Advertisement
E-Paper

খয়রাশোলে তৃণমূলের কার্যালয়ে হামলা

নিহত তৃণমূল নেতা অশোক ঘোষের খয়রাশোলের পার্টি অফিসে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল। শুক্রবার সকালের ওই ঘটনায় ফের খয়রাশোলে তৃণমূলের গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বের কথাই উঠে এল। প্রায় জনা পঞ্চাশেক দুষ্কৃতী কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে আসবাবপত্র ভাঙচুর করেন। মারধর করা হয় উপস্থিত নেতা-কর্মীদেরও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:০৭
ভাঙচুরের পরে তদন্তে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।

ভাঙচুরের পরে তদন্তে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।

নিহত তৃণমূল নেতা অশোক ঘোষের খয়রাশোলের পার্টি অফিসে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল। শুক্রবার সকালের ওই ঘটনায় ফের খয়রাশোলে তৃণমূলের গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বের কথাই উঠে এল। প্রায় জনা পঞ্চাশেক দুষ্কৃতী কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে আসবাবপত্র ভাঙচুর করেন। মারধর করা হয় উপস্থিত নেতা-কর্মীদেরও। কার্যালয়ের বাইরে দাঁড় করানো বেশ কয়েকটি মোটর-বাইক ভাঙচুর করে বিনা বাধায় হামলাকারীরা চম্পটও দিল। আর যে যাঁর মতো পালিয়ে বাঁচলেন হতচকিত নেতা-কর্মীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছল পুলিশ। কিন্তু এত কিছুর পরেও তৃণমূল নেতারা রাত অবধি পুলিশের কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি। বিরোধীদের অবশ্য দাবি, দলের গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বের বিষয়টি ধাপাচাপা দিতেই এমন সিদ্ধান্ত। ঘটনার পরে মুখে কুলুপ এঁটেছেন জেলা তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব।

দল ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে একটি বৈঠকে যোগ দিতে অশোক ঘোষ প্রতিষ্ঠিত ওই কার্যালয়ে জড়ো হয়েছিলেন খয়রাশোল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সহ-সভাপতি, বেশ কয়েক জন কর্মাধ্যক্ষ, প্রধান ও স্থানীয় তৃণমূল নেতা কাঞ্চন দে। আলোচনা শুরুর আগেই হঠাৎ-ই লাঠিসোটা হাতে হামলা চালায় জনা পঞ্চাশেক দুষ্কৃতী বলে অভিযোগ। দুষ্কৃতীরা ভেতরে ঢুকে জিনিসপত্র উল্টে চেয়ার, টেবিল ভেঙে দেয়। সামনে হাজির নেতা-কর্মীদের দিকেও তেড়ে যায়। কাঞ্চনবাবুকেও মারধর করা হয় বলে তৃণমূলের একটি সূত্রের খবর। কিন্তু পরে হামলা চালানোর কারণ বা পক্ষ নিয়ে কেউ মুখ খুলতে রাজি হননি কেউ-ই। তবে, হামলার কথা স্বীকার করে খয়রাশোল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অসীমা ধীবর বলেন, “আমার গায়ে হাত পড়েনি। আমি যেতে না যেতেই ঘটনাটি ঘটে। কিছু বোঝার আগেই হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।” থানায় অভিযোগ করলেন না কেন? সতর্ক সভাপতির প্রতিক্রিয়া, “দলের সিদ্ধান্তই আমার সিদ্ধান্ত। দল যদি অভিযোগ করে, তা হলে আমার সমর্থন থাকবে।”

প্রায় একই প্রতিক্রিয়া দিয়ে পাশ কাটাতে চেয়েছেন খয়রাশোল পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি আবরার হোসেনও। আবার মার খেয়েও এ প্রসঙ্গে বেশি কথা বলতে রাজি হননি কাঞ্চনবাবুও। তিনি শুধু বলেন, “কী হয়েছে সবাই জানেন। তারপরেও তাঁরা যদি অভিযোগ না করেন, কী বলব!” কাঞ্চনবাবুর দাবি হামলাকারীদের দেখে বহিরাগত বলেই মনে হয়েছে। তাই কাঞ্চনবাবু বলছেন, “হামলার পিছনে কে বা কারা রয়েছে, এ কথা বলা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।”

প্রকাশ্যে কিছু না বললেও এ দিনের হামলা দলেরই অন্য গোষ্ঠীর কাজ বলে অভিযোগ করছেন এলাকার নিচুতলার তৃণমূল কর্মীরা। সে ক্ষেত্রে অভিযোগের তির দিন কয়েক আগে দুষ্কৃতীদের গুলিতে নিহত তৃণমূল নেতা অশোক মুখোপাধ্যায়ের গোষ্ঠীর দিকেই। খয়রাশোলে অশোক মুখোপাধ্যায় এবং অশোক ঘোষ (যিনি গত বছর অগস্টে একই ভাবে খুন হয়েছিলেন) গোষ্ঠীর লড়াই দীর্ঘ দিনের। এলাকার অবৈধ কয়লা কারবারে নিয়ন্ত্রণ নিয়েই তৃণমূলের ওই দুই গোষ্ঠীর মূল দ্বন্দ্ব বলে পুলিশ ও দলেরই একটি সূত্রের দাবি। সম্প্রতি অশোক মুখোপাধ্যায়ের খুনের পরে ঘোষ গোষ্ঠীর নেতা-কর্মীদের নামে অভিযোগ দায়ের হওয়ায় বর্তমানে তাঁরা সকলেই পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এলাকার নিয়ন্ত্রণ এতদিন ঘোষ-গোষ্ঠীর হাতেই ছিল। অনেকটাই ভেঙে পড়েছে অশোক মুখোপাধ্যায় গোষ্ঠীও। ফলে খয়রাশোলে তৃণমূল কার্যত নেতৃত্ব শূন্য হয়ে পড়েছে। তারই সুযোগে মুখোপাধ্যায় গোষ্ঠী ফের নিজেদের ক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা শুরু করেছে বলে খবর। আর তারই জের হচ্ছে এ দিনের এই হামলা বলে ঘোষ গোষ্ঠী দাবি। খয়রাশোলের দায়িত্বে থাকা দলের জেলা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলছেন, “পার্টি অফিসে হামলা দুর্ভাগ্যজনক। দলের কেউ এতে জড়িত কিনা তা দলগত তদন্ত করে দেখা হবে।”

khairasol tmc party office attack ashoke ghosh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy