আগামী আর্থিক বছরের (২০২৫-২৬) জন্য কেন্দ্রীয় বাজেটে গ্রামোন্নয়ন খাতের বরাদ্দ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। কিন্তু তাতে কি রাজ্যের বরাদ্দের খরা কাটবে—চর্চা প্রশাসনের অন্দরে। যদিও পঞ্চায়েত দফতরের বক্তব্য, অঙ্কশাস্ত্রের বদলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে পশ্চিমবঙ্গকে বঞ্চিত রাখা হচ্ছে। ফলে এখনই উচ্চাশার জায়গা নেই।
শনিবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের বাজেট পেশের পরে সংশ্লিষ্ট নথিতে দেখা যাচ্ছে, গ্রামোন্নয়ন খাতে সামগ্রিক ভাবে বরাদ্দ বৃদ্ধির প্রস্তাব রয়েছে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা। ২০২৪-২৫ (সংশোধিত) বাজেটে গ্রামোন্নয়ন খাতে কেন্দ্রের বরাদ্দ ছিল প্রায় ১ লক্ষ ৭৩ হাজার ৯১২ কোটি টাকা। আগামী বছরের জন্য প্রায় ১ লক্ষ ৮৭ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। তার মধ্যে ২২,৪০৫ কোটি টাকা বেড়ে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় (গ্রামীণ) প্রস্তাবিত বরাদ্দ হয়েছে ৫৪,৮৩১ কোটি টাকা। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনাতেও বরাদ্দ সাড়ে চার হাজার কোটি বেড়ে হয়েছে ১৯ হাজার কোটি টাকা। তবে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে বরাদ্দের হেরফের হয়নি। ২০২৪-২৫ আর্থিক বছরের (সংশোধিত) হিসাবে ওই প্রকল্পের জন্য ৮৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল কেন্দ্র। ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের জন্য ওই প্রকল্পে বাজেট প্রস্তাব একই রাখা হয়েছে।
গত কয়েক বছর ধরে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে রাজ্যের বরাদ্দ বন্ধ রেখেছে কেন্দ্র। ২০২২ সালের নভেম্বরে আবাসের উপভোক্তা তালিকায় অনুমোদন দিলেও, বরাদ্দ ছাড়েনি তারা। আবার গ্রাম সড়কেও বরাদ্দ না দেওয়ার অভিযোগ তোলে রাজ্য। অর্থ কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, ২০২৪-২৫ বছরের (বাজেটে) আবাস খাতে ৫৪,৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব কেন্দ্র রাখলেও, ওই বছরের (সংশোধিত) হিসাবে খরচ হয়েছে অনেক কম—৩২,৪২৬ কোটি টাকা। সেই বছর কেন্দ্রের কোনও বরাদ্দই পায়নি রাজ্য। ফলে সংশ্লিষ্ট মহলের আশা, বরাদ্দ বৃদ্ধিরপ্রস্তাবে এ বার পরিস্থিতির হয়তো একটা বদল হতে পারে। রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, ‘‘আমরা বঞ্চিত হচ্ছি রাজনৈতিক ভাবে। সেখানে অঙ্কশাস্ত্র বা যুক্তির কোনও জায়গা নেই। তাই বরাদ্দ বৃদ্ধির যুক্তি নিয়ে আশা করলেও চলবে না। অনেক আশ্বাস আগে পাওয়া গিয়েছে। বাজেটে কেন্দ্র যা-ই প্রস্তাব করুক, না আঁচালে আর বিশ্বাস নেই।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)