জঙ্গলমহলের তরুণদের কাছে বায়ুসেনায় যোগদানের সুযোগ নিয়ে হাজির খোদ সেনা বিভাগ। পুরুলিয়ার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে বায়ুসেনা বিভাগের উইং কমান্ডার কে কে ভাদুড়ি তরুণদের কাছে বায়ুসেনায় যোগ দেওয়ার ব্যাপারে উৎসাহ জোগালেন। এই জেলার ছেলেদের কাছে কর্মক্ষেত্রের নতুন দিগন্ত খুলে দিতে জেলা প্রশাসনের সহায়তায় সেনা আধিকারিকরা বিশদে আলোচনা করলেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ৮-১৬ নভেম্বর ব্যারাকপুরে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। টেকনিক্যাল ও এডুকেশনাল ইনস্ট্রাক্টর এই দুই পদে নিয়োগ করা হবে। টেকনিক্যাল পদের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা: ১০+২ তে গণিত, পদার্থবিদ্যা ও ইংরেজিতে নূন্যতম ৫০ শতাংশ নম্বর থাকতে হবে। এডুকেশন্যাল ইনস্ট্রাক্টর পদের জন্য স্নাতকস্তরের পরীক্ষায় ৫০ শতাংশ নম্বর থাকতে হবে। বায়ুসেনা বিভাগের উইং কমান্ডার কে কে ভাদুড়ি জানিয়েছেন, নিয়োগ পরীক্ষা হবে ব্যারাকপুরে। রাজ্যের বিভিন্ন জেলার জন্য পৃথক দিন ধার্য করা হয়েছে।
বায়ুসেনা বিভাগ জানাচ্ছে, অন্য রাজ্যের তুলনায় এ রাজ্য থেকে বায়ু সেনা বিভাগে যোগদানের প্রবণতা কম। ২০০৬-২০১০ সাল পর্যন্ত এই রাজ্য থেকে বায়ুসেনা বিভাগে প্রায় ২০০ জন যোগ দিয়েছেন। ২০১২-র পর থেকে এই সংখ্যা বেড়েছে। উইং কমান্ডার কে কে ভাদুড়ির কথায়, “এই জেলার তরুণদের কাছে কী ভাবে বায়ুসেনা বিভাগে যোগ দিতে হয় সে বিষয়ে খুঁটিনাটি তথ্য থাকা প্রয়োজন। তাই এ বার বিভিন্ন জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে গিয়ে তরুণদের এ ব্যাপারে বোঝাচ্ছি।”
জেলাশাসক তন্ময় চক্রবর্তী বলেন, “এই জেলার তরুণদের কাছে বায়ুসেনা বিভাগে যোগদানের এটা বিরাট সুযোগ। এই সুযোগ যাতে জেলার আরও বেশি তরুণ পান, সে জন্য গ্রাম পঞ্চায়েতস্তরেও এই নিয়োগ সম্পর্কে প্রচার করব।” বৃহস্পতিবারের এক প্রশাসনিক বৈঠকে জেলার ২০ জন বিডিওকে এই নিয়োগের খবর যাতে বেশির ভাগ মানুষের কাছে পৌঁছতে পারে, সে জন্য তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, “অতীতে দেখা গিয়েছে, এ জেলার জঙ্গলমহলের মানুষের একাংশকে ভুল বুঝিয়ে বিপথে চালিত করা হয়েছে। আমরা তাঁদের বায়ুসেনার দরজায় পৌঁছে দিতে চাই। যাতে তাঁরা ভবিষ্যতে এয়ারম্যান হতে পারেন।”
বায়ুসেনা বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ৮ নভেম্বর উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির সঙ্গে বাঁকুড়া, বীরভূম এবং ১২ নভেম্বর বর্ধমান, নদিয়া, পুরুলিয়া, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার প্রার্থীদের পরীক্ষা নেওয়া হবে ব্যারাকপুরে। উইং কমান্ডার জানান, প্রথমদিন লিখিত পরীক্ষা ও শারীরিক সক্ষমতার পরীক্ষা নেওয়া হবে। যাঁরা উত্তীর্ণ হবেন পরের দিন সেই সফল পরীক্ষার্থীদের ইন্টারভিউ ও ডাক্তারি পরীক্ষা হবে। এ বিষয়ে বিশদ জানতে দেখতে হবে বায়ুসেনার ওয়েবসাইট www.indianairforce.nic.in ।
বলরামপুর, লালপুর-সহ জেলার বিভিন্ন এলাকাতে গিয়ে উইং কমান্ডার বলছেন, “এই জেলার তরুণদের শারীরিক গঠন ভালো। সে দিকে এগিয়ে থাকলেও এই চাকরির প্রাথমিক ধাপ লিখিত পরীক্ষা। তাতে উত্তীর্ণ হতে হবে।”