জেলার কয়েকটি জায়গায় বিচ্ছিন্নভাবে কম বৃষ্টি হলেও পুরুলিয়া বা বাঁকুড়ার চেয়ে এ বার বীরভূমের ছবিটা আলাদা বলে মনে করছে কৃষি দফতর। জেলা কৃষি দফতরের মতে, এখনও পর্যন্ত জেলায় পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর সেই কারণেই লক্ষ্য মাত্রার প্রায় ৯৪ শতাংশ জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে বলে দাবি কৃষি দফতরের।
শুধু লক্ষ্য মাত্রার কাছাকাছি পৌঁছনই নয়, গত বারের তুলনায় এ বার জেলায় ১৮ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে ধান চাষ হয়েছে। জেলা সহ-কৃষিঅধিকর্তা (তথ্য) অমর মণ্ডল জানিয়েছেন, আউশ ও আমন (আউশ ৪,২৫০ হেক্টর এবং আমন ৩,০৮৩০০) মিলিয়ে এ বার ৩ লক্ষ ১২ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ করার লক্ষ্য মাত্রা নেওয়া হয়েছিল। সেখানে চাষ করা সম্ভব হয়েছে ২ লক্ষ ৯২ হাজার ৬৫৫ হেক্টর জমিতে। যথাযথ এবং সময় মতো বৃষ্টিপাতের কারণেই সেটা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছেন ওই আধিকারিক। তবে সম্পূর্ণ ভাবে লক্ষ্য পূরণ করা গেল না কেন? ওই আধিকারিক বলেন, “খয়রাশোল, মহম্মদবাজার, রাজনগর ও রামপুরহাট ১ ব্লকের বেশ কিছু অঞ্চলে আশানুরূপ বৃষ্টিপাত না হওয়াই এর প্রধান কারণ।” তবে কম বৃষ্টিপাতের জন্য জিরোটিলেজের মতো যন্ত্র রয়েছে জেলা কৃষি দফতরের হাতে। যে যন্ত্রের সাহায্যে এমন পরিস্থিতিতে চাষ করা যাবে বলেই দাবি করেছিল কৃষি দফতর। সেই যন্ত্র কী কাজে লাগানো যায়নি? কৃষি দফতরের আধিকারিকেরা বলছেন, “যন্ত্র ব্যবহার করতে হলে আরও কিছুটা আগে করতে হত। সেটা করা যায়নি। পরের দিকে মাটিতে কাদা হয়ে যাওয়ায় জিরোটিলেজ চালানো যায়নি।”
তবে জেলার যে অংশে ধান চাষ করা যায়নি এমন ৬৯০০ হেক্টর জমি বেছে নিয়ে জমির আদ্রতাকে কাজে লাগিয়ে সেখানে সর্ষে, কালো কলাই, খেসারি, মুসুর, বাদাম, কুসুমবীজ, কিছুটা সেচের সুবিধা থাকলে গমের মতো বিকল্প চাষ কারার পরিকল্পনা করে তার খসড়া ইতিমধ্যেই রাজ্য কৃষি দফতরের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানান অমরবাবু। যেহেতু চাষিদের ক্ষতির মুখ দেখতে হল তাই বিকল্প চাষে বীজ ও সার তাঁদের বিনা পয়সায় দেওয়ার জন্য মোট ৩ কোটি ২০ লক্ষ টাকার প্রকল্প খরচ ধরা হয়েছে। সবুজ সঙ্কেত পেলে সেপ্টেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহেই কাজ শুরু করার ভাবনা রয়েছে।