Advertisement
E-Paper

স্কুলে বিদ্যুৎ নেই, বিক্ষোভে ছাত্রীরা

বিল বকেয়া থাকায় বিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে সংশ্লিষ্ট দফতর। তার জেরে ছাত্রী বিক্ষোভের মধ্যে পড়লেন স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা। সমস্যা মেটানোর দাবিতে ছাত্রীদের একাংশ কার্যত স্কুলের মধ্যে আটকে রাখলেন তাঁকে। বিঘ্নিত হয় স্কুলের পঠনপাঠন। বৃহস্পতিবার সিউড়ির আরটি গার্লস স্কুলের ঘটনা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক মাস আগে থেকেই বকেয়া বিদ্যুৎ বিল নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে সিউড়ি শহরের ওই স্কুলটিতে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৪ ০০:২৮
স্তব্ধ পাখা। শূন্য ক্লাসঘর। —নিজস্ব চিত্র।

স্তব্ধ পাখা। শূন্য ক্লাসঘর। —নিজস্ব চিত্র।

বিল বকেয়া থাকায় বিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে সংশ্লিষ্ট দফতর। তার জেরে ছাত্রী বিক্ষোভের মধ্যে পড়লেন স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা। সমস্যা মেটানোর দাবিতে ছাত্রীদের একাংশ কার্যত স্কুলের মধ্যে আটকে রাখলেন তাঁকে। বিঘ্নিত হয় স্কুলের পঠনপাঠন। বৃহস্পতিবার সিউড়ির আরটি গার্লস স্কুলের ঘটনা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক মাস আগে থেকেই বকেয়া বিদ্যুৎ বিল নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে সিউড়ি শহরের ওই স্কুলটিতে। প্রায় ১৮০০ ছাত্রী ও ৩৪জন শিক্ষিকা রয়েছেন স্কুলে। বিদ্যুৎ দফতর চলতি বছরের জানুয়ারি থকে মার্চ পর্যন্ত যে বকেয়া বিল পাঠিয়েছিল তার পরিমান ছিল ১লক্ষ ১৫হাজার ২১৬টাকা। স্কুল বিলের প্রাপ্তি স্বীকার না করায় এবং হঠাৎ অস্বাভাবিক অঙ্কের বিলের টাকা দিতে পারবো না জানানোয় গত মার্চেই একবার বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেয় দফতর। কিন্তু মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার প্রাক্কালে ঘটনাটি ঘটেছিল বলে স্কুলের অনুরোধে এবং প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে সে যাত্রা ফের বিদ্যুত সংযোগ জুড়ে দেয় বিদ্যুৎ দফতর। কিন্তু সেই বিল এখনও বকেয়া থাকায় এবং ফাইন সমেত বকেয়া বিলের পরিমান আরও বেড়ে যায়ায়ায় ফের বৃবস্পতিবার সকালে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেয় দফতর। তারপরই ছাত্রী বিক্ষোভ শুরু হয়। প্রধান শিক্ষিকা মৌ দাশগুপ্ত অবশ্য এ জন্য বিদ্যুৎ দফতরের অসহযোগীতাকেই দায়ী করছেন।

কিন্তু স্কুল ফি-র সঙ্গে বিদ্যুৎ বিল বাবদ টাকা দিলেও কেন বিদ্যুৎ থাকবে না স্কুলে, কার্যত এই প্রশ্ন তুলেই এ দিন অভিযোগ জানায় ওই স্কুলের উঁচু ক্লাসের ছাত্রীরা। তাঁদের দাবি, “গরমের মধ্যে ক্লাস করতে বাধ্য হচ্ছি আমরা। স্কুলের একটি বড় অংশ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকলেও প্রধান শিক্ষিকা সহ অন্যান্য শিক্ষিকাদের রুমে আলো পাখা চলছে। অসুবিধার কথা জানালেও প্রধান শিক্ষিকা আমাদের কথা শোনেননি।”

স্কুল সূত্রে খবর, এ দিন দুপুরের দিকে সমস্যা না মিটিয়ে প্রধান শিক্ষিকা স্কুল থেকে চলে যেতে চাইলে তাঁকে বাধা দেয় ছাত্রীরা। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ায় ছাত্রীদের গরমে ক্লাস করতে অসুবিধা হয়েছে একথা মেনে নিলেও তিনি ছাত্রীদের অভিযোগ মানতে চাননি।

তাঁর দাবি, “যে অংশ বিদ্যুৎ রয়েছে সেখানকার ছাত্রীদের টিফিনে ছুটি দিয়ে উঁচু ক্লাসের ছাত্রীদের বসার ব্যবস্থা করে দিয়ে সমাধান সূত্র খুঁজতে আমি যখন জেলা প্রশাসনের কর্তাদের কাছে যাচ্ছিলাম সেই সময় ছাত্রীরা আমাকে আটকায়। তবে ঘটনায় ছাত্রীদের কেউ উস্কানি দিয়েছেন। কে দিয়েছেন কেন দিয়েছেন বলতে পারব না। স্কুলের ছাত্রী পিছু বছরে মাত্র ১২টাকা করে বিদ্যুৎ বিল বাবদ নেওয়া হয়। সেই টাকায় এই অঙ্কের বিল মেটানো সম্ভব নয়।”


ক্লাসের বাইরে হাতপাখা হাতে পড়ুয়ারা। বৃহস্পতিবার ছবিটি তুলেছেন তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।

স্কুলের দাবি, স্কুলে দুটি মিটারের একটি ক্লাসের জন্য। অন্যটি স্কুলের বাকি অংশের জন্য। কিন্তু শীতকালীন সময়ে ওই মিটারে যে অঙ্কের বিল এসেছে, গ্রীষ্মে বা অন্যান্য সময় সেই বিলের পরিমান ছিল অনেক কম। তাঁদের দাবি, বিলের প্রতিলিপি হাতে না পাওয়ায় তাঁরা জানতেই পারেননি যে টাকার অঙ্কটা এত বেশি। মার্চে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার পর দফতরের স্থানীয় স্টেশন ম্যানেজারকে লিখিত ভাবে দুটি বিষয় জানায় স্কুল কর্তৃপক্ষ। সে বিলের অঙ্ক এবং মিটার পরীক্ষা করে দেখার আবেদন করেন তাঁরা। স্কুলের ফান্ডে যথেষ্ট টাকা না থাকায় বকেয়া অঙ্ক যেন কিস্তিতে পরিশোধের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয় সে আবেদনও রাখেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।

প্রধান শিক্ষিকার বলেন, “বিদ্যুৎ দফতর সে অনুরোধ রাখেনি। উল্টে মিটার ঠিক রয়েছে এবং বকেয়া বিলের পরিমান ফাইন সহ বেড়ে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা হয়েছে জানিয়ে স্কুলকে একটা চিঠি দেয়। সেই টাকা স্কুলের পক্ষে এককালীন দেওয়া সম্ভব হয়নি। বার বার কিস্তিতে টাকা দিতে চেয়ে বিল দেবার জন্য পাঠালেও সেটা গ্রহণ করেনি দফতর।”

স্কুল থেকে বিষয়টি জানানো হয়েছিল বিদ্যুৎ বন্টন কম্পানির সিউড়ি ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ারকে। এছাড়া প্রশাসনের সব স্তরেও বিষয়টি জানান তাঁরা। তারপরই এ দিন ফের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।

বিদ্যুৎ বন্টন কম্পানির সিউড়ি ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার তন্ময় মহাপাত্র বলেন, “যেটুকু খোঁজ নিয়ে জেনেছি, যে বিল পাঠানো হয়েছে ওই পরিমান বিদ্যুৎ খরচ করা হয়েছে। মিটারও পরীক্ষা করে, সেটা স্কুলকে জানানোও হয়েছে। বকেয়া টাকা স্কুলকেই দিতে হবে। কিস্তিতে টাকা দেওয়ার কোনও অনুরোধ এসেছিল বলে, আমার জানা নেই। এমনটা হয়ে থাকলে বা স্কুল এ ব্যাপারে নতুন করে আবেদন করলে অবশ্যই বিষয়টি বিবেচিত হবে।”

noelectricity agitation students suri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy