টাকা নিয়ে দুই মদ্যপের মারপিটে এক মদ্যপের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার রাতে সিউড়ির সাজিনা গ্রামের ঘটনা। পুলিশ জানায়, নিহতের নাম সুভাষ বাগদি (৩৭)। বাড়ি সাজিনা গ্রামেই। সুভাষবাবুর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযুক্ত বাবুসোনা বাগদি ওরফে পাগলকে গ্রেফতার করেছে। মঙ্গলবার ধৃতকে সিউড়ি আদালতে হাজির করাবে পুলিশ।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে খবর, রবিবার বিকেলে নিহত ব্যক্তি কাজের সূত্রে পুরন্দরপুরে গিয়েছিলেন। রাতে তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। সোমবার সকালে বাড়ির অদূরে রাস্তায় সুভাষবাবুর পরিজনেরা তাঁকে জখম অবস্থায় উদ্ধার করেন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই তাঁর মৃত্যু হয়। নিহতের মেয়ে চন্দনা বাগদির দাবি, রবিবার রাত ১২টা নাগাদ পাগল তাঁদের বাড়ির দরজায় ধাক্কা মারছিল। সুভাষবাবুর স্ত্রী দরজা খুলতেই পাগল জানায়, তাঁর স্বামী মদ খেয়ে বেহুঁশ হয়ে বাড়ির কাছে রাস্তায় পড়ে আছেন। পাগল সুভাষবাবুকে বাড়ি আনতে বলে। চন্দনাদেবী বলেন, “বাবা প্রায় দিনই মদ খেয়ে গভীর রাতে বাড়ি ফিরত। তাই অত রাতে মা আর বেরতে চাননি। তাই পাগলকে জানিয়ে দেন, ওঁকে আনার দরকার নেই। নেশা ছুটে গেলে আপনিই ফিরে আসবেন।” তাঁর দাবি, এরপরেই পাগল তাঁদের জানায়, সুভাষবাবু নাকি তাঁর কাছ থেকে কিছু টাকা ছিনিয়ে নিয়ে ছিলেন। পাগল পাল্টা সেই টাকা তাঁর বাবার থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে। সুভাষবাবুর মেয়ে বলেন, “ও কথা জানিয়েই পাগল আমাদের বলে, ‘তোমার স্বামী মরে টরে গেলে কিন্তু আমাকে দোষ দিওনা। আমি কিছু জানি না।” এরপরে সকালেই জখম অবস্থায় সুভাষবাবুকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, পাগল নেশা করে কারণে অকারণে প্রায়ই গ্রামের লোকেদের মারধর করার হুমকি দিত। মারধরও করত। এমনকী, ওই ঘটনার আগেও পাগল সুভাষবাবুকে একবার মারধর করেছিল বলে অভিযোগ। পরিবারের অভিযোগ, টাকা নিয়ে ঝামেলার জেরে বাড়ি ফেরার পথে গ্রামের উপরপাড়া বড় পুকুরের কাছকাছি (পাগলের বাড়ির অদূরেই) রাস্তার উপর পাগল সুভাষবাবুকে মারধর করে। চন্দনাদেবীর অভিযোগ, “বাবাকে জখম হয়ে পড়ে যেতে দেখে ঘাবড়ে গিয়েই পাগল আমাদের বাড়িতে চলে এসেছিল। কিন্তু আমরা মাতালের কথার গুরুত্ব দিইনি। ও বাবাকে মারার কথা চেপে না গেলে এমনটা হত না।” সময়মতো সুভাষবাবুকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে বাঁচানো যেত বলে মনে করছে তাঁর পরিবার। কিন্তু তার সুযোগ না মেলার পিছনে পাগলকেই দায়ী করছেন চন্দনাদেবীরা। তাঁদের দাবি, সুভাষবাবুর সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। দাঁতও ভাঙা ছিল। গ্রামের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য অরবিন্দু মণ্ডল বলেন, “গ্রামে পাগলের দৌরাত্ম্যে আমরা অতীষ্ট। প্রায় দিন মদ খেয়ে একে ওকে হুমকি দেওয়া, মারধর করা ওর স্বভাব। খবর নিয়ে জেনেছি,পাগলই ওই দিন রাতে সুভাষবাবুকে মারধর করেছিল।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy