Advertisement
E-Paper

পূর্ণেন্দু-দোলার ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তৃণমূলে

ভাঙড়ের পাওয়ার গ্রিড বিরোধী আন্দোলনে আরাবুল ইসলামই নকশালদের ডেকে এনেছিল বলে তৃণমূলের একাংশের অভিযোগ। এ বার প্রাক্তন নকশাল এবং অধুনা তৃণমূল দুই নেতা-নেত্রীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করল শাসক দলে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:০৯

ভাঙড়ের পাওয়ার গ্রিড বিরোধী আন্দোলনে আরাবুল ইসলামই নকশালদের ডেকে এনেছিল বলে তৃণমূলের একাংশের অভিযোগ। এ বার প্রাক্তন নকশাল এবং অধুনা তৃণমূল দুই নেতা-নেত্রীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করল শাসক দলে। তৃণমূলেরই একাংশের প্রশ্ন— রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু ও রাজ্যসভার সাংসদ এবং আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভানেত্রী দোলা সেন আগে নকশাল আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তা হলে পুরনো যোগাযোগ কাজে লাগিয়ে ভাঙড়ে নকশাল সক্রিয়তার বিষয়ে তাঁরা আগেভাগে দল এবং প্রশাসনকে সতর্ক করেননি কেন?

ভাঙড়ে নকশালদের আনাগোনার ব্যাপারে তিনি কি আগে কোনও আঁচ পেয়েছিলেন? এই প্রশ্নের জবাবে পূর্ণেন্দুবাবু বলেন, ‘‘২০০৬-’০৭ সালে ভাঙড়ে জমি আন্দোলনে নকশালদের ভূমিকা ছিল। তখন প্রদীপ সিংহ ঠাকুরের (সিপিআই (এম-এল) রেড স্টারের রাজ্য সম্পাদক) লোকজন জড়িয়ে পড়েছিলেন। তাঁদের সঙ্গেই ভাঙড়ের বর্তমান নকশাল নেতাদের যোগাযোগ হয়েছে বলে আমার আন্দাজ।’’ তবে নকশালরা দীর্ঘ দিন ধরে ভাঙড়ের গ্রামবাসীদের মদত দিয়েছেন বলে পূর্ণেন্দুবাবু মনে করেন না। তাঁর মতে, এ বারের আন্দোলনের অল্প কয়েক দিন আগে নকশালরা ভাঙড়ে কার্যকলাপ শুরু করেছিল। তিনি কি সেটা আগে জানতে পেরেছিলেন? মন্ত্রীর কথায়, ‘‘ভাঙড়ে স্থানীয় কিছু সমস্যা ছিলই। সেই পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে নকশালরা। আর এ ধরনের ঘটনা মোকাবিলায় আগে থেকে কিছু ভাবাও যায় না। কিছু করাও যায় না।’’ তাৎপর্যপূর্ণ হল, পুর্ণেন্দুবাবু যখন এমন বলছেন, তখন তৃণমূলের শীর্ষ সারির একাধিক নেতার মতে ভাঙড়ে গত ছ’মাসেরও বেশি সময় ধরে সক্রিয় ছিলেন নকশাল নেতারা।

দোলাও দাবি করেছেন, ভাঙড়ে নকশালদের যাতায়াতের ব্যাপারে আগে তিনি কিছু জানতেন না। দোলা বলেন, ‘‘কোনও আঁচ পেলে দলকে নিশ্চয়ই জানাতাম। দলকে আমি ভালবাসি। আর যে নকশালরা এখন ভাঙড়ে আন্দোলন করছেন, তাঁদের সঙ্গে আমি কখনও সংগঠন করিনি।’’ তবে তৃণমূল সূত্রের খবর, ভাঙড় আন্দোলনের ধৃত নেত্রী শর্মিষ্ঠা চৌধুরী, নেতা অলীক চক্রবর্তী এবং রেড স্টারের রাজ্য সম্পাদক প্রদীপবাবুর সঙ্গে নকশাল শিবিরে থাকাকালীন বহু বার যৌথ আন্দোলন করেছেন পূর্ণেন্দুবাবু এবং দোলা। আইএনটিটিইউসি-র সর্বভারতীয় সভাপতি প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও এক কালে নকশাল শিবিরেই ছিলেন। সেই সময়ে তাঁর সঙ্গেও শর্মিষ্ঠা এবং অলীকের ভাল সম্পর্ক ছিল।

শাসক দলের এক নেতার কথায়, আসলে এঁরা এতো বেশি দলীয় রাজনীতিতে ব্যস্ত যে পুরনো বন্ধুদের সঙ্গেই কোনও যোগাযোগ নেই। তা ছাড়া নকশালরাও এখন আর পূর্ণেন্দুবাবু এবং দোলার সঙ্গে অতীতের সম্পর্ক বজায় রাখতে রাজি নন। ১৯৭৬ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত পূর্ণেন্দুবাবু যাঁদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নকশালপন্থী রাজনীতি করতেন, তাঁদের চোখে তিনি এবং দোলা এখন কমিউনিস্ট তো ননই, এমনকী, বামপন্থীও নন। বহু গণ আন্দোলন এবং শ্রমিক আন্দোলনে পূর্ণেন্দুবার এক কালের ঘনিষ্ঠ সহযোগী শ্রমিক নেতা কুশল দেবনাথের কথায়, ‘‘পূর্ণেন্দুদা তো এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অগণতান্ত্রিক কাজের শরিক! দোলাও তা-ই। ওঁদেরকে কমিউনিস্ট কেন, বামপন্থী বলেও মনে করে না নকশালপন্থীদের কেউই। যে দিন ওঁরা মমতার হাত ধরেছেন, সে দিন থেকেই আমাদের সঙ্গে ওঁদের যোগাযোগ নেই। এখন ওঁরা শুধুই তৃণমূলী।’’

Purnendu Basu Dola Sen Bhangar Power Grid Controversy
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy