Advertisement
E-Paper

বোনকে প্রতারণা, প্রেমের ফাঁদে ধরিয়ে দিলেন দিদি

‘দেবদা, অঙ্কুশ বলছি।’ ‘মোডাস অপারেন্ডি’ মোটের উপরে এটাই। সুপারস্টার দেবের নাম করে মেয়েদের মোবাইলে ফোন করে বা এসএমএস করে ভাব জমানো। তার পরে ফিল্মে নামার টোপ দিয়ে টাকা-পয়সা হাতিয়ে ধাঁ! বাঁকুড়ার এক কলেজছাত্রীর সঙ্গে সম্প্রতি ঠিক এই কায়দাতেই ভাব জমিয়েছিল বিষ্ণুপুর শহরের ছিন্নমস্তা এলাকার বাসিন্দা, শুভেন্দু গুহ। নিজের নাম বলেছিল অঙ্কুশ চট্টোপাধ্যায়।

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৪ ০২:১৫

‘দেবদা, অঙ্কুশ বলছি।’

‘মোডাস অপারেন্ডি’ মোটের উপরে এটাই। সুপারস্টার দেবের নাম করে মেয়েদের মোবাইলে ফোন করে বা এসএমএস করে ভাব জমানো। তার পরে ফিল্মে নামার টোপ দিয়ে টাকা-পয়সা হাতিয়ে ধাঁ! বাঁকুড়ার এক কলেজছাত্রীর সঙ্গে সম্প্রতি ঠিক এই কায়দাতেই ভাব জমিয়েছিল বিষ্ণুপুর শহরের ছিন্নমস্তা এলাকার বাসিন্দা, শুভেন্দু গুহ। নিজের নাম বলেছিল অঙ্কুশ চট্টোপাধ্যায়। মেয়েটি তার ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্ব খুইয়ে বাড়ি ফেরে। বিবাহিত দিদি বোনের কাছে সব জেনে ঠিক থাকতে পারেননি। বদলা নিতে পাল্টা ফাঁদ পাতেন। তাঁর প্রেমের ফাঁদে পা দিয়েই পুলিশের জালে ধরা পড়ে যায় প্রতারক শুভেন্দু।

শুভেন্দু আপাতত জেল হাজতে। তাঁর বিরুদ্ধে বাঁকুড়া মহিলা থানায় চুরি ও প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন ওই কলেজছাত্রী। এখন তাঁর দাবি, তাঁকে শ্লীলতাহানির চেষ্টাও করেছিল ওই যুবক। ঘটনার সূত্রপাত এক মাস আগে। ওই কলেজছাত্রীর মোবাইলে হঠাৎই এক দিন এসএমএস আসে, ‘দেবদা, আমি অঙ্কুশ। অলরেডি শু্যটিং ফ্লোরে ঢুকে পড়েছি। তুমি কখন আসছ? আই লাভ ইউ-২ ছবির রিহার্সাল চলছে’। ঘটনাচক্রে, দেবের প্রথম হিট ছবির নাম ‘আই লাভ ইউ’। ওই ছাত্রী পুলিশকে জানান, মিনিট দশেক পরেই অঙ্কুশ নাম নিয়ে ওই যুবক তাঁকে ফোন করে বলে, ভুল করে সে এসএমএস করেছিল। সে ফিল্ম প্রযোজক। দু’জনের ফোনালাপ পর্বের শুরু সেখান থেকেই। মেয়েটির আস্থা জিতে তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় ওই যুবক। সঙ্গে নায়িকা করার টোপ।

ফাঁদে পা দেন ওই তরুণী। তাঁকে শুভেন্দু ওরফে অঙ্কুশ গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বাঁকুড়া স্টেশনে দেখা করতে বলে। দু’জনে মিলে যান মেদিনীপুরে। ওই কলেজছাত্রীর অভিযোগ, “ছবিতে নামাবে বলায় আমি ওর সঙ্গে যেতে রাজি হই। মেদিনীপুরে নেমে বলে এর জন্য ২০ হাজার টাকা লাগবে। অত টাকা ছিল না। আমার সোনার দুল, ব্যাগে থাকা ছ’হাজার টাকা আর মোবাইলটা ও নিয়ে নেয়।” তরুণীর আরও অভিযোগ, তাঁর শ্লীলতাহানিরও চেষ্টা করে ওই যুবক।

বোনের কাছ থেকে সব শুনে দিদি ঠিক করেন, ওই যুবককে যে ভাবেই হোক শায়েস্তা করতে হবে। ‘বর্ষা’ নামে ছেলেটির সঙ্গে ভাব জমাতে শুরু করেন ওই তরুণী বধূ। তাঁর কথায়, “আমিও ওর নম্বরে একটা এসএমএস পাঠাই। কিন্তু, ও ফোন করে বলে রং নম্বর। চট করে ধরা দিতে চায়নি। কিন্তু, জানতাম, ও ফাঁদে পা দেবেই!” ঠিক তাই হয়। কলেজছাত্রীর দিদিকেও ফোন করে প্রেমের প্রস্তাব দেয় শুভেন্দু। এ ক্ষেত্রেও নিজেকে টালিগঞ্জের বাসিন্দা ও অঙ্কুশ চট্টোপাধ্যায় নামেই পরিচয় দিয়েছিল ওই যুবক। দিন পনেরো পরে শুভেন্দু কিছু টাকা নিয়ে কলেজছাত্রীটির দিদিকে বিষ্ণুপুরে দেখা করতে বলে।

বিষ্ণুপুরে একা যাননি ওই তরুণী। সঙ্গে ছিলেন বাবা, স্বামী আর দেওর। তরুণী জানান, বিষ্ণুপুরে গিয়ে শুভেন্দুর কথা মতো তিনি রিকশায় উকিলপাড়ার দিকে রওনা দেন। পিছনের রিকশায় ছিলেন তাঁর স্বামী, দেওর ও বাবা। মাঝপথে দু’টি রিকশা আলাদা হয়ে যায়। তাতেও দমে না গিয়ে ওই বধূ দেখা করেন শুভেন্দুর সঙ্গে। তাঁর অভিযোগ, “একটা গলির মুখে ছেলেটা দাঁড়িয়েছিল। কিছু দুরে হাঁটার পরেই সে আমার মোবাইল নিয়ে স্যুইচ অফ করে দেয়।” প্রমাদ গোনেন তরুণী। সামনে ব্যস্ত এলাকা পড়তেই শুভেন্দুকে চড়-থাপ্পড় মারতে শুরু করেন তিনি। পাল্টা মারে শুভেন্দুও। পুলিশ এসে দু’জনকেই বিষ্ণুপুর থানায় নিয়ে যায়।

শুভেন্দুর বাবা বলেন, “আমার ছেলের কিছু মানসিক সমস্যা রয়েছে। ওর চিকিৎসা চলছে। ওর বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ মিথ্যা।”

rajdeep bandyopadhyay bankura fraud
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy