রাতভর, জিয়াগঞ্জ স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম জু়ড়ে ভবঘুরেদের তাড়ানোর সময়ে, এক কোণায় বসে থাকা যুবকটির উপরে নজর পড়েছিল রেল পুলিশের। তাঁর কাছে টিকিট চাইতেই পরিষ্কার হয়ে যায়, ওই যুবক বিনা টিকিটের যাত্রী। শুরু হয় মারধর। অভিযোগ, তার জেরেই মারা যান বিশ্বনাথ গুহ (৪১) নামে ওই ব্যক্তি।
মঙ্গলবার রাতে পুলিশের ওই ‘শাস্তি’ দেওয়ার ধরন চোখে পড়তে বাধা দিতে এগিয়ে আসেন আজিমগঞ্জের স্টেশন ম্যানেজার। তিনি বলছেন, ‘‘ওই যুবককে মারধর করছিল রেল পুলিশ। নিষেধ করতে গিয়ে পাল্টা শুনতে হয়েছে—‘আপনি আপনার কাজ করুন। আমরা আমাদের কাজ করছি।’ ও ভাবে মারলে কেউ বাঁচে নাকি!’’
বুধবার সকালে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় প্ল্যাটফর্মে পড়ে থাকতে দেখা যায় রঘুনাথগঞ্জের বাসিন্দা, ওই যুবককে। পরে তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করার কিছুক্ষণ পরেই মারা যান তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই যুবকের কাছে টিকিট না থাকায় পুলিশ টাকা চেয়েছিল। দিতে না পারায় বিশ্বনাথকে বেধড়ক মারধর করা হয়। তারপরেই ওই যুবক সংজ্ঞা হারান। ঘটনার পরে পুলিশকে জানানো হলেও তারা দেরি করে আসে।
আজিমগঞ্জ জংশন জিআরপি থানার ওসি মহাবীর বেরা বলেন, ‘‘ওই ঘটনায় কোনও রেল পুলিশ জড়িত থাকার প্রমাণ মিললে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
গত শনিবার ছ’জন বন্ধু মিলে হুগলির তারকেশ্বরে গিয়েছিলেন পেশায় দুগ্ধ ব্যবসায়ী বিশ্বনাথ। কিন্তু সেখানে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। বন্ধুরা বিশ্বনাথকে বাড়ি ফেরার ট্রেন ধরতে বলেন। কিন্তু বাড়ি না গিয়ে তাঁকে দেখা যায় আজিমগঞ্জ সেটশনে।
স্থানীয় লোকজন জানাচ্ছেন, সোমবার বিকেলে গেরুয়া গেঞ্জি ও হাফ প্যান্ট পরে ঘুরতে দেখা গিয়েছে। প্ল্যাটফর্মের কয়েকজনের সঙ্গে তাঁর বচসাও হয়। তবে প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, ‘‘মঙ্গলবার রাতে রেল পুলিশ কিন্তু ওই যুবককে বেধড়ক মারধর করেছে।’’ জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জের উপ-পুরপ্রধান তৃণমূলের প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘পুলিশ ওই যুবকের কাছে টিকিট দেখতে চেয়েছিল। টিকিট দেখাতে না পারলে তাঁর কাছে টাকা চেয়েছিল পুলিশ। টাকা দিতে রাজি হয়নি বলেই তাঁকে লাঠি দিয়ে এলোপাথাড়ি মারধর করা হয় বলে শুনেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy