Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

চাল কেন কম, ক্ষোভ

রেশন নিয়ে ক্ষোভ ক্রমেই ছড়াচ্ছে পুরুলিয়ার জঙ্গলমহলে। জঙ্গলমহলের বাসিন্দা হিসেবে রাজ্য সরকার তাঁদের জন্য সপ্তাহে মাথাপিছু যে পরিমাণ চাল বরাদ্দ করেছে, তার থেকে তাঁরা কম চাল পাচ্ছেন বলে এ বার পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানালেন ঝালদা ২ ব্লকের চ্যেকা পঞ্চায়েতের বড়হনকলের বাসিন্দারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোটশিলা শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:৫০
Share: Save:

রেশন নিয়ে ক্ষোভ ক্রমেই ছড়াচ্ছে পুরুলিয়ার জঙ্গলমহলে।

জঙ্গলমহলের বাসিন্দা হিসেবে রাজ্য সরকার তাঁদের জন্য সপ্তাহে মাথাপিছু যে পরিমাণ চাল বরাদ্দ করেছে, তার থেকে তাঁরা কম চাল পাচ্ছেন বলে এ বার পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানালেন ঝালদা ২ ব্লকের চ্যেকা পঞ্চায়েতের বড়হনকলের বাসিন্দারা। তাঁদের ক্ষোভ, জঙ্গলমহলের বাসিন্দাদের জন্য প্রতি সপ্তাহে মাথাপিছু দু’কেজি করে চাল বরাদ্দ রয়েছে রাজ্য সরকার। কিন্তু, স্থানীয় রেশন ডিলার প্রতি সপ্তাহেই সেখান থেকে কিছুটা করে কেটে গ্রাহকদের মধ্যে বিতরণ করেন। গ্রামবাসীরা বলেন, “কেন মাথাপিছু দু’কেজির কম চাল দেওয়া হচ্ছে, ডিলারের কাছে তা জানতে চেয়েও কোনও সদুত্তর মেলেনি। তার বদলে আমাদের শুনতে হয়েছে এই পরিমাণ মালই মিলবে।”

এর পরেই এলাকার রেশন গ্রাহকেরা জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের এই কম মাল দেওয়ার বিষয়টি নজরে আনেন। চ্যেকা পঞ্চায়েতের সদস্য ঋঝেশ্বর কুমার বলেন, “এলাকার রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে এ রকম অভিযোগ বসিন্দারা আমার কাছেও জানিয়েছেন।” জেলা খাদ্য নিয়ামক লতিফুদ্দিন শেখও গ্রাহকদের অভিযোগ পাওয়ার কথা মেনেছেন। যদিও ওই এলাকার রেশন ডিলার অবিনাশ কুমারের দাবি, “আমার বিরুদ্ধে যে ভাবে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তা ঠিক নয়। প্রতি সপ্তাহেই কিছুটা করে মাল কম পড়ে। যতটুকু কম পড়ে, ততটুকুই কম দেওয়া হয়।” অভিযোগ পেয়ে জেলা খাদ্য নিয়ামক নিজে এলাকায় তদন্তে যান। লতিফুদ্দিন শেখ বলেন, “আমি সরেজমিন তদন্ত করেছি। তদন্তে যা উঠে এসেছে। তা আমি মহকুমা খাদ্য নিয়ামককে জানিয়েছি। এ বার ব্যবস্থা নেওয়া তাঁর এক্তিয়ারে।” মহকুমা খাদ্য নিয়ামকের প্রতিক্রিয়ার জন্য বারবার তাঁর মোবাইলে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

সপ্তাহ খানেক আগে আড়শা থানার কুদাগাড়া গ্রামের রেশন ডিলার দেবেন্দ্রনাথ কুমারের রেশন দোকান ও বাড়িতে হামলা চালান কয়োকশো গ্রামবাসী। দোকানের মালপত্র লুঠ করার পাশাপাশি তাঁর বাড়িও ভাঙচুর করা হয়। সেখানেও গ্রাহকদের অভিযোগ ছিল, মাথাপিছু দু’কেজি করে চালের পরিবর্তে কম মাল দেওয়ার। ওই ঘটনার দিন দুয়েক আগে আড়শা থানা এলাকারই পুরুলিয়া-আড়শা রাস্তায় মিশিরডি মোড়ে একই অভিযোগে পথ অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। লতিফুদ্দিন মঙ্গলবার জানান, কুদাগাড়া গ্রামের রেশন ডিলারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।

জঙ্গলমহলের বাসিন্দাদের এই ক্ষোভের বিষয়টি নিয়ে এ বার সরব হতে চলেছে ‘আড়শা থানা নাগরিক উন্নয়ন কমিটি’ নামে একটি সংগঠন। কমিটির পক্ষে রঙ্গলাল কুমার বলেন, “আমরা ইতিমধ্যেই জঙ্গলমহলের বাসিন্দাদের জন্য মাথাপিছু যে দু’কেজি করে চাল বরাদ্দ রয়েছে, সেই পরিমাণই চাল দেওয়ার দাবিতে সভা করেছি। পাশাপাশি রেশন ডিলারেরা যাতে গ্রাহকদের রসিদ দেন এবং দোকান সপ্তাহে পাঁচ দিন খোলা রাখেন, সেই দাবিও প্রশাসনের কাছে দাবি জানাব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

ration rice kotshila
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE