বিড়ি শিল্পের উপর থেকে জারি করা কেন্দ্রীয় সরকারের নয়া নির্দেশিকা প্রত্যাহারের দাবিতে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ধর্মঘটের পথে যাওয়ার কথা ভাবচ্ছে বিড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলি। বৃহস্পতিবার পুরুলিয়ায় এক সাংবাদিক বৈঠকে এ কথা জানিয়েছে ‘পুরুলিয়া জেলা ব্রান্ডেড বিড়ি ম্যানুফ্যাকচারার্স কো-অর্ডিনেশন কমিটি। কমিটির মুখপাত্র রাইমোহন সাহা বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকারের তামাক আইনের সংশোধনের জেরে বিড়ি শিল্পের ভবিষ্যৎ অন্ধকারের দিকে যাচ্ছে। তাঁর কথায়, “বর্তমানে বিড়ির বান্ডিলের উপরে যে মোড়ক (লেবেল) থাকে। সেই মোড়কের ৪০ শতাংশ জুড়ে মানুষের দেহে বিড়ির ক্ষতিকারক প্রভাবের ছবি ছাপাতে হয়। এখন যে নির্দেশিকা আমাদের দেওয়া হয়েছে সেখানে বলা হয়েছে সেই মোড়কের ৮৫ শতাংশ জুড়ে সেই ক্ষতিকারক প্রভাবের ছবি ছাপাতে হবে। পাশাপাশি বিড়ি তৈরির এবং মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখও মোড়ক বা প্যাকেটের গায়ে লিখতে হবে। অতবড় ছবি ছেপে বাকি তথ্য লেখার জায়গা থাকবে না।” কেন্দ্রীয় সরকার ‘টোব্যাকো আইন ২০০৩’ চালু করে চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে ওই নির্দেশিকা পালন করতে বলেছে।
এই সংগঠনের মতে, এই বিধি মেনে বিড়ি শিল্পকে টিঁকিয়ে রাখা মুশকিল। এমনিতেই এই শিল্পের অবস্থা সঙ্কটে। তার উপরে এই নির্দেশিকা মেনে বিড়ি তৈরি করে কারখানা থেকে পরিবেশক সেখান থেকে পাইকারি বিক্রেতা এবং সেখান থেকে খুচরো দোকানিদের কাছে বিড়ি পৌঁছতে বেশ সময় লাগে। তাই বিড়ি তৈরির এবং মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ মোড়কে লিখে রাখলে সেই অনুযায়ী বিড়ি বিক্রির উপযুক্ত সময় পাওয়া মুশকিল হবে। এর ফলে বিড়ি বাজারে বিক্রি করা অসম্ভব হয়ে উঠবে। পুরুলিয়া জেলায় এই শিল্পের সঙ্গে কমবেশি ৮০ হাজার শ্রমিক যুক্ত রয়েছেন। ঝালদা ১, ঝালদা ২, আড়শা, জয়পুর, রঘুনাথপুর, বাঘমুণ্ডি ব্লক এলাকাতেই এই শিল্প টিঁকে রয়েছে। সংগঠনের নেতাদের মতে, বাড়িতে বসেই বহু মানুষ বিড়ি তৈরি করেন। নিয়মের গেড়োয় শিল্প বন্ধ হয়ে গেলে তাঁরা সকলেই কাজ হারাবেন। আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে বিড়ি শিল্পের মালিক পক্ষের সংগঠনগুলির ফেডারেশনের সঙ্গে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের বৈঠক রয়েছে। রাইমোহনবাবু জানান, সেই বৈঠকের পরেই তাঁরা ধর্মঘটের ব্যাপারে চরম সিদ্ধান্ত নেবেন।
যদিও ওই নির্দেশিকার প্রতিবাদে সম্প্রতি মুর্শিদাবাদে সাত দিনের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল বিড়ি মালিক সংগঠন। কিন্তু কোনও শ্রমিক সংগঠন তাতে সায় দেয়নি। ধর্মঘটের আগে বৈঠকে ডেকেছিল, তারা সায় দেয়নি। তারা জানিয়েছিল, ধর্মঘটের জেরে কাজ বন্ধ থাকলে শ্রমিকদের রোজগার বন্ধ থাকবে। তাই তারা এর প্রতিবাদে ধর্মঘটে সামিল হতে চায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy