উচ্চ মাধ্যমিকের চতুর্থ সিমেস্টারে প্রশ্ন কেমন হবে, তার নম্বরবিভাজন প্রকাশ করেছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। কিন্তু পড়ুয়া ও শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, বছরের শুরুতে যে নম্বর বিভাজন করে মডেল প্রশ্ন প্রকাশ করেছিল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ, তার থেকে সম্প্রতি প্রকাশিত নম্বরবিভাজনে কয়েকটি বিষয়ের ক্ষেত্রে বেশ কিছুটা আলাদা রয়েছে। নতুন করে প্রশ্নের নম্বর বিভাজন প্রকাশিত হওয়ায় পরীক্ষার সময়ে উত্তর লেখার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তেপারে পরীক্ষার্থীরা। তাই নতুন নম্বর বিভাজন অনুযায়ী মডেল প্রশ্ন নতুন করে সংসদের তরফ থেকে প্রকাশ করার দাবি করছেন শিক্ষক ও পরীক্ষার্থীদের একাংশ।
শিক্ষকদের একাংশের মতে, নতুন করে নম্বর বিভাজনের ফলে পরীক্ষার্থীরা সব থেকে বেশি সমস্যায় পড়তে পারে বাংলা পরীক্ষার সময়ে। বাংলার শিক্ষিকা সুমনা সেনগুপ্তের মতে, আগে যে মডেল প্রশ্ন ছিল, সেখানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরেরডাকঘর নাটক থেকে পাঁচ নম্বরের দু’টি প্রশ্ন আসার কথা। সেই মতোপ্রশ্নও ছিল মডেল প্রশ্নপত্রে। এখন নতুন নম্বর বিভাজনে পাঁচ নম্বরের দু’টি প্রশ্ন না রেখে তিন নম্বরেরদু’টি এবং দুই নম্বরের দু’টি প্রশ্নকরে দেওয়া হয়েছে। কবিতারক্ষেত্রেও তা-ই করা হয়েছে। সুমনা বলেন, “এর ফলে তিন নম্বরের উত্তরের জন্য কেমন প্রশ্ন হতে পারে বা দুই নম্বরের জন্য কেমন প্রশ্নহবে, সেই নিয়ে কোনও ধারণা থাকছে না পরীক্ষার্থীদের। ওরা হয়তো তিন নম্বরের প্রশ্নকেই পাঁচ নম্বরেরমতো বিস্তারিত ভাবে লিখতে যাবে। সে ক্ষেত্রে সময়ে শেষ করতেপারবে না। একটা বিভ্রান্তি তৈরিহবে। তা ছাড়া ডাকঘরের মতোনাটকে বেশ কিছু প্রশ্ন আছে, যার পূর্ণ মান পাঁচ নম্বরই থাকা উচিত।সেই প্রশ্নগুলি তিন নম্বরের হয়ে গেলে উত্তর দিতে অসুবিধা হবে পরীক্ষার্থীদের।”
এই সব বিভ্রান্তি দূর করতে অবিলম্বে মডেল প্রশ্ন প্রকাশ করার দাবি করেছে কিছু শিক্ষক সংগঠন। মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা অনিমেষ হালদার বলেন, “এ বার তৃতীয় সিমেস্টার পরীক্ষার সময়ে বেশ কিছুঅসুবিধা হয়েছে পরীক্ষার্থীদের। কয়েকটা বিষয়ে সময়ের অভাবে সব প্রশ্নের উত্তর লিখতে পারেনি পরীক্ষার্থীরা। নতুন করে যে নম্বর বিভাজন দেওয়া হল, তা অনুযায়ী মডেল প্রশ্ন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ প্রকাশ করলে পরীক্ষার্থীদের উত্তর লেখার ক্ষেত্রে অসুবিধা হবে না। সময় মতো তারা শেষ করতে পারবে। তৃতীয় সিমেস্টারে যে অসুবিধা হয়েছিল, তা যেন চতুর্থতে না হয়, সেটাই দেখতে হবে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদকে।”
চতুর্থ সিমেস্টার শুরু হচ্ছে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে। চতুর্থ সিমেস্টারের ক্লাস এখনও শুরু হয়নি। তবে বেশ কিছু পড়ুয়া জানাচ্ছে, স্কুলের জন্য বসে না থেকে ইতিমধ্যে চতুর্থ সিমেস্টারের আগের মডেল প্রশ্ন অনুযায়ী পড়াশোনা শুরু করে দিয়েছিল তারা। সেই মতো সহায়িকা বইও কিনে ফেলেছিল। এখন সেই সব সহায়িকা বই তাদের সে ভাবে আর কাজে আসবে না। আবার নতুন করে সহায়িকা বই বেরোলে সে সব কিনে পড়তে হবে। কিন্তু তার আর সময় কোথায়?
এ দিকে শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, চতুর্থ সিমেস্টারের সব বই বাজারে চলে এলেও এখনও সংস্কৃত বই বাজারে আসেনি। পুজোর আগেই এই বই প্রকাশিত হওয়ার কথা বলেছিল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। কবে এই বই বেরোবে, তার দিকে তাকিয়েইবসে রয়েছে সংস্কৃত বিষয় নেওয়া পড়ুয়ারা।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ জানাচ্ছে, কিছু দিনের মধ্যেইসংসদের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকরয়েছে। সেই বৈঠকে নম্বরবিভাজন থেকে শুরু করে চতুর্থ সিমেস্টারে আদৌ সময় বাড়ানোহবে কিনা, এ রকম যাবতীয় সবসমস্যা এবং অভিযোগ নিয়ে আলোচনা করা হবে। সেখানে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, তা-ও দ্রুত জানিয়ে দেওয়া হবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)