Advertisement
১৮ মে ২০২৪

ছাত্রীর হাত ধরে টানার অভিযোগ, কলেজে বিক্ষোভ

নবাগত ছাত্রছাত্রীদের কয়েকজনকে র‌্যাগিং করার অভিযোগকে ঘিরে শুক্রবার উত্তেজনা ছড়াল পুরুলিয়া জগন্নাথ কিশোর কলেজে। এক এফএসআই নেতা প্রথম বর্ষের কয়েকজন ছাত্রছাত্রীকে ক্লাসঘরে আটকে রেখে র্যাগিং করেছে বলে অভিযোগ তুলে তার শাস্তির দাবিতে এ দিন কলেজের মূল গেটের বাইরে বিক্ষোভ দেখাল টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদ।

চলছে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র

চলছে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৪ ০১:৩৩
Share: Save:

নবাগত ছাত্রছাত্রীদের কয়েকজনকে র‌্যাগিং করার অভিযোগকে ঘিরে শুক্রবার উত্তেজনা ছড়াল পুরুলিয়া জগন্নাথ কিশোর কলেজে। এক এফএসআই নেতা প্রথম বর্ষের কয়েকজন ছাত্রছাত্রীকে ক্লাসঘরে আটকে রেখে র্যাগিং করেছে বলে অভিযোগ তুলে তার শাস্তির দাবিতে এ দিন কলেজের মূল গেটের বাইরে বিক্ষোভ দেখাল টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদ। ছাত্র সংসদ এবং কলেজের ছাত্রছাত্রীদের তরফে মোট দু’টি অভিযোগ জমা পড়ে অধ্যক্ষের কাছে। এই ঘটনার জেরে কলেজের অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি বৈঠকে বসে অভিযুক্ত ছাত্রকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কলেজে আসা নিষেধ করেছে।

কলেজ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার দুপুরে। ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক চন্দন দত্ত অভিযোগ করেন, “বৃহস্পতিবার দুপুরে নবাগত এক ছাত্র কান্নাকাটি করে জানায়, একটি ক্লাসঘরে তাঁদের আটকে কয়েকজন নিগ্রহ করছে। অধ্যক্ষকে সঙ্গে নিয়ে ওই ঘরে গিয়ে দেখি তখনও দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। ডাকাডাকির পরে দরজা খুলতে ভিতরে থাকা পড়ুয়ারাও অধ্যক্ষের কাছে নিগ্রহের অভিযোগ করেন। তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্র এক ছাত্রীর হাত ধরে টানাটানি করে বলেও অভিযোগ ওঠে।” তিনি জানান, ক্লাসঘরের ব্ল্যাকবোর্ডে আপত্তিকর শব্দও লেখা ছিল। এই ঘটনার প্রতিবাদে তাঁরা অধ্যক্ষের কাছে এ দিন লিখিত ভাবে অভিযোগ জমা দিয়েছেন। পরে কলেজের অন্য পড়ুয়ারাও কঠোর শাস্তির দাবি করে আলাদা অভিযোগ জমা দেন।

এ দিকে বিক্ষোভ চলাকালীন ছাত্র সংসদের কাছে খবর আসে কলেজ কর্তৃপক্ষ অভিযুক্তকে ১০ দিনের জন্য কলেজে আসা বন্ধ করে দেওয়ার পদক্ষেপ করতে যাচ্ছে। শাস্তি লঘু করা হচ্ছে বলে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন বিক্ষোভকারীরা। তাঁরা অ্যান্টি র্যাগিং কমিটিকে বৈঠক করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে সোচ্চার হয়। পরে অধ্যক্ষ তাঁদের সেই আশ্বাস দিলে উত্তেজনা কমে। জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সহ-সভাপতি সমীর মাহাতো বলেন, “এই কলেজে এ রকম ঘটনার নজির নেই। কোনও ছাত্রীর হাত ধরে কোনও ছাত্র টানাটানি করবে আর ছাড় পেয়ে যাবে চলতে পারে না।”

পরে কলেজের অধ্যক্ষ শান্তনু চট্টোপাধ্যায় বলেন, “দু’টি অভিযোগ পেয়েছি। তাতে র্যাগিং করার জন্য যে ছাত্রের নামে অভিযোগ করা হয়েছে অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি তাকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত না নেওয়া পর্যন্ত কলেজে আসতে নিষেধ করেছে। ঘটনার তদন্তের জন্য পাঁচ সদস্যের একটি দল গঠন করা হয়েছে। তাঁরা ওই ঘটনার সঙ্গে মূল অভিযুক্তের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত কি না তা খতিয়ে দেখবে। রিপোর্ট পাওয়ার পরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।”

অভিযুক্ত ছাত্র অবশ্য এ দিন কলেজে আসেনি। চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা পুরুলিয়ার তৃণমূল বিধায়ক কে পি সিংহ দেও দাবি করেন, “অভিযুক্ত ছাত্র প্রাথমিক ভাবে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ স্বীকার করেছে। কলেজ কর্তৃপক্ষকে ভাল করে তদন্ত করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে বলেছি।”

এসএফআই নেতা প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ওই ছাত্র নেতা আমাদের সংগঠনের হলেও আমরা র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে। তবে বিষয়টি এখন অভিযোগের স্তরেই রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার কলেজের বাইরে বহিরাগত কিছু ছেলে তাকে যে ভাবে মারধর করেছে, তা নিন্দনীয়। তার বিচার কে করবে?”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE