Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

২০০ ট্রেন বাতিল, বৃষ্টিতে বন্ধ হল কলকাতা স্টেশন

গত দশ বছরে এমন পরিস্থিতি দেখেননি পূর্ব রেলের কর্তারা! শিয়ালদহ স্টেশনে ছ’টি লাইন জলের তলায়। হাওড়া স্টেশনের কারশেডে প্রায় কোমর সমান জল। কোথাও ওভারহেড লাইনের তার ছিঁড়ে পড়েছে।

ট্রেন নেই। সুভাসগ্রাম স্টেশনে ছাতার মিছিল। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল।

ট্রেন নেই। সুভাসগ্রাম স্টেশনে ছাতার মিছিল। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৫ ০০:০৬
Share: Save:

গত দশ বছরে এমন পরিস্থিতি দেখেননি পূর্ব রেলের কর্তারা!

শিয়ালদহ স্টেশনে ছ’টি লাইন জলের তলায়। হাওড়া স্টেশনের কারশেডে প্রায় কোমর সমান জল। কোথাও ওভারহেড লাইনের তার ছিঁড়ে পড়েছে। কোথাও গাছ পড়ে বন্ধ যাত্রাপথ। যার ফলে শনিবার হাওড়া ও শিয়ালদহ, দু’টি স্টেশনেই ১০০টি করে লোকাল ট্রেন বাতিল করতে হয়েছে বলে জানিয়েছের রেলকর্তারা। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও ট্রেন না পেয়ে বহু অফিসযাত্রীকে বাড়ি ফিরে যেতে হয়েছে। তবে দূরপাল্লার রুটে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়নি বলে দাবি করেছেন রেলকর্তারা।

যদিও অঝোর বৃষ্টিতে লাইনে জল জমে যাওয়ায় এ দিন কলকাতা স্টেশন বন্ধ করে দিতে হয়েছে। ভোরে ওই স্টেশন থেকে হাজারদুয়ারি এক্সপ্রেস ছাড়ার কথা থাকলেও সেটি বাতিল করা হয়। তবে দূরের অন্য ট্রেনগুলি সরিয়ে আনা হয় শিয়ালদহ স্টেশনে। এ দিন বন্ধ করে দিতে হয়েছে চক্ররেল পরিষেবাও।

রেলের মান এ দিন কিছুটা হলেও রেখেছে মেট্রো। যার ফলে যাতায়াতের একটা অবলম্বন পেয়েছেন নিত্যযাত্রীরা। তবে সকালে দমদমমুখী একটি এসি রেক রবীন্দ্র সদন স্টেশনে পৌঁছনোর পর তাতে যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা দেয়। যার ফলে মেট্রো চলাচল কিছু সময়ের জন্য এ দিন ব্যাহত হয়।

পূর্ব রেল সূত্রে খবর, শিয়ালদহ স্টেশনে ১ থেকে ৯ (সি)-এর মধ্যে ছ’টি রেললাইনে হাঁটুজল জমেছিল। ফলে, সমস্ত সিগন্যালিং ব্যবস্থা অকেজো হয়ে পড়ে। বাকি প্ল্যাটফর্ম দিয়ে চালানো হয় লোকাল ও দূরপাল্লার ট্রেনগুলি।


জলের তলায় রেল লাইন। হাওড়ায় দীপঙ্কর মজুমদারের তোলা ছবি।

প্রায় একই চিত্র হাওড়া স্টেশনের। প্ল্যাটফর্ম জল থইথই। কারশেড প্রায় ঝিলের চেহারা নেয়। রেলকর্তারা জানান, তখন কারশেড থেকে খালি

ট্রেন প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসা প্রায় অসম্ভব ছিল। তবে ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস পেয়ে শুক্রবার গভীর রাতে কয়েকটি খালি রেক কারশেড থেকে বের করে প্ল্যাটফর্মগুলিতে রাখা হয়েছিল। রলেকর্তাদের দাবি, বহু লোকাল ট্রেন বাতিল করা হলেও আগের দিন প্ল্যাটফর্মে আনা খালি রেকগুলিকে দিয়ে কোনও মতে হাওড়া মেন এবং কর্ড লাইনে কিছুটা হলেও পরিষেবা দেওয়া গিয়েছে। পাশাপাশি, দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর শাখায় ট্রন চলাচল ব্যাহত হয়েছে। মূলত, সাঁতরাগাছি ও টিকিয়াপাড়া কারশেডে জল দাঁড়িয়ে য়াওয়ায় এই বিপত্তি।

এ দিন শিয়ালদহ স্টেশন এলাকা ও প্ল্যাটফর্মের লাইনে বেশিমাত্রায় জল জমতে দেখে পূর্ব রেলের কর্তারা ভেবেছিলেন, বর্ষা আসার আগে রেলের নিজস্ব নিকাশি ব্যবস্থা সংস্কারের কাজে ত্রুটি থেকে গিয়েছে। পরে অবশ্য বোঝা যায়, ভরা কোটালে গঙ্গার জলের সীমা এতই বেড়ে যায়, সেই জল রেলের নিকাশি নালায় ফিরে এসেছে। দুর্ভোগের খবর পেয়ে পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার রামকুমার গুপ্ত এ দিন শিয়ালদহে যান। ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার জয়া বর্মাকে সঙ্গে নিয়ে স্টেশন চত্বর পরিদর্শন করে চলে যান কন্ট্রোল রুমে।

শনিবারও সারা রাত এত বৃষ্টি হলে রবিবার কি ট্রেন চলবে? পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্রের জবাব, ‘‘সেটা সময়ই বলতে পারবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE