পক্ষই পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে। স্নেহেশবাবুর অভিযোগ, “এ দিন সকালে দলের একটি বৈঠক ডেকেছিলাম। তাতে যোগ দিতে আসার পথে বুদ্ধদেব পাল, শেখ মিরাজের উপরে হামলার চেষ্টা করে দুষ্কতীরা। এলাকায় অশান্তি তৈরির জন্যই এ সব করছে ওরা।” বালসি ২ পঞ্চায়েতের প্রধান বুদ্ধদেববাবুর অভিযোগ, “আমি মোটরবাইক চালাচ্ছিলাম। পিছনে মিরাজ-সহ আরও দু’জন ছিল। মৌকুচি মোড়ের কাছে রাস্তার পাশ থেকে নব পালের খুড়তুতো ভাই বাপি পাল আমাদের লক্ষ করে বোমা ছোড়ে। অনুপ মহন্ত ওয়ান শটার থেকে এক রাউন্ড গুলি চালায়।” তাঁর দাবি, বোমা একটু দূরে পড়ায় এবং গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় অল্পের জন্য তাঁরা প্রাণে বেঁচেছেন।

সব অভিযোগই অস্বীকার করে নব পাল দাবি করেন, “ওই রাস্তা দিয়ে ওদের সবাই নির্বিঘ্নে যাতায়াত করেছে। বুদ্ধ, মিরাজকে লক্ষ করে কেউ বোমা ছোড়েনি। গুলিও চালায়নি। তবু প্রচারের লোভেই বাপি-সহ কয়েক জনের নামে ওরা মিথ্যা অভিযোগ করেছে। পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করলেই সব প্রমাণ হয়ে যাবে।” নববাবুর আরও অভিযোগ, সব এলাকায় আগে স্নেহেশবাবুর গোষ্ঠীর লোকজনই গণ্ডগোল পাকাচ্ছে। সোমবার রাত থেকে এ দিন সকাল পর্যন্ত বামিরা গ্রামে বোমাবাজি করেছে ওই গোষ্ঠীর আশ্রিত দুষ্কৃতীরা।

শাসক দলের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে পরপর অভিযোগ থানায় হওয়ার পরেও কেউ ধরা না পড়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। শেষ পর্যন্ত পুলিশ কিছুটা হলেও নড়ে বসেছে। তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের ঘটনায় মঙ্গলবার ভোরেই বালসি ২ অঞ্চল তৃণমূল নেতা শিবু মিদ্যা-সহ দলের যুযুধান দুই গোষ্ঠীর মোট ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “আগের কয়েকটি হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ওই ৬ জনকে ধরা হয়েছে। বোমা-গুলির অভিযোগেরও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”

patrasayar bomb attack
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy