Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

সিউড়ির স্কুলে ঝামেলা চলছেই

আরটি গার্লস স্কুলের শিক্ষিকাদের মধ্যে বিবাদের জের বজায় থাকাল শুক্রবারও। এ দিন দুই সহকর্মীর বিরুদ্ধে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে সিউড়ি থানায় পৌঁছলেন অন্নপূর্ণা দলুই নামে এক শিক্ষিকা। নেতৃত্বে ছিলেন প্রধান শিক্ষিকা মৌ দাশগুপ্ত। যদিও তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সাজানো অভিযোগ বলে দাবি করেছেন শিক্ষিকা সুস্মিতা দে ও কৃষ্ণা বেঁড়ে। পুলিশ জানায়, দু’পক্ষকে বসিয়ে ঠিক কী ঘটেছিল সেটা তদন্ত করে দেখার পরই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:১৮
Share: Save:

আরটি গার্লস স্কুলের শিক্ষিকাদের মধ্যে বিবাদের জের বজায় থাকাল শুক্রবারও। এ দিন দুই সহকর্মীর বিরুদ্ধে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে সিউড়ি থানায় পৌঁছলেন অন্নপূর্ণা দলুই নামে এক শিক্ষিকা। নেতৃত্বে ছিলেন প্রধান শিক্ষিকা মৌ দাশগুপ্ত। যদিও তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সাজানো অভিযোগ বলে দাবি করেছেন শিক্ষিকা সুস্মিতা দে ও কৃষ্ণা বেঁড়ে। পুলিশ জানায়, দু’পক্ষকে বসিয়ে ঠিক কী ঘটেছিল সেটা তদন্ত করে দেখার পরই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

স্কুল সূত্রের খবর, সিউড়ির এই স্কুলে প্রধান শিক্ষিকার পক্ষে কিছু শিক্ষিকা রয়েছেন এবং বিপক্ষেও রয়েছেন কিছু শিক্ষিকা। দু’পক্ষের মধ্যে বিরোধ দীর্ঘদিনের। বৃহস্পতিবার ওই স্কুলে রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয়ের উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা হলে পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পালন করা বা না করা নিয়েই শিক্ষিকাদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছিল। শুক্রবারের ঘটনা তারই জের। বৃহস্পতিবার পরীক্ষা কক্ষের দায়িত্ব নেওয়ার কথা ছিল যে সব শিক্ষিকার, স্কুলে উপস্থিত থাকলেও তাঁদের একটা অংশ সেই দায়িত্ব পালন করেননি। তখন অনিচ্ছুক শিক্ষিকাদের হাজিরা খাতায় সই করতে দেননি প্রধান শিক্ষিকা। বরং প্রত্যেকের নামের পাশে অনুপস্থিত কথাটা লিখে দিয়েছিলেন। দায়িত্ব পালনে অনিচ্ছুক শিক্ষিকারা শেষ বেলায় হাজিরা খাতা নিয়ে সই করার জন্য গেলে প্রধান শিক্ষিকা স্কুলে তালা বন্ধ করে পুলিশে খবর দেন। শুক্রবার অভিযোগপত্রে শিক্ষিকা অন্নপূর্ণা দেবী লিখেছেন, “আমি গতকাল পরীক্ষা হলে ডিউটি পালন করেছি। আমার কর্তব্য মনে হয়েছিল বলে করেছিলাম। যেহেতু ওঁরা ডিউটি করেননি সেটা নিয়েই আপত্তি ছিল সুস্মিতা দে, কৃষ্ণা বেঁড়েদের। এ দিন সকালে স্কুলে এসে এই নিয়ে আমাকে গালিগালাজ করা হয়। আমাকে মারধরও করা হয়। তাই থানায় গিয়েছি। জেলা স্কুল পরিদর্শকেও জানিয়েছি।” অন্নপূর্ণাদেবীর পাশে দাঁড়িয়েছেন প্রধান শিক্ষিকা মৌ দাশগুপ্ত এবং সহকারি প্রধান শিক্ষিকা কৃষ্ণা চক্রবর্তী।

অন্য দিকে, সুস্মিতা দে, কৃষ্ণা বেঁড়ে, সোনালী চক্রবর্তী, সুচন্দ্রা বন্দ্যোপাধ্যায়দের দাবি, “এমন কোনও ঘটনাই ঘটেনি। যেহেতু বৃহস্পতিবার প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে সংবাদ মাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছিলাম, তাই মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। আমরা সকলে স্বাভাবিকভাবে ক্লাস করেছি। ওঁরা কখন স্কুল থেকে বেরিয়ে থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন তা জানি না।” প্রধান শিক্ষিকা এ দিন বলেন, “বৃহস্পতিবার এমনটা হওয়ার পর যিনি পরীক্ষা হলে তাঁর দায়িত্ব পালন করেছেন সেই অন্নপূর্ণা দলুইয়ের উপর চাপ সৃষ্টি করেছিলেন। কেন তিনি হলে ডিউটি করেছেন এবং যাতে শনিবার পরীক্ষা হলে দায়িত্ব না পালন করেন। ওঁদের কথা না শোনায় ক্লাস ঘরের দরজা বন্ধ করে অন্নপূর্ণার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালান ওই শিক্ষিকারা। আমাদের সকলকে স্কুল থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন ওঁরা। তার পরই পুলিশে অভিযোগ করা হয়েছে।”

তবে শিক্ষিকাদের মধ্যে বিরোধ যা নিয়েই হোক না কেন, পঠনপাঠনে সমস্যা হচ্ছেই। সে কথা স্বীকার করে নিয়েছেন অভিভাবকেরা। শিক্ষিকাদের একাংশও সে কথা মেনে নিয়েছেন। কিন্তু দু’পক্ষের দ্বন্দ্ব কবে থামবে? কে থামাবে? তার সদুত্তর মেলেনি। জেলা স্কুল পরিদর্শক আসরফ আলি মির্ধা বলেন, “আমি শিক্ষিকাদের বলেছি, শিক্ষার উন্নতি ঘটানই আমার কাজ। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ব্যক্তিগত ঝগড়া মেটানো আমার কাজ নয়। নিজেরা সেটা মেটান।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

suri school
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE