রাজ্যসভায় তিন মাসে নিষ্পত্তি হয়ে সাংসদ পদ খারিজ। আর বিধানসভায় শুনানি অন্তহীন!
রাজ্যসভার সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতেই এ রাজ্যের ‘দলবদলু’ বিধায়কদের ভাগ্য নির্ধারণ নিয়ে ফের প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। তাদের দাবি, আলাদা আলাদা করে দল বদল করায় দলত্যাগ-বিরোধী আইনে ওই বিধায়কদের সদস্যপদ খারিজ হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু কংগ্রেস ও বাম, দুই পরিষদীয় দলের আবেদনের চূড়ান্ত মীমাংসা পিছিয়েই চলেছে!
গত বছরের বিধানসভা ভোটের পরে দফায় দফায় তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বিরোধী শিবিরের ১০ জন বিধায়ক। তাঁদের মধ্যে ৯ জনই কংগ্রেস থেকে, এক জন সিপিএমের। ওই ১০ জনের মধ্যে একমাত্র মানস ভুঁইয়া তৃণমূলের টিকিটে রাজ্যসভার সাংসদ হয়ে যাওয়ায় বিধায়ক-পদ থেকে ইস্তফা দেন। বাকিরা সকলেই বাইরে তৃণমূলে যোগ দিলেও বিধানসভার শুনানিতে দাবি করে চলেছেন, তাঁরা দল বদল করেননি! অসুস্থতা বা অন্যান্য কারণ দেখিয়ে অনেকে শুনানিতে গরহাজির থাকছেন। তখন আবার অন্য দিন ধার্য করা হচ্ছে।
বিহারে মহাজোট ভেঙে নীতীশ কুমার বিজেপি-র সমর্থনে নতুন করে সরকার গড়ার জেরে জেডিইউ-তে কোন্দল বেঁধেছিল। প্রবীণ নেতা শরদ যাদব নীতীশের সিদ্ধান্ত সমর্থন করেননি। জেডিইউ-এর অভিযোগের প্রেক্ষিতে শরদ ও আলি আনোয়ারের সাংসদ-পদ খারিজ করে দিয়েছেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান। সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি প্রশ্ন তুলেছেন, অনেক গুরুতর অভিযোগ জমা থাকা সত্ত্বেও রাজ্যসভা ও লোকসভা বহু সাংসদের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেয়নি। নারদ-কাণ্ডে লালকৃষ্ণ আডবাণীর নেতৃত্বাধীন লোকসভার এথিক্স কমিটি অভিযুক্ত সাংসদদের নিয়ে কোনও শুনানিই করেনি। অথচ এ ক্ষেত্রে মূল বিবাদের নিষ্পত্তির আগেই শরদের মতো বর্ষীয়ান সাংসদের পদ খারিজ করে দেওয়া হল!
সংসদের ওই সিদ্ধান্ত সামনে রেখেই বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘দিল্লিতে শাসক বিজেপি-র সুবিধার জন্য দ্রুত সাংসদ-পদ খারিজ করে দেওয়া হয়। এখানে শাসক তৃণমূল চায় বলে দলবদল করা বিধায়কদের নিয়ে সিদ্ধান্ত দিনের পর দিন পিছোতেই থাকে। আবার এই তৃণমূলের সুবিধার জন্য বিজেপি এথিক্স কমিটিতে চুপচাপ থাকে।’’ বিরোধী দলের মুখ্য সচেতক, কংগ্রেসের মনোজ চক্রবর্তীরও অভিযোগ, ‘‘দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি যে, শাসক দলের মদতে অনাচার চলছে! গণতান্ত্রিক রীতি-নীতি কিছুই মানা হচ্ছে না।’’
বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য মুখ খোলেননি। তবে বিধানসভার সচিবালয় সূত্রে বলা হচ্ছে, সংশ্লিষ্ট বিধায়কদের আত্মপক্ষ সমর্থনের পর্যাপ্ত সুযোগ দিয়েই যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার, নেওয়া হবে। তার জন্য সময় লাগতেই পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy