E-Paper

টাকা ফেরত কী ভাবে, ‘অযোগ্যদের’ মধ্যে ধন্দ

তবে সবার সুর নরম নয়। শিলিগুড়ির এক চাকরি হারানো শিক্ষক বলেন, “এত দিন কাজ করেছি। পারিশ্রমিক নিয়েছি। বসে থেকে টাকা নিইনি। এখন অযোগ্য বলা হচ্ছে। অথচ, স্কুলে অনেক দায়িত্ব সামলাতে হয়েছে। টাকা ফেরত দেব কী ভাবে?”

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২৫ ০৮:২০

—ফাইল চিত্র।

কেউ ঝাঁঝিয়ে উঠছেন। কেউ তাকিয়ে আদালতের দিকে। ওঁরা সেই ৬,২৭৬ জনের অংশ, আদালত যাঁদের অযোগ্য হিসাবে চিহ্নিত করেছে। বেতনও ফেরত দিতে বলেছে। তবে টাকা ফেরত কী ভাবে দিতে হবে, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে অনেকের মধ্যে।

উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের একটি হিন্দি মাধ্যম স্কুলের চাকরি হারানো তেমন দুই শিক্ষক শুক্রবার বললেন, “কী ভাবে টাকা ফেরত দিতে হবে তা নিয়ে এখনও কিছু জানানো হয়নি। হিসাব করলে যে টাকা ফেরাতে হবে, দেখা যাবে, বাড়ি বেচেও তা জোগাড় করতে পারব না। আদালতই বলে দিক, কী করব!” মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামের উচ্চ বিদ্যালয়ের চাকরিহারা এক শিক্ষিকা বলেন, “ভাই দুর্ঘটনায় পঙ্গু। চিকিৎসা করাচ্ছিলাম। সেটাও বন্ধ হওয়ার উপক্রম। আমার পক্ষে বেতনের টাকা ফেরানো সম্ভব নয়।” কোচবিহার শহরতলির এক স্কুলের এক শিক্ষাকর্মী রয়েছেন ‘অযোগ্য’-তালিকায়। তাঁর বক্তব্য, “সংসারে টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। এখন সুদ-সহ টাকা কী ভাবে ফেরত দেব?”

তবে সবার সুর নরম নয়। শিলিগুড়ির এক চাকরি হারানো শিক্ষক বলেন, “এত দিন কাজ করেছি। পারিশ্রমিক নিয়েছি। বসে থেকে টাকা নিইনি। এখন অযোগ্য বলা হচ্ছে। অথচ, স্কুলে অনেক দায়িত্ব সামলাতে হয়েছে। টাকা ফেরত দেব কী ভাবে?” দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগরের একটি হাই স্কুলের চাকরি হারানো এক শিক্ষিকাও বলেন, “এত দিনের পরিশ্রমের মূল্য নেই? তার দাম কে দেবে?” পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের একটি স্কুলের চাকরিহারা এক শিক্ষাকর্মী মানছেন, “অযোগ্যদের তালিকায় ছিলাম। তখন এক বার টাকা ফেরতের কথাও কানে এসেছিল। কিন্তু কোনও নির্দেশ পাইনি।” এ ব্যাপারে কী ভাবে পদক্ষেপ হবে তা নিয়ে স্পষ্ট ধারণা মেলেনি সরকারি মহলেও। বাঁকুড়া জেলা স্কুলশিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের একাংশের অনুমান, “স্কুলে খরচ না হওয়া কোনও প্রকল্পের টাকা বা বাড়তি আসা অর্থ ‘ট্রেজারি চালান’-এর মাধ্যমে সরকারকে ফেরানো হয়। এ ক্ষেত্রেও সেই পদ্ধতিতে বেতনের টাকা ফেরানো হতে পারে।” বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও ধারণা তা-ই। সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি নিজের কর্মক্ষেত্রে গিয়ে চেকে টাকা দেবেন। পরে, তা স্কুল ও সংশ্লিষ্ট জেলার স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফে ‘ট্রেজারি চালান’ মারফত ফেরত যাবে সরকারের ঘরে।

বেশ কিছু চাকরি হারানো শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীকে টাকা ফেরতের প্রসঙ্গ টেনে বিব্রত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বাঁকুড়ার পাত্রসায়রের এক শিক্ষক বলেন, “অনেকেই ফোন করে জানতে চাইছেন, কী ভাবে টাকা ফেরত দেব! একে চাকরি হারিয়ে জলে পড়েছি। তার উপরে এই বিড়ম্বনা”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

West Bengal Recruitment Case

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy