৯ নম্বর ওয়ার্ডে সিউড়ি সদর হাসপাতাল সংলগ্ন রাস্তায় তোলা নিজস্ব চিত্র।
ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে জমে রয়েছে অবর্জনা। ভ্যাট উপচে রাস্তায় পড়ছে ময়লা। বাসস্ট্যান্ড থেকে হাসপাতাল সর্বত্রই নোংরা জমে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। আর হবে নাই বা কেন! গত কয়েক দিন ধরে আবর্জনাই পরিষ্কার হয়নি শহরে। এই নিয়ে তৈরি হয়েছে অসন্তোষ। চিত্রটি জেলা সদর সিউড়ি পুরসভা এলাকার।
পুরসভা সূত্রের খবর, মূলত দু’টি সমস্যার জন্য আবর্জনা পরিষ্কার করা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। প্রথমত শহরের আবর্জনা ফেলার জন্য প্রয়োজনীয় জায়গার অভাব এবং দ্বিতীয়ত ওই কাজে নিযুক্ত ঠিকাদার সংস্থার তিন মাসের বিল বকেয়া থাকা। সব ওয়ার্ডে পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছয়নি। পুর-পরিষেবার মধ্যে অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ পরিষেবা পানীয় জল নিয়ে অভিযোগ না মিটতেই শহরের জঞ্জাল পরিষ্কারের মতো অপর একটি পরিষেবা নিয়েও বিপাকে পুরসভা। এর আশু সমাধান কী বা পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে তা স্পষ্ট করতে পারেননি পুরকর্তৃপক্ষ।
কেন সমস্যা?
পুরসভা সূত্রে জনা গিয়েছে, ১৮টি ওয়ার্ড বিশিষ্ট সিউড়ি পুরসভার যথেষ্ট জনবহুল। জনসংখ্যা ৮০ হাজারের বেশি। এ ছাড়া জেলা শহর হওয়ার জন্য এমনিতেই শহরে প্রতিদিন বহু মানুষ যাতায়াত করেন। রয়েছে অফিস কাছারি, দোকানপাট, জেলা হাসপাতাল-সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। ফলে শহরজুড়ে প্রতিদিনই প্রচুর আবর্জনা জমে যায়। এর আগে পুরসভা শহরের বাইরে তিনটি জমি বেছেছিল আবর্জনা ফেলার কাজে ব্যবহারের জন্য। একে একে সেগুলি ভরে যাওয়ায় এবং কোথাও জনবসতি, কোথাও স্কুল ও কোথাও এলাকাবাসীর আপত্তির কারণে সেই সব নির্দিষ্ট জায়াগায় আবর্জনা ফেলা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে পুরসভা। সমস্যা শুরু সেখান থেকেই। আবর্জনা পরিষ্কারের দায়িত্বে রয়েছেন দুই ঠিকাদার। তাঁরা ট্রাক্টর লাগিয়ে সেই আবর্জনা নির্দিষ্ট জায়াগায় ফেলে আসেন। ঠিকাদাররা জানিয়েছেন, তাঁরা গড়ে দিনে গড়ে ৩০-৩৫ ট্রাক্টর আবর্জনা শহর থেকে সাফাই করে থাকেন। কিন্তু সমস্যা আবর্জনা ফেলার সঠিক জায়গা এই মূহূর্তে না থাকাটাই। এ ছাড়া, ঠিকাদাররা প্রতি ট্রাক্টরের জন্য পুরসভা থেকে যে ২৪০ টাকা করে পেয়ে থাকেন সেই টাকাও মাস তিনেক ধরে পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
ঠিকাদারদের দাবি, প্রথমত জায়গা না থাকায় শহরের বাইরে পুরসভার আবর্জনা ফেলতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন তাঁদের কর্মীরা। দ্বিতীয়ত বড় অঙ্কের টাকা বাকি থাকায় তাঁদের নিযুক্ত কর্মীদের দিয়ে সাফাইয়ের কাজ করাতেও বেগ পেতে হচ্ছে। সেই জন্যেই দিন ১০-১২ শহরের আবর্জনা সাফাই করা হয়নি। সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া কাউন্সিলর বাবন ওরফে দীপক দাস ও সিউড়ির একমাত্র কংগ্রেস কাউন্সিলর ইয়াসিন আখতাররা বলছেন, “সিউড়ি এখন জঞ্জাল শহর। জায়গা না থাকাটা সমস্যা নিশ্চই। কিন্তু পরিস্থিতি বুঝে আরও আগে থেকেই এ ব্যাপারে সচেষ্ট হতে পারত ক্ষমতসীন বোর্ড।” তৃণমূল পরিচালিত সিউড়ির পুরপ্রধান উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায় সমস্যার কথা মেনে নিলেও ক্ষমতাসীন বোর্ডের নিষ্ক্রিয়তার কথা মনতে চাননি। তিনি বলেন, “ইতিমধ্যেই জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার অধিকারিকের সঙ্গে আবর্জনা ফেলার জমি চেয়ে আবেদন জানানো হয়েছে। উনি জমি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। জমি পেলেই দ্রুত সমস্যা মিটবে।” ঠিকাদারদের বকেয়া প্রসঙ্গে পুরপ্রধান বলেন, “কিছু টাকা বকেয়া রয়েছে এটা ঠিকই। কিন্তু সমস্যাটা মূলত জায়গা না থাকাটা নিয়েই। আবর্জনা ফেলার জমি পেলে অন্য কোনও সমস্যা থাকবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy