Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

টয় ট্রেনের তাজ রক্ষায় রাজ্যের দ্বারস্থ রেল

নর্দার্ন ফ্রন্টিয়ার রেল সম্প্রতি এই বিষয়ে রাজ্যকে চিঠি দিয়েছে।

টয় ট্রেন।

টয় ট্রেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৯ ০২:৪৪
Share: Save:

শিরোপা জুটেছিল বছর কুড়ি আগে। কিন্তু দার্জিলিঙের টয় ট্রেনের সেই হেরিটেজ-মুকুট থাকবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রশ্নও উঠছে। ইউনেস্কোর সুপারিশ মেনে পদক্ষেপ না-করলে সেই প্রশ্ন, সেই সংশয় আরও জোরালো হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের দ্বারস্থ হয়েছেন রেল-কর্তৃপক্ষ। রেল-রাজ্য সমন্বয়ে ইউনেস্কোর সুপারিশ রূপায়িত হলে টয় ট্রেনের হেরিটেজ তকমা রক্ষা পেলেও পেতে পারে বলে রাজ্য প্রশাসনের কর্তাদের আশা।

নর্দার্ন ফ্রন্টিয়ার রেল সম্প্রতি এই বিষয়ে রাজ্যকে চিঠি দিয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ওই রেল জানিয়েছে, টয় ট্রেনের লাইন রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা দিয়ে গিয়েছে বলেই তার সংস্কারের কাজে রাজ্যের একাধিক দফতরকে অংশীদার হতে হবে। পূর্ত দফতর, গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ), রাজ্য হেরিটেজ কমিটির প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি কমিটি গড়তে চাইছে রেল। সেই কমিটির তত্ত্বাবধানে হেরিটেজ রেলপথের বিধিবদ্ধ সংস্কারের কাজ করা হবে। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে সংস্কারের সবিস্তার তথ্য রিপোর্টের আকারে জমা দিতে হবে ইউনেস্কোয়। টয় ট্রেনের হেরিটেজ তকমা থাকা বা না-থাকা সেই রিপোর্টের উপরেই নির্ভর করবে বলে মনে করছেন রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশ। এক কর্তা বলেন, ‘‘ইউনেস্কো এখনই নিশ্চয়ই হেরিটেজ তকমা প্রত্যাহার করবে না। সংস্কার করলে হেরিটেজই থেকে যাবে

ওই রেলপথ।’’

আন্তর্জাতিক হেরিটেজ কমিটি ১৯৯৯ সালে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়েকে আন্তর্জাতিক ঐতিহ্যের তকমা দেয়। প্রমোদ ও প্রয়োজন—দুইয়ের মিশেলে এই রেলপথ অভিনব পরিবহণের স্বীকৃতি পেয়েছিল। যা সংশ্লিষ্ট মিশ্র সাংস্কৃতিক এলাকায় সামাজিক এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের সহায়ক হয়ে বিশ্বের কাছে নজির তৈরি করেছিল। প্রধানত সেই জন্যই বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় জায়গা পেয়েছিল এই রেলপথ। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই রেলপথের রক্ষণাবেক্ষণে খামতি এবং নানান সমস্যা দেখা দিয়েছে।

প্রশাসনের অন্দরের ব্যাখ্যা, রেলপথের পূর্ণাঙ্গ সংস্কার প্রয়োজন। এই রেলপথের অনেকটা অংশে জবরদখলের সমস্যা রয়েছে। জঞ্জাল ফেলার জায়গায় পরিণত হয়েছে পথের কোনও কোনও অংশ। গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে পাহাড়ে দীর্ঘ আন্দোলনের সময় এই রেলপথের বিভিন্ন স্টেশন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ভাঙচুরের পাশাপাশি আগুনও লাগিয়ে দেওয়া হয় স্টেশনগুলিতে। এই সব সমস্যা হেরিটেজ তকমা থেকে যাওয়ার পক্ষে অনুকূল নয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এ-সবের প্রতিকার চেয়েছে ইউনেস্কো।

আধিকারিকদের একাংশ জানান, পূর্ত এবং জিটিএ-র মতো প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা ছাড়া সংস্কারের কাজ করতে পারবে না রেল। তাই রাজ্যের সহযোগিতা চেয়েছে তারা। জিটিএ এখন রাজ্যের সঙ্গে সুসম্পর্ক ও সমন্বয় রেখে কাজ করছে। এই অবস্থায় সরকারের পক্ষে টয় ট্রেনের রুট সংস্কার কমিটিতে জিটিএ-র প্রতিনিধি রাখার প্রস্তাব দেওয়া অনেক সহজ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Toy Trains Darjeeling UNESCO
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE