জামাইকে কীটনাশক খাইয়ে খুনের অভিযোগ উঠল শ্বশুর, শাশুড়ি-সহ চার জনের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি রামপুরহাট থানার পানিশাইল গ্রামে। পুলিশ জানায় মৃত যুবকের নাম গাজল শেখ (১৯)। এ দিকে, মৃতের দাদা সফিকুল শেখ অভিযোগ করেন, “এ দিন সকালে রামপুরহাট হাসপাতালে ভাই মারা যাওয়ার পরে থানায় গেলে পুলিশ অভিযোগ নেয়নি। আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পরে রামপুরহাট হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পরে মৃতদেহ গাড়িতে চাপিয়ে থানায় নিয়ে আসি। তার পরে পুলিশ অভিযোগ নেয়।”
রামপুরহাট থানার আইসি হিরণ্ময় হোড় অবশ্য দাবি করেন, “মৃতের পরিবারের লোকজন হাসপাতালের কাগজপত্র ছাড়াই অভিযোগ জানাতে এসেছিলেন। তখন তাঁদের হাসপাতালের কাগজপত্র এনে অভিযোগ জানাতে বলা হয়েছিল। সেই মতো পরে কাগজপত্র এনে পুলিশকে দেখালে অভিযোগ নেওয়া হয়। পুলিশ কথা শোনেনি বা খারাপ ব্যবহার করে ফিরিয়ে দিয়েছে, সেই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।”
মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, চার মাস আগে গাজল শেখের সঙ্গে রামপুরহাট থানার দাদপুর গ্রামের বাসিন্দা আকাল মোল্লার মেয়ে রুনা বিবির বিয়ে হয়। মৃতের দাদা সফিকুলের দাবি, “বিয়ের পর বৌমা আমাদের বাড়ি পানিশাইল গ্রামে এক মাস ছিল। পরে নানা ভাবে মানসিক চাপ দিয়ে ভাইকে মাস তিনেক সে বাপেরবাড়িতে থাকতে বাধ্য করে। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন ভাবে চাপ দিয়ে ভাইয়ের নামে থাকা জমি ও অন্য সম্পত্তি ক্রমাগত বিক্রি করার জন্য বলছিল। স্ত্রী ও শ্বশুর, শাশুড়ির কথা না শোনার জন্য ভাইয়ের উপর নানা রকম অত্যাচার করতেন ওঁরা। ১৯ জুলাই সকালে কীটনাশক খাইয়ে ওঁরা ভাইকে ঘর থেকে বের করে দেয়।” তিনি জানান, গ্রামের কয়েক জন বাসিন্দা তাঁর ভাইকে রামপুরহাট হাসপাতালে ভর্তি করেন। সফিকুলের অভিযোগ, “বুধবার সকালে ভাই মারা যাওয়ার পরেও বৌমা বা শ্বশুরবাড়ির লোকেদের কোনও পাত্তা পাওয়া যায়নি। প্রথমে অভিযোগ জানাতে গিয়ে দেখি থানায় এলাকার তৃণমূল নেতা আকবর আলি বসে আছেন। তিনিই পুলিশকে প্রথম দিকে অভিযোগ নিতে মানা করেছেন। পরে চাপে পড়ে অভিযোগ নিতে বাধ্য হয় পুলিশ।”
রামপুরহাট থানার দাদপুর গ্রামের বাসিন্দা আকবর আলি আয়াষ পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য। তিনি অবশ্য দাবি করেছেন, “ওই যুবক নিজেই কীটনাশক খেয়েছেন। সেই ঘটনাকে কীটনাশক খাইয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ করা হচ্ছে। পারিবারিক বিষয়। থানায় মিথ্যা অভিযোগ না করে গ্রামে বসে ব্যাপারটা মিটিয়ে ফেলার পরামর্শ দিয়েছিলাম। এতে আমার কী আছে, যে পুলিশকে অভিযোগ নিতে মানা করব? পুলিশ বা আমার কথা শুনবে কেন?” সফিকুল শেখ অবশ্য লিখিত অভিযোগে ওই তৃণমূল নেতার নাম উল্লেখ করেননি। আইসি হিরণ্ময় হোড় বলেন, “কে আকবর আলি। তিনি কী বলছেন আর কী বলছে না পুলিশ শুনতে যাবে কেন?” পুলিশ জানায়, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত কী কারণে ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে তা বলা সম্ভব নয়। অভিযুক্তরা এখনও পলাতক। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy