২০১৬ সালের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ১৮০৪ জন দাগি শিক্ষকের নাম শনিবার রাতে প্রকাশ করেছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন। শনিবার বেশি রাতে আরও দু’জন দাগি শিক্ষকের নাম ওই তালিকায় জুড়ল এসএসসি। অর্থাৎ, এ বার দাগি শিক্ষকের সংখ্যা হল ১৮০৬। শিক্ষা দফতরের এক কর্তার ব্যাখ্যা, ‘‘ভাল করে যাচাই করে এই দু’টি নাম এসেছে। তাই তালিকায় যোগ করা হয়েছে।’’ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে ওয়েবসাইটে দাগিদের তালিকা প্রকাশ করে এসএসসি।
তবে প্রশ্ন উঠছে ৭ এবং ১৪ সেপ্টেম্বর যে নতুন পরীক্ষা এসএসসি নিতে চলেছে সেখানে নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ মিলিয়ে ১৪০০ জন দাগি শিক্ষক অ্যাডমিট কার্ড কী ভাবে পেয়ে গেলেন? তাঁদের অ্যাডমিট কার্ড দেওয়ার আগে কেন বিষয়টি যাচাই করা হল না? চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চের শিক্ষকদের অভিযোগ, যখন সুপ্রিম কোর্ট এক জনও দাগি শিক্ষক পরীক্ষা দিতে না-পারেন বলে রাজ্য সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে তখন পরীক্ষার্থীদের অ্যাডমিট কার্ড দেওয়া বা আবেদন গ্রহণ করার সময়ে কেন কারা দাগি তা যাচাই করা হয়নি? এর সূত্রে সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের অভিযোগ, তা হলে এটা পরিষ্কার যে রাজ্য সরকারও চাইছিল যে, ফাঁকতালে দাগিরাও নতুন এসএসসি পরীক্ষায় বসে যাক?
যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চের পক্ষে চিন্ময় মণ্ডল বলেন, ‘‘সোমবার থেকে বিধানসভা অধিবেশন শুরু হচ্ছে। আমরা মুখ্যমন্ত্রী, মুখ্যসচিব, বিরোধী দলনেতাকে চিঠি লিখে বলেছি যাঁরা এসএসসির তালিকায় যোগ্য বলে বিবেচিত, তাঁদের আবার চাকরিতে বহাল করতে সবাই একমত হয়ে কাজ করুন। আমাদের অনুরোধ, এই বিষয়ে তাঁরা যেন সহমত পোষণ করে অর্ডিন্যান্স জারি করে বিলপাশ করেন।’’
চাকরিহারাদের একাংশ আজ, সোমবার বেলা ১২টায় করুণাময়ী থেকে এসএসসি অভিযানের ডাক দিয়েছেন। কিসের ভিত্তিতে তাঁদের দাগি বলা হল জানতে তাঁরা সুপ্রিম কোর্টে এবং হাই কোর্টে মামলা করছেন। বিপ্লব বিবার নামে এক শিক্ষকের নাম দাগিদের তালিকায় উঠেছে। বিপ্লব বলেন, ‘‘বিচারক সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চে পরিষ্কার বলা হয়েছিল মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেলে যাঁরা আছেন, যাঁরা আউট অব প্যানেল এবং যাঁরা সাদা খাতা জমা দিয়েছেন, তাঁরাই টাকা ফেরত দেবেন। তার মানে ওঁরাই হল দাগি। আমরা এই তিনটে দলের কোনওটাতেই পড়ছি না। আমাদের প্রশ্ন, তা হলে আমাদের কীসের ভিত্তিতে দাগি বলা হল?’’ বিপ্লবের দাবি, ‘‘যাঁরা অ্যাডমিট কার্ড পেয়েছেন তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েক জন আছেন যাঁরা মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেলভুক্ত। অথচ তাঁরা পরীক্ষায় বসছেন। ফলে আগামী ৭ এবং ১৪ সেপ্টেম্বর যে এসএসসি হতে চলেছে সেই পরীক্ষাও কলঙ্কমুক্ত হচ্ছে না।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)