Advertisement
০৬ মে ২০২৪
Kalighater Kaku

‘কাকু’র সঙ্গে ফোনে অন্য কেউ ছিলেন, তিনি নন, সিবিআই দফতর থেকে বেরিয়ে জানালেন রাহুল

বৃহস্পতিবার নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরে তাঁকে ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সন্ধ্যায় দফতর থেকে বেরিয়ে রাহুল জানান, কী ভাবে ‘কাকু’র সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল তাঁর।

image of sujay krishna bhadra

সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। — ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২৪ ২০:০২
Share: Save:

সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’র সঙ্গে সেই কথোপকথন তাঁর ছিল না। মোবাইলের ও পারে অন্য কেউ ছিলেন। বৃহস্পতিবার নিজাম প্যালেসের সিবিআই দফতর থেকে বেরিয়ে এমনটাই দাবি করলেন ‘কাকু-ঘনিষ্ঠ’ সিভিক ভলান্টিয়ার রাহুল বেরা। তা হলে কে তাঁর ফোন ব্যবহার করে কথা বলেছিলেন? রাহুল জানিয়েছেন, তিনি জানেন না।

ইডি সূত্রে দাবি করা হয়েছিল, ‘কাকু’র ফোনে আড়ি পেতে তারা জানতে পারে, রাহুলকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে, গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য মুছে ফেলার জন্য। তা নিয়ে এর আগে ইডির জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়েছিলেন রাহুল। বৃহস্পতিবার নিজাম প্যালেসের সিবিআই দফতরে তাঁকে ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সন্ধ্যায় সিবিআই দফতর থেকে বেরিয়ে রাহুল জানান কী ভাবে ‘কাকু’র সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল তাঁর। রাহুলের আইনজীবী দেবাশিস ভট্টাচার্য জানান, সুজয়ের কাছে গাছের চারা নিতে যেতেন রাহুল। এক জনের মাধ্যমে। সেই সূত্রেই পরিচয়।

এর পরেই রাহুলের আইনজীবী জানান, মোবাইলে সুজয় তাঁর মক্কেলকে কোনও তথ্য (ডেটা) ডিলিট করতে বলেননি। ওই আইনজীবী বলেন, ‘‘সিবিআই দফতরে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, মোবাইলে যে কণ্ঠস্বর, তা রাহুলের কি না। তিনি বলেছেন, তাঁর মোবাইল থেকে অন্য কেউ কথা বলেছেন। ওটা তাঁর কণ্ঠস্বর নয়।’’ এর পরেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়ে রাহুল জানান, কে ফোন ব্যবহার করেছেন, তিনি জানেন না। তাঁর আইনজীবী জানান, রাহুল পাড়ায় খেলতে যান। তখন ফোন রাখা থাকে। অনেকে ফোন ব্যবহার করেন। রাহুল যদিও দাবি করেন, ‘‘আমার ফোন কেউ ব্যবহার করেন না।’’ তাঁকে আর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়নি বলেও জানিয়েছেন তিনি।

গত বছরের ৩০ মে ১১ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর সুজয়কে গ্রেফতার করেছিল ইডি। তার পরের দিন তাঁকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করে ইডি জানিয়েছিল, নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সুজয়ের কথায় ফোন থেকে মুছে দিয়েছিলেন রাহুল। এই বিষয়ে সুজয়কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেন। কিন্তু তাদের কাছে এই সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যপ্রমাণ আছে বলে দাবি করেছিল ইডি।

ইডি সিদ্ধান্ত নেয়, ‘কাকু’র কণ্ঠস্বর পরীক্ষা করা হবে। নির্দেশ যিনি দিচ্ছিলেন সেটা যে ‘কাকুর’ই গলা ছিল, তা প্রমাণ করার জন্য এই সিদ্ধান্ত। ‘শারীরিক অসুস্থতার’ জন্য এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় সুজয়কৃষ্ণকে। তাঁর গলার স্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে গিয়ে বার বার ফিরে আসতে হয় তদন্তকারীদের। তার পরেই বিষয়টি আদালতে তোলে ইডি।

দুর্নীতির তদন্তের স্বার্থে ‘কাকু’র কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তা বার বার দাবি করে ইডি। সূত্রের খবর, ‘কাকু’র একাধিক ভয়েস কল রেকর্ডিং মোবাইল থেকে উদ্ধার করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি। নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে ‘কাকু’, দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা পরিষদের প্রাক্তন সদস্য জ্ঞানানন্দ সামন্ত ও সিভিক ভলান্টিয়ার রাহুলের কাছ থেকে পাঁচটি মোবাইল বাজেয়াপ্ত করেছিল ইডি। সেখান থেকে হোয়াট্‌সঅ্যাপ চ্যাট, সাধারণ মেসেজ এবং ভয়েস কল রেকর্ডিং উদ্ধার হয়েছিল। অবশেষে জানুয়ারির শুরুতে ‘কাকু’র কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করে ইডি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kalighater Kaku Sujay Krishna Bhadra CBI ED
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE