Advertisement
E-Paper

বাংলা মাধ্যম চেয়ে বিক্ষোভ আদ্রার ডিআরএম অফিস চত্বরে

আগেই গড়া হয়েছিল ‘বাংলা ভাষা বাঁচাও কমিটি’। এ বার রেলের স্কুলগুলি থেকে বাংলা মাধ্যম তুলে দিয়ে হিন্দি বা ইংরেজিতে সিবিএসই পাঠ্যক্রম শুরু করার প্রক্রিয়ার প্রতিবাদে সেই কমিটির নেতৃত্বে বিক্ষোভ শুরু করলেন অভিভাবক ও পড়ুয়ারা। বৃহস্পতিবার পুরুলিয়ার আদ্রায় রেলের ডিআরএম-এর কার্যালয়ের সামনে তাঁরা তিন ঘণ্টা ধরে অবস্থান-বিক্ষোভ দেখালেন। পরে কিছু অভিভাবক ডিআরএম-র সঙ্গে দেখা করে বাংলা মাধ্যম রাখার দাবিতে স্মারকলিপি দিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৪ ০১:১৬
বাংলার দাবিতে বিক্ষোভে মায়েদের সঙ্গে খুদে পড়ুয়ারাও। বৃহস্পতিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

বাংলার দাবিতে বিক্ষোভে মায়েদের সঙ্গে খুদে পড়ুয়ারাও। বৃহস্পতিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

আগেই গড়া হয়েছিল ‘বাংলা ভাষা বাঁচাও কমিটি’। এ বার রেলের স্কুলগুলি থেকে বাংলা মাধ্যম তুলে দিয়ে হিন্দি বা ইংরেজিতে সিবিএসই পাঠ্যক্রম শুরু করার প্রক্রিয়ার প্রতিবাদে সেই কমিটির নেতৃত্বে বিক্ষোভ শুরু করলেন অভিভাবক ও পড়ুয়ারা।

বৃহস্পতিবার পুরুলিয়ার আদ্রায় রেলের ডিআরএম-এর কার্যালয়ের সামনে তাঁরা তিন ঘণ্টা ধরে অবস্থান-বিক্ষোভ দেখালেন। পরে কিছু অভিভাবক ডিআরএম-র সঙ্গে দেখা করে বাংলা মাধ্যম রাখার দাবিতে স্মারকলিপি দিলেন। অন্য দিকে এ দিনই দক্ষিণ-পূর্ব রেলের সিপিওকে আদ্রার স্কুলগুলিতে চলতি শিক্ষাবর্ষের মাঝ পথে সিবিএসই পাঠ্যক্রম শুরু না করার দাবি জানিয়েছে রেলকর্মী সংগঠন মেনস কংগ্রেস। সব মিলিয়ে মাতৃভাষায় পড়ার সুযোগ করে দেওয়ার দাবি এ দিন আরও জোরালো করল আদ্রা।

রেলবোর্ডের সিদ্ধান্তে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আদ্রা ডিভিশনের সদর আদ্রা রেলশহরে রেলের তিনটি স্কুলে সিবিএসই পাঠ্যক্রম শুরু করতে উদ্যোগী হয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। প্রসঙ্গত স্কুলগুলিতে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের পাঠ্যক্রম পড়ানো হয়। ইতিমধ্যেই রেলের প্রাথমিক স্কুলে নোটিস দিয়ে রেল জানিয়েছে, চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে সিবিএসই পাঠ্যক্রম শুরু করা হচ্ছে। বয়েজ ও গার্লস হাইস্কুলেও হিন্দি মাধ্যমে সিবিএসই পাঠ্যক্রম পড়ানো শুরু হয়েছে। বাংলা মাধ্যমের পড়ুয়াদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, হিন্দি বা ইংরেজি কোন মাধ্যমে সিবিএসই পাঠ্যক্রম তারা পড়তে ইচ্ছুক। কিন্তু স্কুলগুলির বাংলা মাধ্যমে পড়া ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের দাবি, বাংলা মাধ্যম তুলে দেওয়া চলবে না। এর আগে প্রাথমিক স্কুলে নোটিস দেওয়ার দিনে স্কুলের গেট বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন অবিভাবকরা। গঠন করা হয় ওই কমিটি।

এ দিন সকাল ১০টা থেকে চড়া রোদের মধ্যেও জনা পঞ্চাশেক পড়ুয়া ও অভিভাবক বাংলাভাষায় পড়ার সুযোগ দেওয়ার দাবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে ডিআরএম-র কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন। বেলা ১টা পর্যন্ত টানা বিক্ষোভ চলে। অভিভাবকদের মধ্যে সিদ্ধার্থ পাল, তাপস কুণ্ডু, চিত্ত মুখোপাধ্যায়দের ক্ষোভ, “চলতি শিক্ষাবর্ষের মধ্যেই হঠাৎ করে বাংলা মাধ্যম বন্ধ করে সিবিএসই পাঠ্যক্রম শুরু করে আমাদের ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে চাইছে রেল।” এ দিন তাঁরা ডিআরএম-কে প্রস্তাব দিয়েছেন, আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে দু’টি স্কুলের মধ্যে একটিতে সিবিএসই পাঠ্যক্রম শুরু করা হোক, অন্য স্কুলে বাংলা মাধ্যমে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পাঠ্যক্রম পড়ানো হোক। অভিভাবকদের যুক্তি, “এতদিন বাংলা মাধ্যমে পড়াশোনা করে হঠাৎ করে অন্য মাধ্যমে সম্পূর্ণ অন্য সিলেবাসে ছেলেমেয়েদের পক্ষে পড়াশোনা করা সম্ভব নয়।”

কিন্তু রেলের পাল্টা যুক্তি, রেলকর্মীদের ছেলেমেয়েদের সুবিধার জন্যই সিবিএসই পাঠ্যক্রম শুরু করা হচ্ছে। ডিআরএম অরবিন্দ মিত্তলের দাবি, “আদ্রায় রেলের স্কুলে রেলকর্মীদের অনেকেই ছেলেমেয়েরা পড়তে চাইছে না। উল্টে তাঁরা অন্য ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলে ভর্তি করছেন। ফলে স্কুলগুলিতে বেশির ভাগ বাইরের পড়ুয়ারা পড়ছে।” তিনি জানান, রেলবোর্ডের নিয়ম অনুযায়ী রেলের স্কুলে ন্যূনতম ৬০ শতাংশ রেলকর্মীদের বাড়ির পড়ুয়াদের পড়তে হবে। না হলে সেই স্কুল বন্ধ করে দিতে হবে। আদ্রার স্কুলগুলির পরিসংখ্যান দেখে ইতিমধ্যেই দু’টি স্কুলকে এক করে একটি স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে ঊধ্বর্র্তন কর্তৃপক্ষ। ডিআরএম বলেন, “আমরা স্কুল বন্ধ না করে পরিবর্তে স্কুলগুলিতে সিবিএসই পাঠ্যক্রম শুরু করে রেলকর্মীদের ছেলেমেয়েদের এই স্কুলে ফিরিয়ে আনতে চাইছি।” তিনি জানান, পড়ুয়ারা হিন্দি না ইংরেজি কোন মাধ্যমে পড়তে চায়, তা জানার পরে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

যদিও মেনস কংগ্রেসের নেতা সুব্রত দে-র দাবি, “সংগঠনগত ভাবে আমরা অভিভাবকদের মধ্যে সমীক্ষা করে দেখেছি যে প্রায় ৯৯ শতাংশ অভিভাবক বাংলা মাধ্যমেই ছেলেমেয়েদের পড়ানোর পক্ষপাতী। ফলে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের সিপিও মনোজ পান্ডের কাছে আমরা বাংলা মাধ্যম বন্ধ না করার দাবি জানিয়েছি।” রেল সূত্রের খবর, সোমবার তিনটি স্কুলের অধ্যক্ষ এবং আদ্রার ডিপিও-কে কলকাতার গার্ডেনরিচে রেলের সদর দফতর আলোচনায় ডেকে পাঠিয়েছেন সিপিও।

bengali medium agitation adra
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy