নতমস্তকে। নির্বাচনী জনসভায় তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে সৌমিত্র। ফাইল চিত্র।
বিধায়ক থেকে সাংসদ হয়ে এ বার যুব তৃণমূলের সভাপতি! সৌমিত্র খাঁ-এর উত্থানটা যেন রকেটগতির।
অথচ মাস তিনেক আগেও ছিলেন বাঁকুড়ার কোতুলপুরের কংগ্রেস বিধায়ক। বিধায়ক থেকে ইস্তফা দিয়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরেই প্রথম চমক ছিল বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রে শাসক দলের প্রার্থিপদ পাওয়া। সিপিএমের দু’বারের সাংসদ সুস্মিতা বাউরিকে বিপুল ভোটে হারিয়ে দেওয়া ছিল দ্বিতীয় চমক। আর দিল্লিতে গিয়ে সাংসদ হিসেবে শপথ গ্রহণের আগেই তৃতীয় চমক শুভেন্দু অধিকারীকে সরিয়ে যুব তৃণমূলের সভাপতি হওয়া। শুক্রবার যুব তৃণমূলের সভাপতি হওয়ার পরে সৌমিত্রর সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, “দলনেত্রীর নির্দেশ মেনেই কাজ করব আমি। সংগঠনকে আরও মজবুত করার চেষ্টা চালাব।”
সৌমিত্র খাঁ-এর বাড়ি মেজিয়ার দুর্লভপুরে। বছর তেত্রিশের যুবকের রাজনীতির জীবন শুরু পাঁচমুড়া কলেজে ছাত্র পরিষদের হাত ধরে। বাবা ধনঞ্জয় খাঁ মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের আইএনটিইউসি-র নেতৃত্বে ছিলেন। মাঝপথে কলেজ ছেড়ে বাড়ি ফিরে কিছুদিন ঠিকাদারির পরে ফের রাজনীতি। এবং সোজা বাঁকুড়া জেলা যুব কংগ্রেসের সভাপতি হন সৌমিত্র। গত বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস-তৃণমূল জোটের প্রার্থী হয়ে কোতুলপুর থেকে জেতেন। তার পরে আর ফিরে তাকাতে হয়নি সৌমিত্রকে। কংগ্রেসের সঙ্গে জোট ভাঙতেই তৃণমূল নেত্রীর ডাক এল। তাতে সাড়া দিয়ে লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলে যোগ। তারই পুরস্কার স্বরূপ বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের টিকিট।
দলের একাংশ এই ঘটনায় চটলেও প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাননি কেউ। সৌমিত্রর হয়ে ভোটের প্রচারে তৃণমূলের অনেক নেতাকে সে-ভাবে দেখাও যায়নি। কিন্তু, সৌমিত্র নিজে লোকসভা কেন্দ্র চষে বেরিয়েছেন। আর শেষে প্রায় দেড় লক্ষ ভোটে সিপিএমকে হারিয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের আস্থাভাজন হয়েছেন এই যুবনেতা। এ দিন যুব সভাপতি হিসাবে তাঁর নাম ঘোষণা হওয়ার পরে বাঁকুড়া জেলা তৃণমূলের বড় অংশই খুশি।
এ দিন কলকাতায় দলের মিটিং থেকে বেরিয়ে তৃণমূলের বাঁকুড়া জেলা যুব সভাপতি শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সৌমিত্র খাঁ আমাদের জেলার মানুষ। জেলার সমস্যাগুলি তিনি ভালই বোঝেন। আশা করি, তাঁর নেতৃত্বে সংগঠনকে ভালোভাবেই এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব আমরা।” তৃণমূলের বিষ্ণুপুর শহর যুব সভাপতি দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “লোকসভা ভোটে তাঁর হয়ে খেটেছি। আজ যখন সংবাদমাধ্যমে প্রথম জানতে পারলাম, আমাদের সংগঠনের দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি, উচ্ছ্বাস ধরে রাখতে পারিনি। কর্মীদের নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েছি।” জয়পুরের তৃণমূল নেতা স্বপন কোলে বলেন, “দীর্ঘদিন সৌমিত্রকে দেখছি। ওর সাংগঠনিক দক্ষতা বেশ ভাল। ও নিশ্চ। এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলাতে পারবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy