Advertisement
০১ মে ২০২৪
মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ

ঝাড়গ্রাম জেলায় জুড়তে চায় বাঁকুড়ার রাইপুর

দিন দুই আগেই মুখ্যমন্ত্রী পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সফরে এসে জানিয়ে গিয়েছেন ঝাড়গ্রাম জেলা হচ্ছেই। যদিও নতুন জেলার মধ্যে শুধুমাত্র ঝাড়গ্রাম মহকুমা নয়, বাঁকুড়া জেলার একাংশ থাকতে পারে। এ বিষয়ে লিখিত ভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকেও।

কিংশুক গুপ্ত
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৬ ০৭:২৬
Share: Save:

দিন দুই আগেই মুখ্যমন্ত্রী পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সফরে এসে জানিয়ে গিয়েছেন ঝাড়গ্রাম জেলা হচ্ছেই। যদিও নতুন জেলার মধ্যে শুধুমাত্র ঝাড়গ্রাম মহকুমা নয়, বাঁকুড়া জেলার একাংশ থাকতে পারে। এ বিষয়ে লিখিত ভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকেও।

জানা গিয়েছে, নতুন ঝাড়গ্রাম জেলায় বাঁকুড়ার রাইপুর ব্লককে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ ব্যাপারে রাইপুর ব্লকের বাসিন্দারা ও স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ একযোগে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে লিখিতভাবে অনুরোধ জানিয়েছেন। গত ১৪ জুন ঝাড়গ্রামে প্রশাসনিক বৈঠকের দিনে অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ মন্ত্রী চূড়ামণি মাহাতোর মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীকে এই আবেদন জানানো হয়। চূড়ামণিবাবু বলেন, “ঝাড়গ্রাম জেলা গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। বাঁকুড়া জেলার রাইপুর ব্লকটি নতুন ঝাড়গ্রাম জেলায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সেখানকার বাসিন্দারা অনুরোধ করেছেন। বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী বিবেচনা করে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।”

রাইপুরকে ঝাড়গ্রামে অন্তর্ভুক্ত করার কারণ কী? রাইপুরের বাসিন্দাদের বক্তব্য, ভৌগোলিক দিক থেকে রাইপুর থেকে ঝাড়গ্রামের দূরত্ব অনেকটাই কম। রাইপুর ব্লক এলাকা থেকে বাঁকুড়ার গড় দূরত্ব ৮০ কিলোমিটার। অন্য দিকে রাইপুর ব্লকের মেলেড়া থেকে শিলদা হয়ে ঝাড়গ্রামের দূরত্ব ৩৮ কিলোমিটার। বকসি ও বিনপুর হয়ে ঝাড়গ্রামের দূরত্ব আরও তিন কিলোমিটার কম।

শুধু কম দূরত্বই নয়, রাইপুর ব্লকের সিংহভাগ বাসিন্দার ঝাড়গ্রাম জেলার সঙ্গে থাকতে চাওয়ার অন্য কারণও রয়েছে। রাইপুর ব্লকের মোট গ্রাম পঞ্চায়েতের সংখ্যা দশটি। ব্লকের জনসংখ্যা ১ লক্ষ ৭২ হাজার। দূরত্ব কম হওয়ার কারণে রাইপুরের অধিকাংশ বাসিন্দা চিকিৎসার জন্য ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল। রাইপুরের বহু ছাত্রছাত্রী ঝাড়গ্রামের স্কুল-কলেজে পড়াশুনা করে।

রাইপুর ব্লকের মেলেড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রাজকুমার সিংহ বলেন, “বড় দোকান বাজার, পড়াশোনা, উন্নত চিকিৎসা-পরিষেবার জন্য আমরা ঝাড়গ্রামের উপর নির্ভরশীল। যে কোনও প্রয়োজনে ঝাড়গ্রামই আমাদের কাছে নাগালের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। সেই কারণেই বেশির ভাগ বাসিন্দা নতুন ঝাড়গ্রাম জেলার সঙ্গে থাকার পক্ষপাতী।”

রাইপুর ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি অনিল মাহাতো বলেন, “বাসিন্দাদের স্বার্থে বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য সার্বিকভাবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করা হয়েছে।” প্রশাসনের একাংশের বক্তব্য, রাইপুর ব্লকটি সরকারি ভাবে ‘এলডব্লুই ব্লক’ (মাওবাদী প্রভাবিত)। এই ব্লকে আদিবাসী-মূলবাসী মানুষের সংখ্যা বেশি। রাইপুর বিধানসভা এলাকাটিও আদিবাসী সংরক্ষিত। অন্য দিকে, নতুন ঝাড়গ্রাম জেলার সব ক’টি ব্লক সরকারি ভাবে ‘এলডব্লুই ব্লক’। তাই সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে রাইপুরকে ঝাড়গ্রাম জেলায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য এলাকায় জনমত তৈরি হয়েছে। গত এক বছর ধরে এই দাবি জানিয়ে আসছেন বাসিন্দারা। রাইপুরের বিধায়ক বীরেন্দ্রনাথ টুডু বলেন, “আমার বিধানসভা এলাকাটি ঝাড়গ্রামের অন্তর্ভুক্ত হলে বাসিন্দাদের সুবিধা হবে। কিছু অসুবিধাও রয়েছে। যেমন, ঝাড়গ্রাম জেলায় এখনও মেডিক্যাল কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হয়নি। এগুলি হয়ে গেলে তখন আর সমস্যা থাকবে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

jhargram Raipur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE