Advertisement
E-Paper

মাধ্যমিকে ‘প্রশ্নফাঁস’! ‘মাথাব্যথা’র কারণ মালদহ, মানছেন পর্ষদ সভাপতিও

পর্ষদ সভাপতি এ দিন জানান, পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল নিয়ে ঢোকার চেষ্টার অভিযোগে রাজ্য জুড়ে ছ’টি মোবাইল উদ্ধার হয়েছে। পরীক্ষাকেন্দ্রের ভিতর থেকে মোবাইল মেলায় ন’জন পরীক্ষার্থীর সব পরীক্ষা বাতিল হয়েছে।

অভিজিৎ সাহা, সৌমিত্র কুন্ডু

শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৭:১২
আলিপুরদুয়ার শহর লাগোয়া বীরপাড়া এলাকায় একটি স্কুল পরির্দশনে পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্যদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়( সাদা টুপি)।

আলিপুরদুয়ার শহর লাগোয়া বীরপাড়া এলাকায় একটি স্কুল পরির্দশনে পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্যদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়( সাদা টুপি)। —নিজস্ব চিত্র।

মধ্যশিক্ষা পর্ষদের রক্তচাপ বাড়িয়ে রেখেছে মালদহ জেলা। গত কয়েক দিন যে ক’টা ক্ষেত্রে প্রশ্নপত্র ‘ফাঁসের’ অভিযোগ উঠেছে, সবগুলির সঙ্গেই মালদহের যোগ আছে। সোমবার ইতিহাস পরীক্ষার দিনেও গোটা রাজ্যে যে ন’জন পড়ুয়ার কাছ থেকে মোবাইল ফোন মিলেছে, তাদের মধ্যে তিন জন মালদহের। ঘটনাচক্রে, পর্ষদ সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়ও এ দিন মালদহে ছিলেন। তিনি দাবি করেন, এর পিছনে বড় দুর্নীতি রয়েছে। ‘কিউআর কোড’ দিতেই সেই দুর্নীতি বন্ধ হওয়ার জোগাড়। তাই অনেকের ‘স্বার্থে’ ঘা লেগেছে। তিনি আরও দাবি করেন, এই দুর্নীতি চক্রের সঙ্গে মালদহ জেলার যোগ নেই।

পর্ষদ সভাপতি এ দিন জানান, পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল নিয়ে ঢোকার চেষ্টার অভিযোগে রাজ্য জুড়ে ছ’টি মোবাইল উদ্ধার হয়েছে। পরীক্ষাকেন্দ্রের ভিতর থেকে মোবাইল মেলায় ন’জন পরীক্ষার্থীর সব পরীক্ষা বাতিল হয়েছে। উত্তর দিনাজপুরে ভুয়ো পরীক্ষার্থী আটক হয়েছে। নকলে বাধা দেওয়ায় জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া বারোপেটিয়া পাঁচিরাম নাহাটা স্কুলে এক দল পরীক্ষার্থী ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। তবে এ দিন কোনও প্রশ্ন ফাঁস হয়নি বলেই দাবি পর্ষদ সভাপতির।

রামানুজ এ দিন অভিযোগ করেন, ‘‘আসলে পরীক্ষা ব্যবস্থাকে বিঘ্নিত করার ষড়যন্ত্র চলছে। মালদহে বার বার হচ্ছে। প্রশ্নপত্রে কিউআর কোড দিতেই ১০০ কোটি টাকার দুর্নীতি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাই অনেকের ব্যথা লেগেছে।’’ এর পরেই তিনি বলেন, ‘‘মালদহের মানুষ কিউআর কোড নিয়ে প্রশ্ন তোলেননি। ফলে, ব্যথা কাদের, তা আমরা বুঝতে পারছি।’’

পর্ষদ সভাপতির দাবি, ‘‘কিছু পড়ুয়া, যারা নিজেদের পড়াশোনার ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবে না, তাদের কাজে লাগিয়ে এ সব করতে বাইরে থেকে চক্র সক্রিয় রয়েছে। পড়ুয়াদের একাংশ টাকা দিয়ে সেই ধরনের (হোয়াটসঅ্যাপ) গ্রুপের সদস্য হচ্ছে।’’ মঙ্গলবার পর্ষদ সভাপতির মালদহের বিভিন্ন স্কুলে যাওয়ার কথা।

সূত্রের দাবি, শনিবার মালদহে ‘প্রশ্ন ফাঁসের’ তদন্তে নেমে মালদহে ‘২০২৪ এমপি কোশ্চেন আউট’ নামে এক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের হদিস পায় পর্ষদ। সে গ্রুপে ১৫১ জন সদস্য ছিল। এর মধ্যে, মানিকচক-ইংরেজবাজারের এক কোচিং সেন্টারের মালিকের নাম মিলেছিল, দাবি পুলিশের। পুলিশ জানিয়েছে, কোচিং সেন্টারের মালিক গা ঢাকা দিয়েছে। গ্রুপের অন্য ‘অ্যাডমিন’ এবং সদস্যদের সম্পর্কেও জানার চেষ্টা চলছে। পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, “এক পরীক্ষার্থীর মোবাইল থেকে গ্রুপটির সন্ধান মেলে।”

সূত্রের দাবি, শনিবার এনায়েতপুর হাই স্কুলে সাত পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে মোবাইল ফোন উদ্ধার করে এই গ্রুপের সন্ধান মেলে। পরীক্ষার্থীরা ছিল গোপালপুর হাই স্কুলের। এ দিন সেই গোপালপুর হাই স্কুলের আর এক ছাত্রীকে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইতিহাসের পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয়নি। এনায়েতপুর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক বদিউদজামান বলেন, “পর্ষদের নির্দেশে ওই ছাত্রীর সব পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে।” যদিও মেয়েটির দাবি, “আমার কাছে মোবাইল ছিল না। শৌচাগারে গেলে, আমার প্রশ্নপত্র নিয়ে কে বা কারা ছবি তুলে সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়েছে।” তাঁর বাবা দাবি করেছেন, আদালতের দ্বারস্থ হবেন। এ দিনও ইংরেজবাজারের রায়গ্রাম হাই স্কুলে মোবাইল নিয়ে ঢোকার চেষ্টা করে তিন পরীক্ষার্থী। তাদের মোবাইল ফোনগুলি বাজেয়াপ্ত করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।

প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়ে তৃণমূলকে নিশানা করেছেন বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা। তাঁর অভিযোগ, “তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় এক জনকে তাঁদের সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক পদে বসিয়েছেন। তিনিই কিউআর কোড নিয়ে প্রশ্ন ফাঁস করছেন।” ঋতব্রত পাল্টা বলেন, “মধ্যশিক্ষা পর্ষদ কাকে কোন পদে বসাবে, কাকে, কী দায়িত্ব দেবে, সেটা তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ঠিক করেন না।”

WBBSE
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy