Advertisement
E-Paper

মানা হয়েছিল নমুনা সংগ্রহ করার নিয়ম? সংরক্ষণ করা হয়েছিল যথাযথ ভাবে? কী মনে করছেন তদন্তকারীরা?

সূত্রের খবর, মাঝের তিন দিন আর জি কর মেডিক্যাল কলেজেই রেখে দেওয়া হয়েছিল সংগৃহীত নমুনা। এর পরে তা পাঠানো হয় কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে।

চন্দন বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৭:১৩
Representative Image

—প্রতীকী ছবি।

আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক-পড়ুয়াকে খুন এবং ধর্ষণের ঘটনা সামনে এসেছিল ৯ অগস্ট। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে নমুনা পাঠানো হয়েছিল ১৩ অগস্ট। মাঝে তিন দিন। এই তিন দিনে কী হয়েছিল? নমুনা যথাযথ ভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছিল? মানা হয়েছিল নমুনা সংগ্রহ করার নিয়ম? চার ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় নমুনা সংরক্ষণ করার নিয়ম মানা হয়েছিল কি না, সোমবার সুপ্রিম কোর্টে সেই প্রশ্ন ওঠার পরে তদন্তকারীদের সূত্রে যা জানা যাচ্ছে, তা হল, ওই ভাবে নমুনা সংরক্ষণ করা তো দূরস্থান, ঘাটতি ছিল নমুনা সংগ্রহ করার পদ্ধতিতেও।

সূত্রের খবর, মাঝের তিন দিন আর জি কর মেডিক্যাল কলেজেই রেখে দেওয়া হয়েছিল সংগৃহীত নমুনা। এর পরে তা পাঠানো হয় কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে। ওই নমুনার ভিত্তিতে যে রিপোর্ট এসেছে, নিশ্চিত হওয়ার জন্য তা পাঠানো হয়েছে এমস এবং কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে। সূত্রের খবর, ওই রিপোর্টে যে তথ্য মিলেছে, তা যথাযথ নমুনা সংগ্রহ না হওয়ার দিকেই আঙুল তুলছে।

ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের বড় অংশই জানাচ্ছেন, খুন-ধর্ষণের ঘটনাস্থলে যাওয়া ফরেন্সিক আধিকারিকের এমন স্পর্শকাতর অপরাধের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ হওয়া প্রয়োজন। নমুনা সংগ্রহের পদ্ধতিতে সামান্য এ-দিক ও-দিক হলেই তদন্তের গতি অন্য দিকে ঘোরার আশঙ্কা থাকে। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, যে হেতু আর জি করের ঘটনায় তরুণী চিকিৎসককে খুন ও ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে, তাই ফরেন্সিক নমুনা সংগ্রহকারী দলে এক জন ‘ক্রাইম সিন’ বিশেষজ্ঞ থাকা প্রয়োজন। ঘটনাস্থলে থাকা জামা-কাপড়, বিছানা, দেহ থেকে শারীরিক তরল বা টিস্যুর নমুনা সংগ্রহ এবং উপযুক্ত প্যাকেটবন্দি করার ক্ষেত্রে এক জন ‘বায়োলজিস্ট’-এর ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে আদৌ কি তা করা হয়েছিল? প্রশ্ন তুলছেন বিশেষজ্ঞেরা।

তাঁরা জানাচ্ছেন, ঘটনাস্থল থেকে সংগ্রহ করা নমুনা দীর্ঘ দিন ঠিক রাখতে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় রাখার পাশাপাশি সব সময় ‘ইডিটিএ সলিউশন’ দিয়ে রাখতে হয়। না হলে নমুনার বিকৃতি ঘটতে পারে। সংগৃহীত নমুনা কোনও ধরনের প্লাস্টিকের জিনিসে রাখা যায় না। এক ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞের কথায়, “সাধারণত কাগজের বিশেষ ধরনের ব্যাগ আমরা ব্যবহার করি। তার পরে সেটি সিল করে তুলে দেওয়া হয় তদন্তকারীদের হাতে। যত দিন পর্যন্ত না সেটি পরীক্ষাগারে যাচ্ছে, নিদিষ্ট তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হয়।”

ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, এমন অপরাধে রক্তের নমুনাও সংগ্রহ করা হয়। তা করতে ‘কটন গজে’ সংগ্রহ করে সাধারণ তাপমাত্রায় শুকোতে হয়। পরে ‘কটন গজের’ দুই বিপরীত পৃষ্ঠে সাদা কাগজ দিয়ে মুড়ে খাম বন্দি করতে হয়। এক ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ বলেন, “কটন গজে রক্ত শুকোনোর জন্য ‘হিট ট্রিটমেন্ট’ ব্যবহার করা যায় না। সাধারণ তাপমাত্রায় রেখে শুকোনো হয়। কিন্তু এই ক্ষেত্রে এত কম সময়ে তা হয়েছিল কি না, প্রশ্ন থাকছেই।” আর জি কর কাণ্ডে সংগ্রহ করা ফরেন্সিক নমুনা হাসপাতালে দু’দিন রেখে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এক ফরেন্সিক আধিকারিকের কথায়, “নিয়ম অনুযায়ী, নমুনা সংগ্রহের পরে একটি ‘হ্যান্ডওভার’ ফর্ম ফিল আপ করতে হয়। ফর্মের এক দিকে ফরেন্সিক আধিকারিক সই করেন। অন্য দিকে সই থাকে তদন্তকারী আধিকারিকের। কোনও ভাবেই সংগ্রহ করা নমুনা ঘটনাস্থল বা আশপাশে রাখা যায় না। তদন্তকারীরা তা পরীক্ষাগারে না পাঠানো পর্যন্ত নিজেদের হেফাজত বা মালখানায় রাখেন। যদি সব নিয়মই মানা হয়ে থাকে, তা হলে এত প্রশ্ন কেন?” লালবাজারের কোনও কর্তা যদিও কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

R G Kar Hospital CBI Supreme Court of India
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy