স্বর্ণ ব্যবসায়ী স্বপন কামিল্যা কার নির্দেশে পশ্চিম মেদিনীপুরে গিয়েছিলেন এবং কার নির্দেশেই বা তাঁকে খুন করা হয়েছিল, সে বিষয়ে ধৃত অভিযুক্তদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু তথ্য জেনেছেন বিধাননগর পুলিশের তদন্তকারীরা। তবু রহস্যের কিনারা পুরোপুরি হয়নি। ওই ঘটনায় আরও দুই ব্যক্তির ভূমিকা গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
স্বপনকে খুনের ঘটনায় প্রথমে রাজু ঢালি ও তুফান থাপার পরে তৃণমূল নেতা সজল সরকারকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাদের জেরা করে মিলেছে গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য। সেই সূত্রে এর পরে ধৃত তৃণমূল নেতার গাড়িচালক বিবেকানন্দ সরকার ওরফে সোনাইকে গ্রেফতার করে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা শুরু করেছেন তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, সোনাইয়ের মোবাইল বাজেয়াপ্ত করে ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। পুলিশি জেরার মুখে সোনাই জানিয়েছে, সে কার নির্দেশে পশ্চিম মেদিনীপুরে গিয়েছিল। সেই সঙ্গে তাকে জেরা করে খুনে ব্যবহৃত সামগ্রীর খোঁজ করছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, গোটা ঘটনার নেপথ্যে প্রধান মাথা কে, সে বিষয়ে জানতে বাকি অভিযুক্তদের জেরা করে কিছু তথ্য মিলেছিল। সোনাইয়ের বয়ানের সঙ্গে সেই তথ্য মোটামুটি মিলে যাচ্ছে। কিন্তু এত কিছু জানার পরেও অবশ্য ওই ‘মাথাকে’ কবে তদন্তের আওতায় নিয়ে আসা হবে, সে প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে।
স্বপনকে খুন ও অপহরণের ঘটনায় আগেই নাম জড়িয়েছে জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জের বিডিও প্রশান্ত বর্মণের। সূত্রের খবর, সম্প্রতি জানা গিয়েছে যে, সেই বিডিও পিএইচ ডি করছেন মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। সম্প্রতি তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হয়েছেন। এই প্রসঙ্গে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দীপক করের বক্তব্য, ‘‘আমার খেয়াল নেই। আসলে এখান থেকে অনেকেই পিএইচ ডি করেন। সকলের নাম মনে রাখা কঠিন।’’ বাংলার বিভাগীয় প্রধান সুজিত পালও এ ব্যাপারে কিছু বলতে নারাজ। তবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিক মানছেন যে, ‘‘কয়েক মাস আগে উনি পিএইচ ডি করার জন্য ভর্তি হয়েছেন। সে সময়ে জানতাম না যে, উনি বিডিও। পরে জেনেছি।’’
কী বিষয়ে পিএইচ ডি করছেন প্রশান্ত? বাংলা বিভাগের এক অধ্যাপকের জবাব, ‘‘বিস্তারিত কিছু জানি না। শুনেছি, উনি নাটক নিয়ে কাজ করছেন।’’ খুনের মামলায় প্রশান্তের নাম জড়িয়েছে শুনে ওই অধ্যাপক বলেন, ‘‘ওটা বিচারাধীন বিষয়। আমাদের কোর্সের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)