লোকসভা ভোটের আগে, উত্তরবঙ্গের রাজনৈতিক এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির খোঁজখবর নিয়ে নজরদারি বাড়াতে নির্দেশ দিলেন রাজ্য পুলিশের ভারপ্রাপ্ত ডিজি রাজীব কুমার। সীমান্ত এবং আন্তঃরাজ্য সীমানাতে বিশেষ নজর রাখতে বলেছেন তিনি, এমনই দাবি পুলিশ সূত্রের। শুক্রবার উত্তরবঙ্গের আট জেলার ও পুলিশ-জেলার সুপার, রাজ্য পুলিশের কর্তা এবং শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের পদস্থ কর্তাদের নিয়ে শিলিগুড়িতে দু’টি বৈঠক করেন তিনি।
পুলিশ সূত্রের খবর, দুই দফার বৈঠকে তিনি কোচবিহার থেকে দার্জিলিং—কোন জেলায় কী পরিস্থিতি রয়েছে তা জেলা পুলিশ সুপার, ডিআইজিদের থেকে শুনেছেন। বাংলাদেশ, নেপাল এবং ভুটান সীমান্তে বাড়তি নজরদারির জন্য আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন। বাড়তি নজরে রাখতে বলা হয়েছে বিহার বা সিকিমের সঙ্গে আন্তঃরাজ্য সীমানাগুলিকে। প্রয়োজনে, ভোটের আগে আবার উত্তরবঙ্গে আসতে পারেন বলে আধিকারিকদের একাংশকে জানিয়েছেন রাজীব। তবে তিনি মন্তব্য করেননি। পুলিশের দুটি বৈঠক ছাড়া, আর একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। সেখানেও সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেননি।
রাজ্য পুলিশের উত্তরবঙ্গের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘রাজীব কুমার ডিজি হিসাবে দায়িত্ব নিয়েই জেলাগুলির পরিস্থিতি নিয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন।’’ তিনি জানান, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর, মালদহ, দার্জিলিং নিয়ে আলাদা করে খোঁজ নিয়েছেন সদ্য দায়িত্ব নেওয়া ডিজি।
উত্তরবঙ্গের আট জেলার আটটি লোকসভা আসনের মধ্যে ২০১৯ সালে সাতটি আসনেই বিজেপি জিতেছিল। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে অবশ্য তৃণমূল তুলনায় ভাল ফল করে। এ বার লোকসভায় কী হবে তা নিয়ে পুলিশ-প্রশাসন মহলে মাসখানেক ধরে নানা পর্যালোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে এ মাসেই ইনস্পেক্টর এবং সাব-ইনস্পেক্টর স্তরের বদলির নির্দেশ জেলায় জেলায় জারি হওয়ার কথা। তাতে বহু থানার ইনস্পেক্টর ইনচার্জ (আইসি) এবং অফিসার ইনচার্জেরা (ওসি) পাল্টে যাবেন। তার আগে, রাজনৈতিক ভাবে শাসক দল এবং বিরোধী শিবির কোথায়, কী অবস্থায় রয়েছে তা এ দিনের বৈঠকে প্রাথমিক ভাবে আলোচনা হয়েছে। পুলিশ সূত্রের দাবি, জেলার ব্লক এবং মহকুমাভিত্তিক পরিস্থিতি কী ডিজি তা জানার পরে, কলকাতায় প্রশাসনের শীর্ষ স্তরে আলোচনা হতে পারে। আগামী সপ্তাহ থেকে বদলির নির্দেশগুলি জারি হওয়ার কথা।
সকালের বিমানে রাজীব কুমার কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি আসেন। প্রধাননগরে ‘টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি’র (ট্রাই) একটি সেমিনারে যোগ দেন। পরে, ভক্তিনগরে এডিজি-র (উত্তরবঙ্গ) দফতরে জেলার পুলিশ সুপার, ডিআইজি-দের নিয়ে তিনি বৈঠক করেন। শেষে, শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটে এসিপি থেকে ডিসি, পুলিশ কমিশনারদের নিয়ে আলাদা বৈঠক করেন। বিকেলের পরে বিমানে কলকাতায় ফেরেন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)